ইন্ডিয়া জোট এখন হেডলেস চিকেনের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে। এক জোট যার মাথাই নেই। পাটনায় বৈঠকে বসাটাই তো এক বিরাট ব্যাপার ছিল। সেই কবে নীতীশ কুমার কলকাতায় এলেন, মমতার সঙ্গে দেখা করতে আমরা সেই সাক্ষাৎকারের পরে শুনেছিলাম মমতার মুখে যে পাটনায় বৈঠক ডাকা হোক, বিরোধী নেতারা বৈঠকে বসুক। কাজেই সেই লক্ষ কোটি মানুষ যারা গণতন্ত্র ফিরে পেতে চায়, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরে পেতে চায়, ইডি-সিবিআই রাজের পরিসমাপ্তি দেখতে চায়, সংবিধানের শাসন চায়, তারা আশার আলো দেখল। পাটনাতে বিরোধীরা গিয়ে হাজির তো হলেন, হ্যাঁ অন্তত বৈঠকে তো বসলেন। এবং পরবর্তী বৈঠক হবে তারও ঘোষণা হল। নীতীশ কুমার উদ্যোগ নিলেন কেন? কারণ তো সব্বার জানাই ছিল উনি রাজনীতির সেন্টার স্টেজে আসতে চাইছেন, কিন্তু পরিহাস দেখুন কংগ্রেসের মাথায় সেটা ঢুকল না। নীতীশকে সামনে রেখেই বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করার অসুবিধে কোথায় ছিল? উল্টো ধারে দেখুন শিন্ডেকে সামনে রেখেই ওরা প্রথমে বিরোধীদের ক্ষমতা থেকে দূরে রাখল, তারপরে মহারাষ্ট্রের দখল নিল। এরপর বেঙ্গালুরু বৈঠক, দরজায় দাঁড়িয়ে কংগ্রেসি নেতারা আপ নেতাদের স্বাগত জানালেন, তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে সহাস্য আলাপ কমরেড সীতারাম ইয়েচুরির, আমাদের মনে আছে। প্রায় নি-জার্ক রি-অ্যাকশন বিজেপির, তড়িঘড়ি করে স্মৃতির বাক্স থেকে তারাও সেদিন বার করল এনডিএ-কে। এদিকে বিরোধী জোটের নাম দেওয়া হল ইন্ডিয়া, মাস্টার স্ট্রোক। মিডিয়াতে চর্চা ইন্ডিয়া জোটের। এরপর মুম্বই অধিবেশন, আমরা মানে আবার ওই স্বাধীনতা হীনতায় গুমরে মরতে থাকা সাংবাদিকেরা, মূল্যবৃদ্ধির চাপে হাঁসফাস করতে থাকা মানুষজন ভেবেছিলাম, একজন কনভেনর হবে, একটা কমন মিনিমাম প্রোগ্রাম তৈরি করার টিম হবে, ২০২৪ কে মাথায় রেখে আসন বণ্টনের কিছু ফরমুলা বের হবে, লোগো আসবে সামনে।
কী হল? একটা গুরুত্বপূর্ণ কমিটি তৈরি হল, বাকি তিনটে এমন কমিটি যা কাজ শুরু করতে হলে যা দরকার তাই হাতে নেই। বলছি, বুঝিয়ে বলছি। একটা কমিটি তৈরি হল যার নাম কো অর্ডিনেশন কমিটি, খেয়াল করুন, রাহুল গান্ধী নেই, মল্লিকার্জুন খাড়গেও নেই, আছেন কে সি বেণুগোপাল, ডিএমকে-র স্তালিনের নাম শোনা যাচ্ছিল, তারপরে জানা গেল সেখানে আছেন টি আর বালু। অরবিন্দ কেজরিওয়াল নেই, আছেন রাঘব চাড্ডা, তাতে নীতীশ কুমার নেই, আছেন লল্লন সিং, অখিলেশ যাদব নেই আছেন জাভেদ আলি খান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেই, আছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এটা নাকি সর্বোচ্চ কমিটি, হ্যাঁ কমিটিতে আছেন বটে শরদ পাওয়ার, কিন্তু সেটাও কি মানানসই? তার মানে