skip to content
Sunday, January 19, 2025
HomeScrollFourth Pillar | বিজেপির আইটি সেল নেমেছে বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যে প্রচারে
Fourth Pillar

Fourth Pillar | বিজেপির আইটি সেল নেমেছে বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যে প্রচারে

আমাদের তো গাইতে ইচ্ছেই করে, আমরা তো গাই, আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি

Follow Us :

আলোচনা শুরুর আগেই বলে রাখি দুটো কথা। ১) সারা পৃথিবীতে বিভিন্নভাবে সংখ্যালঘুদের উপরে অত্যাচার হয়। অমন যে আমেরিকা মানবাধিকারের কথা চিল চিৎকার করে বলে সেখানে এখনও কালোদের লড়াই করে বাঁচতে হয়। ২) সেই সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার ভারতবর্ষেও হয়, বাংলাদেশেও হয়। সংখ্যাগুরুদের একটা হক জন্মে যায় সংখ্যালঘুদের চাপে রাখার, তাদেরকে বিরক্ত উত্যক্ত করার। সেটা হয়, তা থামানো সম্প্রদায়ে বিভক্ত সমাজে অসম্ভব। তলায় আগুন রাখবেন, উপরে পাত্রে জল আর সেই জল ফুটবে না, তা হয় না, একটা সময়ের পর জল ফুটবেই, ঠিক তেমন সম্প্রদায়ে বিভক্ত সমাজে সংখ্যাগরিষ্ঠদের অত্যাচার আর সংখ্যালঘুদের আশঙ্কা দূর করাটা অসম্ভব। এটা বলার পরেই এক বিরাট লিস্ট দিয়ে এই দু’ দেশে, মানে বাংলাদেশ আর ভারতে কবে কবে কোথায় কীভাবে সংখ্যালঘুরা অত্যাচারিত হয়েছিল, তা বলাই যায়। সব্বাই জানেন খামোখা সময় নষ্ট করব কেন? যদি চাপ না থাকত, আশঙ্কা নাই থাকত তাহলে ২০ শতাংশ হিন্দু মানুষের বিরাট অংশ সে দেশ ছেড়ে ভারতে এসেছেন কেন? সব্বাই তো এখানে বিরাট ব্যবসা বাণিজ্য ফেঁদে বসেননি, বা সব্বার এদেশে বিরাট জমিজিরেত সম্পত্তি ছিল এমনও নয়। একটা ছোট্ট হুমকির পরেই ভয় পেয়ে বাসাবাড়িতে এসে ঠাঁই নিয়েছেন বহু মানুষের কথা আমি জানি। আবার উল্টোদিকে ভারতবর্ষের মুসলমানদের সেই সুযোগও নেই, ভারতের অত্যাচারিত সংখ্যালঘুদের বেশিরভাগই হিন্দিভাষী, তাঁরা যে ঝুপ করে পাকিস্তান চলে যাবেন তাও সম্ভব নয়। সে দেশে একটা নির্বাচিত সরকার হতে ২৫ বছর লেগে গেছে তারপরেও সেসব সরকার টেকেনি, রাষ্ট্রপ্রধানদের জেলে পোরাটা পাকিস্তানের রুটিন ব্যাপার। ফাঁসিতেও লটকানো হয়েছে ভুট্টো সাহেবকে, বেনজিরকে খুন করা হয়েছে, ইমরান খান থেকে আসিফ জারদারি থেকে নওয়াজ শরিফ, প্রত্যেকে জেলের ভাত খেয়েছেন বা খাচ্ছেন। কাজেই সে হেন দেশে সাধ করে মরতে যাবেই বা কেন।

