আমাদের এই চতুর্থ স্তম্ভের অনুষ্ঠানে বারকয়েক বলেছি যে বিচার তো ছেলের হাতের নাড়ু নয় যে হাত ঘুরিয়েই এসে যাবে। বিচার এক পদ্ধতি, তার এক রীতি আছে, পদ্ধতি মেনে বিচার পেতে সময় লাগে, চটজলদি বিচার হল এক মধ্যযুগীয় ধারণা। ও ধর্ষণ করেছে, লটকে দে ফাঁসিতে, ও খুন করেছে, পাথর ছুড়ে ওকেও খুন করে দে। এগুলো সভ্য সমাজের বিচার নয়। গণতান্ত্রিক সভ্য সমাজে বিচারের প্রথম কথাই হল ১০০টা দোষী শাস্তি না পেলেও চলবে একজনও নির্দোষ যেন ফাঁসিতে না চড়ে, সাজা না পায়। শেষে জানা যাচ্ছে যে, ধনঞ্জয় নাকি ধর্ষণ আর খুন করেনি, কিন্তু এখন আলোচনায় লাভ নেই, ধনঞ্জয়কে ফাঁসিতে চড়ানো হয়েছে সেই কবে। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে তিন নম্বর শুনানির দিন ছিল। আর সেই শুনানিকে ঘিরে থ্যাঙ্কস টু আওয়ার অশিক্ষিত এবং এক শ্রেণির ধান্দাবাজ সংবাদমাধ্যম, মানুষের মধ্যে এক গণ উন্মাদনা দেখতে পাচ্ছিলাম। শিক্ষিত মানুষজন, কেউ কবি কেউ লেখক, কেউ শিল্পী, মানে বুদ্ধিবৃত্তিই যাঁদের পেশা, সেই তাঁরা এক ঘোরের মধ্যে ছিলেন বা আছেন, যার জন্ম দিয়েছে কিছু সংবাদমাধ্যম। এরফলে তাদের টিআরপি, দর্শকসংখ্যা চড় চড় করে চড়েছে, যত রহস্যের কথা বলা যায়, যত ষড়যন্ত্রের কথা বলা যায় তত মানুষের আগ্রহ বাড়ে, তত দর্শক বাড়ে, তত বিজ্ঞাপন বাড়ে। সব দিক থেকে এই অসম্ভব মিথ্যে, অর্ধসত্য একপেশে প্রচার চালানো হচ্ছে। যার ফলে এই গণ উন্মাদনা গড়ে উঠেছে। প্রথমে সেটা ছিল ৫ তারিখ, ৪ তারিখ রাত দখল করা হচ্ছে, আগামিকাল বিচার চাই। একই জিনিস হল ৮ তারিখ রাতে, সারারাত মানুষ কেবল প্রতিবাদ করছেন এমন নয়, এর আগেও রিক্লেইম দ্য নাইট অনেক হয়েছে পৃথিবীতে, সেগুলো ছিল প্রতিবাদ আর বিচারের জন্য মানুষের জড়ো হওয়া। আর এটা ছিল আগামিকাল বিচার পাব আমরা, আগামিকালই শাস্তি চাই সেই দাবিতে।
কী বিচার? কার বিচার? যে যার মতো করে ঠিক করে নিয়েছিল। ধর্ষিতা ওখানে খুন হননি, ধর্ষিতাকে খুন করেছিল ওই অধ্যক্ষ আর তার চেলাচামুন্ডারা, সঞ্জয় রায় একজন বোড়ে এই কথাগুলো বলে দেবে সুপ্রিম কোর্ট। বলে দেবে যে এই হত্যাকাণ্ডের আসল নায়ক বা নায়িকা বসে আছে গঙ্গার পশ্চিমপাড়ের বাড়িটাতে অতএব দাবি এক দফা এক পদত্যাগ পদত্যাগ। সবটাই আগে থেকেই ঠিক করে রাখা, কেবল অপেক্ষা চিফ জাস্টিস এবং তিনজনের বেঞ্চ কখন এই কথাগুলো বলবেন আমরা বিচার পেলাম বলে বাড়ি ফিরব। হ্যাঁ, এই প্রচারের ফলে যে মানুষ আইন নিয়ে কোনওদিনও সামান্যতম আগ্রহও দেখায়নি, সামান্য তথ্য বা জ্ঞান নেই, তাঁর মনে হয়েছে ওই সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে গিয়ে বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য এক বাঘা উকিলের মতন সিনেমায় দেখা উত্তম কুমারের মতন সওয়াল করে ছিঁড়েখুঁড়ে বার করে আনবেন তথ্য, আধঘণ্টা বক্তব্য রাখবেন কেমন করে কোন মানুষজনের ষড়যন্ত্রে খুন হয়েছেন আমাদের তিলোত্তমা। বদলে দেখা গেল তিনি সাকুল্যে পৌনে একখানা বাক্য বলেছেন, যদিও এ আসরে রবাহুত কৌস্তভ বাগচী সাড়ে সাতখানা বাক্য জোরের সঙ্গে বলতে গিয়ে স্বয়ং চিফ জাস্টিসের কাছে যাকে বলে ঝাড় খেলেন, তিনি বললেন গলা নিচু করুন গ্যালারি গরম করবেন না। আচ্ছা রবাহুত বলছি কেন? কারণ আজ সুপ্রিম কোর্টের যে অর্ডার শিট আমাদের হাতে এসেছে তাতে সরকারপক্ষ, সিবিআই-এর তরফে, বাবা-মা, আন্দোলনকারী ডাক্তার ইত্যাদি নানান পক্ষের তরফে এবং অবশ্যই রাজ্য সরকারের তরফে মোট শ’ খানেক এর বেশি আইনজীবীর নাম থাকলেও আমাদের কৌস্তভ বাগচীর নাম কিন্তু নেই।
