skip to content
Wednesday, October 9, 2024
Homeচতুর্থ স্তম্ভFourth Pillar | ৪ দিন বনাম ৪০ দিন, কলকাতা পুলিশ বনাম সিবিআই
Fourth Pillar

Fourth Pillar | ৪ দিন বনাম ৪০ দিন, কলকাতা পুলিশ বনাম সিবিআই

সিবিআই বেশিরভাগ মামলাতেই কোনও সমাধান বের করতে পারেনি

Follow Us :

কলকাতা পুলিশের চার দিন বনাম সিবিআই-এর ৩৬ দিন। আমরা কী পেলাম? আমরা কী আশা করতে পারি? তার আগে খুব বেশি পুরনো নয়, মাত্র বছর দুই হল একটা ভয়ঙ্কর দুর্নীতির মামলা, হ্যাঁ এরকমটা আমি বলছি না, বলছেন সিবিআই কর্তারা। মানুষের চোখের আড়ালে হাজার হাজার কোটি টাকা চুরি হয়েছে কেবল নয় তা এক বিশেষ দলের জন্যই খরচ হয়েছে, ইন ফ্যাক্ট সিবিআই একসময়ে তো গোটা আম আদমি পার্টিকেই এই মামলাতে শামিল করার কথা ভাবছিল। হ্যাঁ, আমি দিল্লি এক্সাইজ মামলার কথা বলছি। সেই মামলাতে কারা কারা ধরা পড়েছিল? মানে ওই সিবিআই এবং ইডি কাদের কাদের দোষী হিসেবে চিহ্নিত করে জেলে পুরেছিল? কবে হয়েছিল? ২০২১-২২-এ দিল্লি সরকার তাদের আবগারি নিয়মে বদল আনে, ইউনিয়ন গভর্নমেন্ট, মানে মোদি-শাহ সরকার টাকা দিচ্ছে না, এদিকে রাজ্যের মানুষের কাজের জন্য শিক্ষা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য টাকা চাই। মূলত সেই কারণেই এই এক্সাইজ পলিসি আনা হয়েছিল। ৯৫০০ কোটি টাকার অতিরিক্ত আমদানি হবে। বিজেপি বুঝেছিল টাকার পাইপলাইন না কাটলে কেজরিওয়াল বা আপকে হারানো মুশকিল, কাজেই শুরু হল মামলা, ইডি সিবিআই সব্বাই মাঠে। জুলাই ২০২২, দিল্লির মুখ্যসচিব এই কাজের মধ্যে বিভিন্ন পদ্ধতিগত ত্রুটির কথা বললেন, কিকব্যাক বা কাটমনির কথা উঠল। দক্ষিণের আবগারি ব্যবসায়ীদের নাম এল। তখনকার তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখরের নাম এল, তাঁর মেয়ে কে কবিতাকে সরাসরি জড়ানো হল। ২২ জুলাই সিবিআই মামলা শুরু করার নির্দেশ দিলেন দিল্লির লেফট্যানান্ট গভর্নর। তল্লাশি শুরু হল মন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া সমেত বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের ঘরে।