ওই কমিটি সর্বোচ্চ কমিটি ছিল না, এরও উপরে থেকে গেলেন মমতা, নীতীশ, অখিলেশ, লালু, রাহুল, মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং সোনিয়া গান্ধী। সিপিএম তো নামই দিল না। অন্য দুই কমিটিতে সিপিএম-এর প্রতিনিধি প্রাঞ্জল এবং অরুণ কুমার, শুনেছেন এঁদের নাম? কোনওদিনও শুনেছেন? আচ্ছা এই কমিটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেবে? সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত? বাকি তিনটে কমিটি হল প্রচার কমিটি, সোশ্যাল মিডিয়া প্রচার কমিটি, আর গবেষণা কমিটি। তো এসব কমিটি কাজ করবে কিসের ভিত্তিতে? মানে কী প্রচার করবে? সেটা কে ঠিক করবে? কখন ঠিক করবে? আসন সমঝোতা কি ওই কো-অর্ডিনেশন কমিটি করবে? না, সেখানে তো সিপিএম সাফ বলে দিয়েছে ওগুলো রাজ্য স্তরে ঠিক করা হবে, তাহলে? এই কমিটি কী করবে? কেউ জানে না।
প্রচারের কোনও মেটিরিয়াল নেই, লোগো পর্যন্ত ঠিক করতে পারলেন না নেতারা, প্রচারটা কী দিয়ে হবে? প্রধানমন্ত্রী মুখ ছেড়েই দিলাম, জোটের নেতা কে জানা গেল না, জোটের সর্বোচ্চ কমিটিতে সেকেন্ড ইন কমান্ডদের রেখে ফার্স্ট ইন কমান্ডরা নিজেদের ম্যানুভারের জায়গা খোলা রাখলেন। যে কেউ, যখন খুশি ব্যাক করার জায়গা পালিয়ে যাওয়ার রাস্তা ছেড়ে রাখলেন। মোদি–শাহ, আরএসএস-বিজেপি বিরোধী জোটের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক কমিটিতে সোনিয়া, রাহুল, খাড়গে, মমতা, নীতীশ, লালু, ইয়েচুরি, অখিলেশ নেই, এটা কি ছ্যাবলামো নয়? মনে হচ্ছে কি যে এই জোটের নেতারা জোট নিয়ে সিরিয়াস। ওই মাথাবিহীন জোটের সবথেকে বড় কথাটা কী? মূল উদ্দেশ্যটা কী? বলা হয়েছিল যথা সম্ভব চেষ্টা করা হবে ৪০০-৪৫০ আসনে ওয়ান টু ওয়ান, মানে বিজেপির বিরুদ্ধে একজন প্রার্থী দাঁড় করানো হবে। আচ্ছা এটা নিয়ে তামিলনাড়ু, কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, অসম, বিহার, ঝাড়খণ্ডে কি কোনও সমস্যা আছে? সমস্যা তো এই বাংলায়, কেরালায়, দিল্লি আর পঞ্জাবে। এই তো। তো সেটা কবে হবে? হলও না। যে যাঁর মতো লড়ে গেলেন। আলোচনা তো দূরস্থান, অত্যন্ত অমনোযোগী গেঁতো ছাত্রের মতন পড়াশুনো ছেড়ে কেবল বইয়ের মলাট দেওয়া হচ্ছে, স্কুল ব্যাগ আর টিফিন বাক্স কেনা হচ্ছে, জ্যামিতি বাক্স থেকে পেন্সিল বার করে তাকে ছুঁচলো করা হচ্ছে, পড়তে বসা আর হচ্ছে না। কাদের জন্য? মূল বাধাটা কোন দিক থেকে আসছে। কংগ্রেস চাইছিল পাঁচ রাজ্যের ভোট হয়ে যাক, তাদের আশা তেলঙ্গানা সমেত চার রাজ্যেই তারা চমকে দেওয়ার মত রেজাল্ট আনবে, সেই রেজাল্ট হাতে পেলে তবে দরকষাকষি জমবে ভালো, কাজেই ধীরে চলো। অর্থাৎ আরএসএস–বিজেপি, আদর্শ ইত্যাদি নয়, আসল সেই নাম্বার গেম।
আরও পড়ুন: Fourth Pillar | বাংলাদেশ-ভারত উত্তেজনা ছড়িয়ে কার লাভ?