সে থাক, আমরা বরং গতকাল মানে ৯ তারিখ ওই সুপ্রিম কোর্টে কী হল সেটা নিয়ে এক্কেবারে পুরো প্রসিডিংসটা ধরে আলোচনা করি। প্রথমে বুঝে নেওয়া যাক গতকাল ওই শুনানিতে কী আলোচনা হওয়ার কথা ছিল? বলাই ছিল যে সিবিআই তাদের তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে মহামান্য শীর্ষ আদালতকে সবটা জানাবে। ওনারা সবটা দেখবেন, কোথাও তদন্তের কোনওরকম অগ্রগতিতে বাধা আসছে কি না সেগুলো নিয়ে আলোচনা করবেন, এবং পাওয়া সমস্ত তথ্যগুলোকে মিলিয়ে দেখবেন, ওখানে সওয়াল জবাবের বিরাট কোনও জায়গাই ছিল না। মা-বাবার তরফে ছিলেন বটে বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য কিন্তু একমাত্র মা-বাবা নিয়ে কোনও তথ্য সিবিআই দিলে বা রাজ্য সরকার ভুল তথ্য দিলে, মেয়েটির ধর্ষণ আর হত্যা নিয়ে রহস্য যা তৈরি হয়েছে সে প্রসঙ্গ উঠলে তাঁর বলার কথা কিন্তু সে তো এখনও বহু বহু পরের কথা। কাজেই তিনি ওই একবারই বলেছেন ময়নাতদন্তের রিপোর্টেরও তদন্ত হওয়া উচিত আর তিলোত্তমার বাবা-মাকে টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল তা তদন্তের মধ্যে আনা উচিত। আদালত বলেছে সে তো সিবিআই তদন্ত করছে। শুরুতেই সুপ্রিম কোর্ট গত দিনের শুনানির সময়ে কখন জেনারেল ডায়রি হয়েছে, কখন এফআইআর হয়েছে, কখন ইনকোয়েস্ট হয়েছে, ক’টার সময়ে সিজার লিস্ট তৈরি হয়েছে ইত্যাদির টাইম ফ্রেম নিয়ে যা বিভ্রান্তি ছিল তা কাটানোর চেষ্টা করলেন। রাজ্যের তরফে কপিলবাবু সেগুলো জানালেন, সিবিআই-এর উকিল বা সলিসিটর জেনারেল এই টাইম ফ্রেম নিয়ে কোনও কনটেস্ট করলেন না, মানে না না উনি ভুল বলছেন গোছের কিছু বললেন না। একটা টাইম ফ্রেম নিয়ে কথা উঠল, সেটাই কপিল সিব্বল জানিয়ে দিলেন ওনারা জিডির সার্টিফায়েড কপি জমা দিয়েছেন, ব্যস, এ নিয়ে কথা শেষ। এবারে সিসিটিভি নিয়ে কথা শুরু হয়, চিফ জাস্টিস চন্দ্রচূড় জিজ্ঞেস করেন আপনারা কি সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ জমা দিয়েছেন? রাজ্য সরকারের তরফে বলা হয় হ্যাঁ। এরপরে আবার জাস্টিস চন্দ্রচূড় জিজ্ঞেস করেন ওই ঘটনার ২৭ মিনিটের ফুটেজ সহ সারাদিনের ফুটেজ সিবিআই-এর কাছে জমা করা হয়েছে কি না। রাজ্যের তরফে জানানো হয় হ্যাঁ, হার্ড ডিস্ক দেওয়া হয়েছে। এই সময় সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান ওনারা ২৭ মিনিটের সিসিটিভি ফুটেজ আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন। তখন রাজ্যের তরফে জানানো হয়, দুটো আলাদা বিষয়, ২৭ মিনিটের ফুটেজ দেওয়া হয়েছে, এবং তার সঙ্গে পুরো হার্ড ডিস্কও সিবিআইকে দেওয়া হয়েছে, তাঁরা সেগুলো নিয়েই গোটা ঘটনা রিকন্সট্রাক্ট করছেন, তুষার মেহতার সংযোজন।
আরও পড়ুন: Fourth Pillar | সিনেমা রিলিজ, গায়কদের জলসা হবে, গড়িয়াহাট হাতিবাগানে হকার আন্দোলন আর প্রতিবাদ দেখবে?