সিসোদিয়ার ঘরে একটা টাকার সিজারও দেখাতে পারেনি সিবিআই, ব্যাঙ্কের খাতাতেও কোনও ঘাপলা দেখাতে পারেনি। ইতিমধ্যেই জনাসাতেক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করল সিবিআই, আর মজার কথা হল তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার শুরু হল। ২৬ ফেব্রুয়ারি মণীশ সিসোদিয়াকে গ্রেফতার করা হল। ওদিকে যে শিল্পপতিদের গ্রেফতার করা হয়েছিল, তাঁদের অনেকেই বিজেপির ইলেকশন ফান্ডে কোটি কোটি টাকা ঢালতে শুরু করলেন, হাতেনাতে ফলও পেলেন, তাঁদের প্রায় সবার জামিন হল। ৩০ মে আর এক আপ নেতা মন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ৪ অক্টোবর ২০২৩ এ সঞ্জয় সিংকে গ্রেফতার করা হল। ১৫ মার্চ ২০২৪, কে কবিতাকে গ্রেফতার করা হল, ২১ মার্চ গ্রেফতার করা হল অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে। এদের মধ্যে মাত্র ওই সত্যেন্দ্র জৈন ছাড়া প্রত্যেকে জামিন পেয়েছে, ২০২২ সালের মামলার এখনও পর্যন্ত কোনও কিনারা হয়নি। রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনা ছড়ানোর জন্যই যেভাবে অরবিন্দ কেজরিওয়াল বা মণীশ সিসোদিয়া বা সঞ্জয় সিংকে গ্রেফতার করা হয়েছিল তা যে এক রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ছিল তার কথা এখন মানুষ বুঝতে পারছে। এতগুলো জামিনের পরে শোনা যাচ্ছে খুব তাড়াতাড়ি সত্যেন্দ্র জৈনও জামিন পাবেন, সিবিআই দু’বছর ধরে এঁদের শাস্তি দেওয়া তো দূরস্থান, জেলেও পুরে রাখতে পারল না। হ্যাঁ এটাই সিবিআই-এর ট্র্যাক রেকর্ড। আমি কিন্তু একবারও এটা বলার চেষ্টাই করছি না যে ওই আবগারি মামলাতে সিবিআই ডাঁহা ফেল করেছে তাই তাদের তদন্ত বিশ্বাসযোগ্য নয়। আমি বলতে চাইছি যে সিবিআই বেশিরভাগ মামলাতেই এই একই রকমভাবে কোনও সমাধান বের করতে পারেনি, সে নারদা হোক বা সারদা, চিট ফান্ড হোক বা রবি ঠাকুরের নোবেল, প্রত্যেক, প্রত্যেক ক্ষেত্রে তারা ফেল করেছে। যে মামলাগুলো নিয়ে মানুষের মধ্যে আলোড়ন হয়, তার একটা মামলাও সিবিআই সলভ করতে পারেনি। ধর্ষণের মামলার মধ্যে আয়ুষী হত্যা মামলা বা নিঠারি হত্যা মামলা বা জেসিকা হত্যা মামলার দিকে তাকান। প্রধান অভিযুক্তরা সব্বাই জেলের বাইরে।

আরও পড়ুন: 

এবার এই অসাধারণ ফেল্টুসবাবুদের ট্র্যাক রেকর্ডকে মাথায় রেখেই আসুন কলকাতা পুলিশের ৪ দিন আর সিবিআই-এর ৩৬ দিনের হিসেব নিকেশটা করা যাক। ঘটনা ঘটেছিল ৯ তারিখ ভোরে। ১০ তারিখে এই ঘটনার মূল অপরাধী হিসেবে সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ, তারা গ্রেফতার করার পরেই সেই অভিযুক্ত বলেছিল আমাকে ফাঁসি দিন। মানে সে মনে করছিল এই অপরাধ এড়িয়ে বাঁচা যাবে না। প্রমাণ হিসেবে তার আসা যাওয়ার স্পষ্ট ছবি, সিসিটিভির ফুটেজ, ঘটনাস্থলেই তার ফেলে আসা হেডফোন ইত্যাদি ছিল। পরে যাবতীয় ফরেনসিক টেস্ট আর ডিএনএ টেস্ট ইত্যাদি দিয়ে বোঝা গেছে যে এই সঞ্জয়ই প্রধান কেবল নয়, এই ধর্ষণ আর খুনের একমাত্র প্রত্যক্ষ অভিযুক্ত। কিন্তু সেটা প্রমাণ করে তাকে শাস্তি দিলে তো সিবিআই-এর কাজ শেষ হবে না বরং মানুষ বলবে যে তাহলে কলকাতা পুলিশ কী দোষ করেছিল, সেই কারণেই আপাতত এই সরকারের তোতাপাখি সিবিআই-এর এক এবং একমাত্র কাজ হল এটা প্রমাণ করা যে কলকাতা পুলিশ অপদার্থ, তারা এই চক্রান্তের অংশ, তারা এই ধর্ষণ খুনের প্রমাণ লোপাট করেছে ইত্যাদি ইত্যাদি। যদি প্রশ্ন করেন কেন? তাহলে উত্তর হল তাঁরা নির্দেশ মেনেই কাজ করছেন। তো সেই কাজে তাঁরা কতটা এগোলেন? এইখানে এসে বলে রাখি তাঁরা কিন্তু একা নন। সঙ্গে আছে মাসোহারা পাওয়া এক বিরাট বাহিনী, যারা তাঁদের এই তদন্তের নামে সার্কাসটাকে রোজ আরও বর্ণাঢ্য, আরও উত্তেজনা মাখিয়ে এক আকর্ষণীয় ফাস্ট ফুডের মতো মানুষের সামনে রাখবে। সম্ভবত এই কাজ করার জন্য সিবিআই-এর একটা আলাদা টিমও আছে। তাঁরা অদ্ভুত সব তথ্য সাপ্লাই করবেন ওই উপযুক্ত প্রণামী পাওয়া সংবাদমাধ্যমের কাছে।