অন্যদিকে সিপিএম, যাঁরা ভারত জুড়েই টেকনিক্যালি সংসদীয় রাজনীতিতে বিজেপির সঙ্গে লড়াই করছে না, লড়ছে কংগ্রেসের সঙ্গে, আর তৃণমূলের সঙ্গে, আদর্শ ইত্যাদির বুকনির মধ্যে প্রায় বাধ্য হয়েই জোটে আছে বটে, কিন্তু এখন ছুঁচো গেলার অবস্থা, না পারছে হজম করতে, না পারছে ওগরাতে। পাগলেরা মাঝেমধ্যেই ভাবে সমীকরণ এমনি এমনিই হয়ে যাবে, হয় না, হয় না। রাজনৈতিক সমীকরণ গড়ে তুলতে গেলে প্রথমেই দরকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা, তা যদি না থাকে তাহলে কোনও সমীকরণ গড়ে তোলা যায় না, গড়ে উঠলেও কাজে দেয় না। সময় বেশি নেই, উল্টোদিকে প্রতিপক্ষ মোদি–শাহ, চমকে দেওয়ার মতো ক্ষিপ্র গতিতে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন, তাঁদের জবাবদিহি দেওয়ার কেউ নেই, আরএসএস-ও এখন ওই মোদিজির দিকেই তাকিয়ে। সেই তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে গেলে দরকার সিদ্ধান্ত নেওয়ার দক্ষতা, সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত। জোট ইত্যাদির পেছনে ২০০ পাতার আদর্শের কথা লেখাই যায়, দারুণ লোগো আর ট্যাগলাইন তৈরি করাই যায়, কিন্তু সংসদীয় গণতন্ত্রে রাজনৈতিক জোটের আসল বিষয় তো গরিষ্ঠাংশ আসন জেতা, সেটা নিয়ে কথা শুরুই হল না। কিন্তু সব্বাইকে অবাক করে দিয়েই মানুষ বিজেপিকে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার বহু বহু আগেই আটকে দিল। হ্যাঁ ইন্ডিয়া জোট হলে কী হতে পারত সেটা ভেবে দেখুন, এত হাজার অনৈক্য নিয়ে ইন্ডিয়া জোট জিতল না কিন্তু বিজেপি আটকে গেল। আর তারপর থেকেই শুরু হল বিজেপির আরও মরিয়া প্রচেষ্টা আর বিরোধীদের আরও দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজকর্ম।
ঝাড়খণ্ডের জয়ের পরে দেখেছেন স্টেজ আলো করে বিরোধী দলের নেতারা হাজির, আচ্ছা এই বিরোধী নেতারা জয়ের আগে একটা যৌথ জনসভা করেছেন? মহারাষ্ট্রে গেছেন সব্বাই মিলে? যাননি। ঝাড়খণ্ডের জয় এসেছে হেমন্ত সোরেনের রাজনীতির জন্য, হিন্দুত্বের বিরুদ্ধে আদিবাসী আইডেন্টিটিকে সফলভাবে দাঁড় করিয়ে দেওয়ার জন্য, মাইয়া সম্মান যোজনা বা আদিবাসীদের বিদ্যুৎ বিল মাফ করে দেওয়ার জন্য। ওই যে প্রথমেই বলেছি, মাথাকাটা মুর্গির মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে ইন্ডিয়া জোট, তার মাথায় কে কেউ জানে না, রাস্তায় তাকে দেখা যাচ্ছে না, কারণ রাস্তায় রাহুল গান্ধী তখন নামবেন যখন তাঁকে সামনে