মানে সিসিটিভি নিয়ে কোনও সন্দেহ বা ষড়যন্ত্র উঠে এল না, অন্তত এই শুনানিতে নয়। এরপরে কথা শুরু হল এবং এই অংশের কথা বোঝা সম্ভব নয়, কারণ সলিসিটর জেনারেল ফরেনসিক রিপোর্টের একটা অংশ বিচারপতিদের লক্ষ করতে বলেন, যা আমরা জানি না। কিন্তু বলা হয় এই স্যাম্পলগুলো পশ্চিমবঙ্গের এফএসএল, মানে ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। কপিল সিব্বল তখন বলেন, ওটা সেন্ট্রাল ফরেনসিক ল্যাব, সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট-এর রাজ্যের নয়। তখন সলিসিটার জেনারেল জানান এই ফরেনসিক এভিডেন্সগুলো আমরা দিল্লি এইমস বা অন্য রাজ্যের ফরেনসিক ল্যাবে পাঠাব। বিচারপতি বলেন, সিবিআই তার তদন্ত চালাক, এবং এক সপ্তাহ পরে আবার তাদের তদন্তের গতিপ্রকৃতি আমাদের কাছে জানাক। এরপরে কথা হয় আরজি করের সুরক্ষার জন্য যে তিন কোম্পানির থাকার জায়গা দেওয়ার কথা তা রাজ্য কেন দিচ্ছে না। রাজ্যের তরফে জানানো হয় সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে, কোথায় করা হয়েছে তার বিবরণ দেওয়া হয়। আর আদালত বলে একজন স্পেশাল অফিসার নিয়োগ করা হবে যিনি সিআইএসএফ-এর সঙ্গে কথা বলে এই অভাব অভিযোগগুলো দেখবে। এরপর আসরে ফিরোজ এডুলজি, তিনি বেশ কিছু বিষয় উল্লেখ করেন যা হয়ে থাকলে সত্যিই এই তদন্ত কোথাও কম্প্রোমাইজড বলে মনে হতেই পারে। তিনি বডি সোয়াব ৪ ডিগ্রি তাপমাত্রায় রাখার কথা বলেন, বলেন এফআইআর-এর আগে সিজার হয়েছে, বডি এক্সরে হয়েছিল কি না, হয়ে থাকলে তা জমা দেওয়া হয়েছে কি না, মোটামুটি বহুল প্রচলিত বাংলা পত্রিকাতে যে যে পয়েন্ট আমাদের প্রায় মুখস্থ হয়ে গেছে, ওই ৯০ ডিগ্রিতে পা থাকার কথা বা হাড়ভাঙার কথা সমেত তিনি সবটাই বললেন এবং বিচারপতি বললেন, এগুলোই তো সিবিআই দেখছে, মানে এগুলোই তো সিবিআই তদন্ত করছে।
এরপরে চিফ জাস্টিস জানতে চান মৃতদেহ যখন পোস্টমর্টেমে যাচ্ছে তখন একটা চালান দেওয়া হয় সেটা কোথায়? কপিল সিব্বল রাজ্য সরকারের আইনজীবী ইত্যাদিদের সঙ্গে যথেষ্ট ফিসফিস করার পরেও সেই কাগজের হদিশ মেলেনি। এবং শেষমেশ উল্টোদিকের আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি জানান হাইকোর্টে মামলা তোলার সময়ে সেই কাগজটা ছিল। চিফ জাস্টিস বলেন ওই কাগজ যেন পরের দিনে কোর্টে পেশ করা হয়। এর পরে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে আসে, তা হল ডাক্তারদের আন্দোলন, ওই ছাত্রদের আইনজীবী বলেন এতে প্রবলেম আছে। আমি যে ২৫০০০ ডাক্তারের প্রতিনিধিত্ব করছি, কেউ আরজি করে, কেউ স্বাস্থ্যদফতরে। তারা হুমকির মুখে। আমরা যা চাইছি, সেটা হল এটা নিয়েও একটা স্টেটাস রিপোর্ট চাওয়া হোক, কারণ হাইকোর্ট দেখেছে, দুটোই অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। বিচারপতি বলেন, এই জড়িয়ে থাকাটা নিজেই তো তদন্তের বিষয়।