কিন্তু ভারতবর্ষের মুসলমানরা ক্রমশ ঘেটোর মধ্যে ঢুকে পড়ছেন, তাঁরা তাঁদের নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে থাকার চেষ্টা করছেন বা কোনও বিষয়ে কোনও কথা না বলেই কেবল পেট চালানোর কাজটি করে যাচ্ছেন, যা এক দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকই করে থাকে। বাংলাদেশে অবস্থাপন্ন হিন্দু সংখ্যালঘুরা ব্যবসা বাণিজ্য, সরকারি চাকরিতে আছে, কিন্তু সেই হিন্দুদের দলিতরা সত্যিই আতঙ্কিত, আশঙ্কায় রাত কাটাচ্ছেন কারণ তাঁরা চান বা না চান তাঁদের গায়ে আওয়ামি লিগের ছাপ পড়েছে আর আওয়ামি লিগ খেদাও হুজুগে মারও খাচ্ছেন। সব মিলিয়ে দু’দেশের সংখ্যালঘু মানুষেরা খুশি নন। আবার একইভাবে দু’দেশের নাগরিক সমাজের এক সুভদ্র অংশ এই হুমকি, অত্যাচারের বিরোধিতা করেন, বারবার করেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান ইউনুস সাহেবের সামনেই তো ফারহাদ মজহার সাফ কথা বলতে তো ছাড়েননি। আবার এদেশে বহু মানুষ আরএসএস-বিজেপির এই ঘৃণ্য সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে জান দিয়ে লড়ছেন। আমাদের রাজ্যের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বেগম মমতা বলে সম্বোধন করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, সে তো এমনি এমনি নয়। আসলে সংখ্যাগুরুর সাম্প্রদায়িকতা সবসময়েই অনেক অনেক বেশি সাংঘাতিক, কারণ তা কোথাও নিশ্চিতভাবেই প্রতিষ্ঠানের সমর্থন পায়, রাষ্ট্রের সমর্থন পায়, সেটা ভয়ঙ্কর। আমাদের দেশে সংখ্যাগুরু হিন্দুদের স্বয়ম্ভু মুখপাত্র আরএসএস, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বজরং দল বা বিজেপি সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে কাজে লাগিয়েই এদেশের সংখ্যালঘুদের উপরে অত্যাচার করছেন, নিপীড়ন চালাচ্ছেন, আর আজ তো তাঁরাই সরকারে, তাঁদের লক্ষ্য এক হিন্দুরাষ্ট্র, যেখানে সংখ্যালঘুরা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়ে থাকবে। তার চেষ্টা তাঁরা চালিয়েই যাচ্ছেন।

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | বাবরি মসজিদ ভাঙা দল বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের জন্য কাঁদছে

আর তার মধ্যেই এসে গেছে বাংলাদেশ এপিসোড। আপনি যা পারেন করুন, কেবল গুজরাতি ব্যবসায়ী আর আদানিকে ব্যবসাটা চালিয়ে যেতে দিন, সম্ভবত এই কড়ারে মোদি সরকার এক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখেছিল হাসিনা সরকারের সঙ্গে, কিন্তু ওদিকে শেখ হাসিনা আরও বেড়ে খেলেছেন, তিনি চীনের সঙ্গেও এক সমান্তরাল সম্পর্ক রাখার চেষ্টা চালিয়েছেন, মার্কিনিদের খানিক চটিয়েছেন, এধারে ধান্দাবাজদের ভেতরেও ধান্দা নিয়ে কাজিয়া তো লাগেই। ব্রিক্স-এর অগ্রগতি মার্কিনিদের না-পসন্দ, তারা এখানে ভারতকে খানিক শিক্ষা দিতে চায়, বাংলাদেশের ভূ-ভাগে তেমন ডোমিনেট করা যাচ্ছে না, করতে পারলে বঙ্গোপসাগরে মার্কিনি দখলদারি বাড়ে। কাজেই একধারে বাংলাদেশের ক’টা দ্বীপের দখলদারি আর ভারতের ব্রিক্স নিয়ে বাড়াবাড়িকে সামলাতে আমেরিকা সক্রিয় হল। ছাত্র আন্দোলন কোটার আন্দোলন হয়ে উঠল গদি উল্টানোর আন্দোলন, বিরাট ঘনশ্যাম আর এ ডাবলিউ, র বা ভারতের আরও কিছু সংস্থা ভাবতেই পারেনি যে এভাবে ঘটি উল্টোতে পারে, কিন্তু বন্ধুদের সম্পদ বাঁচাতে তড়িঘড়ি করে সম্পদের পাহারাদারকে ভারতেই নিয়ে আসা হল। তাতেও খুব কিছু হওয়ার নয়, কারণ বাইডেন সরকারের পুরনো পছন্দ ইউনুস সাহেবকে গদিতে বসানো হয়েছে। ৮৪ বছরের ইউনুস সাহেব বুঝতেই পারছেন যে সরকার চালানোর জন্য যা যা করতে হয় তার একশো ভাগের এক ভাগ দিয়েই গ্রামীণ ব্যাঙ্ক চালানো যায়। উপদেষ্টা মণ্ডলীতে নতুন নতুন মুখ আসা থেকে শুরু করে সরকারের দোদ্যুল্যমানতা থেকে শুরু করে দেশের মধ্যে মূল্যবৃদ্ধি বা বেকারত্বের সমস্যার সমাধান না করতে পারলে যে ওই জনতাই রাস্তায় আবার নামবে, ওই ছাত্ররাই আবার নামবেন সেটাও ইউনুস সাহেব বিলক্ষণ জানেন। তো তিনি কী করে সামলাবেন তা তো বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার, বাইরে থেকে আমরাই বা বলার কে? কিন্তু এই সুযোগে আরএসএস বিজেপির চোখ চকচক করে উঠেছে, আজ না কাল ওই ট্রাম্প সাহেবকে ধরে ভাই দাদাদের গচ্ছিত টাকা উদ্ধার করা যাবে, তারপর ছিবড়ের মতো ফেলেও দেওয়া যাবে শেখ হাসিনাকে। বলা হতেই পারে ভারতবর্ষ অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবে না ইত্যাদির মতো ফালতু কথা, কে না জানে মোদিজি ১৮০ ডিগ্রি ঘুরতে ১৮০ সেকেন্ডও নেন না।