রেখে প্যায়দল যাত্রা হবে, না হলে তিনি সংসদে থাকবেন। মানে ইন্ডিয়া জোট কাজ করবে কেবল সংসদে, এটা একটা পদ্ধতি? আপ বলেই দিয়েছে ইন্ডিয়া জোটকে নিয়ে দিল্লি নির্বাচন হবে না তাঁরা একলাই লড়বেন, সুতোর উপর ঝুলছে সেই জয় পরাজয়, কিন্তু কংগ্রেস? তারা দিল্লিতে কী করবে? কিছু ভোট কাটা ছাড়া? ইতিহাসের এইসব মুহূর্তগুলো বারবার আসে, যখন স্বৈরাচারের জন্ম থেকে বেড়ে ওঠার পেছনে মধ্যপন্থা আর সমাজগণতন্ত্রীদের প্রত্যক্ষ ভূমিকা থাকে, আমাদের দেশ কি এখন সেই পর্যায়ে? একটা বিরাট সুযোগ সামনে এসেছিল, মোকাবিলা করাই যেত এই স্বৈরাচারের, আমরা কি সেটা হাত থেকে চলে যেতে দেব? বিজেপি বিরোধী একটা জোট হবে, অর্থাৎ যে রাজনৈতিক দল বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করছে তাদের জোট হবে। এ রাজ্যে সিপিএম-এর বক্তব্য কী? তৃণমূল আর বিজেপি তো একই, তারা তো একে অন্যের পরিপূরক, তারা তো আসলে ছায়া ছায়া যুদ্ধ করছে, লোককে বোকা বানাচ্ছে। হতেই পারে, এই সব ক’টা সত্যি হতেই পারে। তাহলে তেমন এক দল জোটে আসছে, আপনারা সেই জোটের বৈঠকে কিছু বলবেন না? বিরোধী ঐক্য চাই? কাদের সঙ্গে যারা আসলে বিজেপি? আসলে আরএসএস? জোটের মধ্যে এই কথা বলেছে সি পি এম? না বলেনি। কেন বলেনি?
কারণ নাকি তারা বিজেপি-বিরোধী জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠুক সেটা চায়। হ্যাঁ গতকালের গণশক্তি খুলে দেখুন, সেখানে বড় করে খবর, ধনখড়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধে ইন্ডিয়া, খবরে লেখা আছে যে তৃণমূল কংগ্রেস, সমাজবাদী দ, সিপিএম ইত্যাদি দল একসঙ্গেই সেই প্রতিবাদপত্রে সই করেছে। কিন্তু সেলিম সাহেব তাঁর বক্তৃতাতে বলছেন বিজেপি-বিরোধী জাতীয় ঐক্যে একটা দল আছে যা নাকি আরএসএস-এর একটা শাখা, অথচ তাদের সঙ্গে জোটে আছে সিপিএম কেন? কারণ ওই যে, ওনারা বিপ্লবী। আচ্ছা মমতা নিয়ে ওনাদের এত আপত্তি কেন? কারণ মমতা অটল মন্ত্রিসভায় মন্ত্রী ছিলেন, খেয়াল করুন নীতীশ কুমারও ওই একই মন্ত্রিসভায় ছিলেন, বিজেপির সমর্থনে মুখ্যমন্ত্রীও হয়েছেন, কিন্তু না ইতিমধ্যেই তাঁর সঙ্গে জোট সরকার কিন্তু চলছে। মমতার দলে দুর্নীতি? মন্ত্রীরা জেলে? লালুপ্রসাদের দলে কী? তেজস্বী যাদবের কটা মামলা? কেজরিওয়ালের দলের দু’ নম্বর আজও জেলে, স্তালিন-এর মন্ত্রিসভার সদস্য জেলে। আসলে ওনারা কেউই এই সিপিএম-এর ৩৪ বছরের মৌরুসিপাট্টা ভাঙেননি, ইনি ভেঙেছেন, তাই এনার সঙ্গে জোট নয়, তো সেটা