ধরুন দিল্লির এক্সাইজ মামলা, মণীশ সিসোদিয়ার টাকা চলে গেছে সুইস আক্যাউন্টে, তার খোঁজ চালাচ্ছে সিবিআই। একে বলে চটপটা খবর। আমাদের এখানেও শুরু থেকেই সেই একইভাবে কাজ চলছে। আমার সূত্র বলছে যে ওই তেনাদের মাথা থেকেই এই শবদেহ বিক্রি আর মর্গে পর্ন তৈরির গল্পগুলো ছাড়া হয়েছে। এমনিতে বহুকাল যাবত প্রথমে বটতলা, তারপর চটিবই, তারপর পর্ন ভিডিও ভিএইচএসএ, তারপর সিডিতে এবং আপাতত ইন্টারনেটে অ্যাভেলেবল। এবং আমার ধারণা কমবেশি প্রত্যেকেই এমন নীল ছবি দেখেছেন, কেউ কেউ আসক্ত, কেউ কেউ উৎসাহ জেগেছে তাই দেখেছেন, কেউ কেউ মা বাবা নেই ফাঁকা ফ্ল্যাটে বন্ধুদের নিয়ে এক নতুন রোমাঞ্চের খোঁজে দেখেছেন। হ্যাঁ প্রতিবাদী, অপ্রতিবাদী, তিনু ভানু মাকু চাড্ডি, চটিচাটা, জুতোচাটা, ধুতিচাটা থেকে মাওয়িস্ট প্রায় সব্বাই। আচ্ছা বুকে হাত দিয়ে বলুন তো কোনওদিন শবদেহ নিয়ে পর্ন দেখেছেন, দেখার ইচ্ছে হবে? আপনার আশেপাশে একজনও দেখেছে? একটু চুপিচুপিই এই গোপন কথাটা জিজ্ঞেস করুন না। ১০ লক্ষে একজন দেখে থাকতে পারেন, হ্যাঁ নেক্রোফেলিয়া এক রোগ, এমন উৎসাহ সেই রোগীদের মধ্যে থাকে, কিন্তু তা এতটাই বিরল, রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েটে নেক্রোফেলিয়ার কথা আছে বলেই তা এক খুব সাধারণ অসুখ এমন ভাবার কোনও কারণ নেই। আবার এই নেক্রোফ্যালিকদের মধ্যে ৫০ শতাংশই ফ্যান্টাসিতে ভোগেন, তারা প্রকৃত শবদেহের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক ইত্যাদি করেন না, তারা সেটা কল্পনাতেই রাখেন।