কিন্তু এবারে অন্য আর এক সুযোগ এসে গেছে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের জন্য কান্নাকাটি করে পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুভোটের আরও কিছু বেশি দখল করা যায় কি? বা ধরুন বাংলাদেশে মুসলমানরা হিন্দুদের ওপরে ভয়ঙ্কর অত্যাচার করছে, এটা যত বেশি করে বলা যাবে, তত হিন্দু-মুসলমান ভোটের মেরুকরণ হবে আর বিজেপির সুবিধে হতে পারে, এটা বুঝেই তাদের জিভ লকলক করে, চোখ চকচক করে। আর বিজেপি সেই প্রচারটা চালাবে কী করে? যেমন করে তারা চালায়, নামিয়ে দিয়েছে আইটি সেলকে। হু হু করে সুনামির মতো বয়ে আসছে মিথ্যে প্রচার, আর স্বাভাবিকভাবেই সেসব নিয়ে অধিকারী অ্যান্ড কোম্পানি মাঠে নেমে পড়েছে, একজন নামে সাংবাদিক আসলে বিজেপির পে-রোলেই আছেন, তিনি তো হুঙ্কার দিচ্ছেন, ঢাকা দখল করার, দলের মুখপাত্র অবশ্য বলেছেন অতটা নয়, আপাতত খানিকটা দখল করব। এসব শুনে বাংলাদেশেও তো আমোদগেঁড়ে খ্যাপার কমতি নেই, সে হুঙ্কার দিয়েছে চারদিনের মধ্যেই কলকাতা দখল করব। কিন্তু এনারা প্রত্যেকেই জানেন যে সেসব হবে না, কিন্তু তাঁদের এই কথা নিয়ে সমাজমাধ্যমে আরও শত মানুষের আলোচনা, এক যুদ্ধ যুদ্ধ আবহ রচনা হচ্ছে, সেই বাংলায় যেখানে কবেই গান গেয়েছিল মানুষ, তোরা যুদ্ধ করে করবি কী তা বল, কিন্তু কার কথা শোনে কে? হাল্লা এবং শুন্ডির এই কোয়ার্টার বুদ্ধির মানুষজন দুজনে দুজনার পিন্ডি চটকানোর জন্য হাঁক দিচ্ছেন। এতে বাংলাদেশের ইউনুস সরকারের খুব একটা কিছু যাবে আসবে না, কিন্তু এই দেশে বিজেপির ভারি আনন্দ, আরও কিছু হিন্দু ভোট যদি তাদের ঝোলায় যায় তাহলে বাংলার এই দুর্গের পাকাপাকি দখল তারা নিতে পারে, সেটাই উদ্দেশ্য। গত কিছু নির্বাচন সাফ বলছে যে হিন্দু ভোটারদের আর কিছু বেশি, ৩-৪ শতাংশ যদি বিজেপির ধারে যায়, তাহলে মমতা সরকারের বিপদ অনিবার্য। মানে উত্তর-পূর্বের সেভেন সিস্টারের দখল প্রায় নেওয়াই আছে, বিহারেও তো নীতীশের বকলমে বিজেপিই রাজ্যপাট চালাচ্ছে, ওড়িশাও এসে গেছে কব্জায়, কেবল বাংলাটা এলেই দৈর্ঘ্য প্রস্থে সমান হয়, এটাই উদ্দেশ্য।