সোজাসুজি বললে চুকে যায়। কিন্তু না, ওনারা বিপ্লবী পার্টি, একটা আদর্শের প্রলেপ দিতেই হবে, দিচ্ছেন। ওদিকে কংগ্রেস আসলে সুযোগের অপেক্ষা করছিল কবে তাদের দারুণ ফলাফল হবে, পাঁচটা বড় রাজ্য তাদের হাতে আসবে, তারা জোটের মাথায় বসবে। কিন্তু তা তো হয়নি, হয়েছে উল্টোটা। কাজেই এবার জোটের ভেতর থেকেই কথা উঠছে। বলা হচ্ছে মমতা ব্যানার্জি দায়িত্ব নিন। অখিলেশ বললেন, মমতা প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই জানিয়ে দিয়েছেন, উনি দায়িত্ব নিতে রাজি আছেন। সমর্থন এসেছে শিবসেনা ইউবিটির তরফ থেকে, সমর্থন করেছেন শরদ যাদব, সমর্থন করেছে আপ, তারাও বুঝিয়ে দিয়েছে মমতা হাল ধরলে তাদের আপত্তি নেই। এবার সেই বিতর্কে জোরদার ওজনদার বক্তব্য লালুপ্রসাদ যাদবের। তিনি সাফ জানিয়েছেন, কংগ্রেসের আপত্তি শুনছে কে? জোটের মাথায় বসুন মমতা।
কংগ্রেস চারধার থেকে এই প্রতিক্রিয়া আশা করেনি, তাই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে রাহুলের অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্যতেই নিজেদের সীমাবদ্ধ রেখেছে, রাহুল গান্ধী বলেছেন তলার সারির ইন্ডিয়ার নেতারা কে কী বলল তা শুনে মতামত দেবেন না দলের, মানে ওনার দলের নেতারা। কে বোঝাবে যে ওরে ভাই লালু যাদভ, অখিলেশ যাদব বা শরদ পাওয়ার তলার সারির নেতা নয়। কিন্তু যেভাবে খুব সাজিয়ে গুছিয়ে বিষয়টাকে আলোচনার মধ্যে এনে ফেলা হল তাতে এই কথাগুলো হঠাৎ এসে পড়েছে ভাবার কোনও কারণ দেখছি না। মাথায় রাখুন শরদ পাওয়ার লালু যাদব, এই দুজনেই সোনিয়া গান্ধীর খুব কাছের মানুষ, আর প্রকাশ্যে কোন দলের কথা আসেনি? জেএমএম আর ডিএমকে, এ ছাড়া ইন্ডিয়া জোটের প্রত্যেকে এমনকী জোটের বাইরেরও ওয়াইএসআর কংগ্রেসের তরফেও মমতা ব্যানার্জিকে জোটের মাথায় বসানোর কথা বলা হয়েছে। কাজেই এটা বাংলা থেকে কোনও মুখপাত্রের উইশফুল থিঙ্কিং নয়, এটা নিয়ে আলোচনা সম্ভবত শেষ পর্যায়ের। কংগ্রেসের খুব একটা কিছু করার নেই, বিজেপি বিরোধিতার জায়গা থেকেই তাদের এটা মানতেই হবে। হ্যাঁ, সমস্যা সিপিএম-এর, জটিল সমস্যা। তবে জানুয়ারি শেষ হওয়ার আগেই এটা একটা চেহারা নেবে। এই জোটের নেতৃত্ব নিয়ে যা স্বাভাবিক সেই পথেই গড়াচ্ছে বল। কংগ্রেসের সমস্যা হল বল মারলে ক্যাচ উঠবে, আউট হয়ে যেতে পারে, আবার কিছু রানও হতে পারে যদি বিজেপি ক্যাচটা মিস করে কিন্তু ছেড়ে দিলে মিডল স্টাম্প উড়ে যাবে। দেখতে হবে কংগ্রেস কী করে।