সব মিলিয়ে এই নেক্রোফ্যালিকদের জন্য কেউ মর্গ খুলে বসে থাকবে এটা সিবিআই এবং চূড়ান্ত অশিক্ষিত সংবাদকর্মী ছাড়া কারও মাথাতেই আসবে না। কিন্তু তা ছড়ানো হল, এবং আমোদগেঁড়ে প্রচুর আছেন, জীবনে কাজ নেই, লক্ষ্য নেই, বৈচিত্র্য নেই, পড়াশুনো নেই, মেতে উঠলেন দেখেছ, দেখেছো সন্দীপ ঘোষ মর্গের শবদেহ নিয়ে পর্ন তৈরি করে বাজারে বেচত। কেবল এটাই নয়, এরকম হাজারো গল্প তৈরি হচ্ছে আর তা রোজ বাজারে ছাড়া হচ্ছে, আমার সূত্র বলছে এর সিংহভাগ আসছে ওই গোয়েন্দারের উর্বর মাথা থেকে। এবং শেষ পর্যন্ত এই ৩৬ দিনে তাঁরা একই মামলাতে সন্দীপ ঘোষ আর টালা থানার ওসিকে গ্রেফতার করেছেন, কোনও নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে নয়, এই প্রমাণ লোপাট করেছেন, ওটা লোপাট করেছেন। প্রমাণ পরে হবে কিন্তু অন্তত অভিযোগও থাকা উচিত ছিল, না কোনও অভিযোগ নেই, এক পাবলিককে মিথ্যে তথ্য গেলানো হচ্ছে, পাবলিক এঁদের ভিলেন তৈরি করছে এবং গ্রেফতার চাইছে, সিবিআই গ্রেফতার করে ওই মবোক্রেসিকে লেজিটিমেসি দিচ্ছে, তার বেশি কিচ্ছু নয়। সুপ্রিম কোর্টে যতগুলো শুনানির দিন পড়বে, তত চাপ বাড়বে, প্রতিটা শুনানির আগে তাঁদের চলো কিছু করে দেখাই বলে কিছু করে দেখাতে হবে। চারদিনের তদন্তে কলকাতা পুলিশ যা যা করেছে, গ্যালারি গরম করা ছাড়া সিবিআই তার থেকে এক পয়সারও বেশি কোনও কাজ করেনি। কিন্তু শিক্ষিত জনতার সম্মিলিত কণ্ঠস্বর যদি এটাই চায়, তবে তাই হোক, আফটার অল দেশে গণতন্ত্র আছে আর কে না জানে গণতন্ত্রের আপাতত পরিভাষা সংখ্যাগরিষ্ঠতাবাদ।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Hariyana | 'বাজি পল্টেগি' সমর্থকদের বিরাট বার্তা কংগ্রেস নেতা ভূপিন্দর হুডার
02:46:35
Video thumbnail
Jammu-Kashmir | জম্মু ও কাশ্মীরে ভোটের ফল নিয়েকী জানাল বিজেপি?দেখুন Live
46:00
Video thumbnail
Hariyana | 'হরিয়ানা এক হরিয়ানভি এক'
41:40
Video thumbnail
J&K Election Result LIVE | জম্মু ও কাশ্মীরে ভোটের ফল নিয়ে কী জানাল বিজেপি? দেখুন Live
55:39
Video thumbnail
Jammu & Kashmir | জম্মু ও কাশ্মীরে কোন অঙ্কে ইন্ডিয়া জোটের বাজিমাত? দেখুন এই ভিডিও
03:38:18
Video thumbnail
RG Kar | আরজি করে গণ ইস্তফা চিকিৎসকদের! কী করবে সরকার?
03:27:09
Video thumbnail
Weather | পঞ্চমীতেই শহর জুড়ে তুমুল বৃষ্টি, কী হবে ষষ্ঠীর সকালে?
03:46:25
Video thumbnail
Selja Kumari | হরিয়ানাতে সরকার গড়বে কংগ্রেস, জানিয়ে দিলেন কুমারী শেলজা
02:46:00
Video thumbnail
Cyclone | ৯৫ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় মিলটন কী হবে এবার?
01:39:46
Video thumbnail
Vinesh Phogat | অলিম্পিক্সে স্বপ্নভঙ্গ, ভোটে স্বপ্নপূরণ ভিনেশ ফোগাটের
02:23:50