ঝুড়ি ঝুড়ি মিথ্যে প্রচার হচ্ছে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু মানুষজনের উপর অত্যাচার নিয়ে, পুরনো ছবি এনে হাজির করা হচ্ছে এখনকার বলে। চিন্ময় কৃষ্ণদাসের আইনজীবীকে নিয়ে মিথ্যে বলা হচ্ছে, পুরনো মন্দির ভাঙার ছবি, বাংলাদেশের নয় এমন ছবিও হাজির করা হচ্ছে, আর করছে কিন্তু বিজেপির আইটি সেল। এমনকী ট্রাম্প আসার পরেই ইউনুস সাহেব নাকি হাসপাতালে বলার পরেও খেলা জমছে না দেখে তাঁকে পলাতক ঘোষণাও করা হল, সব মিলিয়ে পড়শি দেশের সঙ্গে সম্পর্ক তো চুলোর দোরে গেছে, এবারে সত্যি করেই এর চাপ গিয়ে পড়বে সেখানকার সংখ্যালঘুদের উপরে, আবার সেসব ঘটনায় রং চড়িয়ে মাঠে নামবে শুভেন্দু অ্যান্ড কোম্পানি, বিজেপির আইটি সেল। তাহলে কী করা? আবার বলি দু’দেশের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের এই প্রচারের বিরুদ্ধে সম্প্রীতির কথা বলা, দু’দেশের বন্ধুত্বের ইতিহাসকে চর্চায় আনা। না, ভারতবর্ষ বাংলাদেশকে স্বাধীন করেনি, বাংলাদেশের ৩০ লক্ষ মানুষের প্রাণের বিনিময়ে সে দেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে, সে দেশের ৩ লক্ষ ধর্ষিতা নারীর সম্ভ্রমের বিনিময়ে স্বাধীনতা এসেছে, কিন্তু সেদিনের সেই লড়াইয়ের সময়ে ভারত সঙ্গে ছিল। পাশে ছিল, এই ইতিহাস তো অস্বীকার করার নয়, আসুন না দু’ দেশের খাবার নিয়ে বসি, দু’ দেশের সিনেমা নিয়ে বসি, দু’ দেশের সাহিত্য নিয়ে বসি। মমতা কলকাতা থেকে এক লরি রসগোল্লা আর জলভরা সন্দেশ পাঠান, ইউনুস সাহেব পাঠান এক লরি কাচ্চি বিরিয়ানি। কে না জানে পেটের সম্পর্ক ভারি মধুর, আমাদের তো গাইতে ইচ্ছেই করে, আমরা তো গাই, আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
RG Kar | বিচারককে কি বললেন সঞ্জয় রায়?
00:00
Video thumbnail
Shakib Al Hasan | গ্রেফতারির মুখে সাকিব আল হাসান, জারি গ্রেফতারি পরোয়ানা
00:00
Video thumbnail
RG Kar | কোন পথে নির্যা*তিতার বিচার, দেখে নিন বিশেষ প্রতিবেদন
00:00
Video thumbnail
RG Kar | কাল সর্বোচ্চ সাজা হতে পারে সঞ্জয়ের, তার মানসিক অবস্থা কীরকম? জেনে নিন বিশেষ প্রতিবেদনে
00:00
Video thumbnail
RG Kar | কাল সাজা ঘোষণা, সারাদিন প্রেসিডেন্সির ৬ নম্বর সেলে কী করে কাটালেন সঞ্জয়? দেখে নিন প্রতিবেদন
00:00
Video thumbnail
Mahakumbh 2025 | কী কারণে মহাকুম্ভে অ*গ্নিকাণ্ড? ঘটনাস্থলে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ
00:00
Video thumbnail
RG Kar | বিচারককে কি বললেন সঞ্জয় রায়?
11:46:50
Video thumbnail
Shakib Al Hasan | গ্রেফতারির মুখে সাকিব আল হাসান, জারি গ্রেফতারি পরোয়ানা
02:30
Video thumbnail
RG Kar | কোন পথে নির্যা*তিতার বিচার, দেখে নিন বিশেষ প্রতিবেদন
03:14
Video thumbnail
RG Kar | কাল সর্বোচ্চ সাজা হতে পারে সঞ্জয়ের, তার মানসিক অবস্থা কীরকম? জেনে নিন বিশেষ প্রতিবেদনে
11:38