এরপরে চিফ জাস্টিস রাজ্য সরকারের কাছে জরুরি ভিত্তিতে সুরক্ষা বাড়ানো, হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর্মীদের রেস্টরুম, টয়লেট ইত্যাদির ব্যাপারে যে রিপোর্ট দিতে বলেছিলেন তার উল্লেখ করেন, সেখানে বাজেট বরাদ্দ হয়েছে কিন্তু কাজের কাজ কতটা হয়েছে জানতে চান। কপিল সিব্বলের কাছে এর জবাব ছিল না, চিফ জাস্টিস আগামী শুনানিতে সেটাও জানাতে বলেন, এরপরে কপিল সিব্বল হাসপাতালে রোগীদের প্রসঙ্গ তোলেন। ২৩ জন মারা গেছে, ৬ লক্ষ লোক চিকিৎসা পাননি কারণ এঁরা কাজ করছেন না। সরকারি হাসপাতালে এঁরা কাজ করছেন না. স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এখান থেকে আমরা কোথায় যাব? আদালত শেষবার বলেছিল কাজে ফিরতে। তারা কাজে ফিরেছে? আদালত বলুক, না গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মে আই হেল্প বুথ তৈরি করা হয়েছে, সেগুলো ভেঙে দিয়েছে। সারা রাজ্যে প্রতিবাদ হচ্ছে। পুলিশকে কিছু জানানো হচ্ছে না। না উপস্থিত বিকাশ ভট্টাচার্য বা ওই কৌস্তভ বাগচীও কোনও কথাই বলেননি। এরপরেই চিফ জাস্টিস বলেন, মঙ্গলবার ৫টার মধ্যে জুনিয়র ডাক্তারবাবুরা কাজে যোগ দিন, রাজ্য সরকার যেন তাদের বিরুদ্ধে কোনও রকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেয়। আর তাদের সুরক্ষার দিকটাও যেন দেখা হয়। ইতি তৃতীয় শুনানি সমাপ্ত। আজ্ঞে হ্যাঁ, এতটাই ম্যাড়ম্যাড়ে কাঠখোট্টা এক শুনানি, যার পুরো ভিডিও দেখার পরে ঘুম পাবে।
এদিকে এই দিনের শুনানির দিকে তাকিয়েছিল রাত দখলের আন্দোলনকারীরা, প্রতিবাদীরা, জুনিয়র ডাক্তারেরা, এক চরম ফ্রাস্টেশন নামবেই তাঁদের শরীর জুড়ে, নামতে বাধ্য হতাশা। কারণ আপনি যুদ্ধে যাবেন, আগে যুদ্ধের জ্যামিতিটা, তার নিয়মকানুন আর পদ্ধতিটাই জানেননি। এক হত্যার সঙ্গে যখন জুড়ে যায় আরও বেসিক প্রশ্ন লিঙ্গ সমানতার, জুড়ে যায় দুর্নীতির মতো প্রশ্ন তখন আইনি লড়াইকে লম্বা করা হতে থাকে, সে চলতে থাকে কচ্ছপের গতিতে। এবং বহু ক্ষেত্রেই সময়ের ব্যবধানে ঘটনার গুরুত্বও কমে যায়, এরকম বহু বহু উদাহরণ আমাদের চোখের সামনেই আছে। এখনও জানাই নেই কারা অপরাধী ছিল সেই মামলাগুলোর, নো ওয়ান কিলড জেসিকার মতো। কাজেই এক লম্বা রাস্তার লড়াইয়ের জন্য তৈরি হন, লাগাতার লড়াই, দশমীর মধ্যে বিচার না হলে বরণে যাবই না, এ বলার মধ্যে এক শুদ্ধ আবেগ আছে, যুক্তি নেই। “না বলুন পুজোয়,” পবিত্র আবেগ আছে, যুক্তি নেই, কতদিন হাসবেন না? কতদিন গান গাইবেন না, নাকি আজ থেকে যতদিন বিচার না আসবে ততদিন ওই পথে এবার নামো সাথীই গেয়ে যাবেন? রাস্তায় থাকতেই হবে যদি বিচার পেতে হয়, যদি শাস্তি দিতে হয় কিন্তু সেটা করার মধ্যে ছেলেমানুষির জায়গা নেই, নির্বুদ্ধিতার জায়গা নেই, আবেগে ভেসে গিয়ে একটা কাল্পনিক লক্ষ্য আর শত্রু বাছার মধ্যে এর উত্তর নেই। আপনি যদি মনে করেন আগামী শুনানিতেই মিলে যাবে বিচার, তাহলে ভুল ভাবছেন। আগামী কেন, আগামী দশটা শুনানিতে এর বিচার পাওয়া অসম্ভব, তাই দম ধরতে হবে। কারণ এই লড়াইটা কেবলই এক খুনি ধর্ষকের বিরুদ্ধে নয়, এক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে, সিস্টেমের বিরুদ্ধে।