ইন্টারন্যাশনাল থার্মোনিউক্লিয়ার এক্সপেরিমেন্টাল রিঅ্যাক্টর (International Thermonuclear Experimental Reactor – ITER)-এর মূল উপাদানের কাজ সম্পূর্ণ করেছে চিন। এটি পৃথিবীর বৃহত্তম ‘কৃত্রিম সূর্য (Artificial Sun)’ নামেও পরিচিত। মোট ৩৫টি দেশ এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত। ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চিন, ব্রিটেন, সুইজারল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং রাশিয়া ছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশ বিশ্বের বৃহত্তম কৃত্রিম সূর্য তৈরিতে অবদান রাখছে। আন্তর্জাতিক নিউক্লিয়ার ফিউশনের (Nucelar Fusion) এই মেগা প্রজেক্ট চলছে ফ্রান্সে। আশা করা হচ্ছে, এই রিঅ্যাক্টর পৃথিবীকে সূর্যের মতোই একই রকমভাবে শক্তি যোগাবে।
সূর্যের মতো শক্তি উৎপাদন করতে গবেষকরা নিউক্লিয়ার ফিউশন ব্যবহারের চেষ্টা করছেন। পারমাণবিক ফিউশনের এই প্রক্রিয়া সূর্যের মতো সমস্ত তারার মধ্যেই ঘটে থাকে। আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীরা সেটাই করার চেষ্টা করছেন কৃত্রিম উপায়ে। ফিউশন প্রক্রিয়ায় দু’টি হালকা পারমাণবিক নিউক্লিয়াস (Atomic Nuclei) ভারি নিউক্লিয়াসে গঠিত হয়। এর ফলে তার থেকে বিপুল পরিমাণ শক্তি নির্গত হয়। নিউজউইকের দেওয়া তথ্য অনুসারে এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হল, রিঅ্যাকশন প্রসেস বা প্রতিক্রিয়া প্রক্রিয়া শুরু করার মতো শক্তি সরবরাহের জন্য উল্লেখজনকভাবে শক্তি উৎপাদন করা।
আরও পড়ুন: Riyan Parag: পরাগ ফুটতেই অসম সেমিতে, ঋতুর নজিরে মহারাষ্ট্র শেষ চারে
বৃহত্তম কৃত্রিম সূর্য নির্মাণের এই উদ্যোগে সবচেয়ে বেশি অর্থ খরচ করেছে ইউরোপ। মোট খরচের ৪৫ শতাংশ তারাই দিয়েছে। বাদবাকি দেশগুলি ৯ শতাংশ অবদান রেখেছে। এছাড়া, সবকটি দেশ সম্পূর্ণ উপাদান পাঠাতে, সিস্টেম কিংবা পরিকাঠামো তৈরির মাধ্যমেও যোগদান রেখেছে উদ্যোগী সবকটি দেশ।
রাষ্ট্র পরিচালিত চিনা মিডিয়া তাদের ঘোষণায় জানিয়েছে, এনহ্যান্সড-হিট-ফ্লাক্স (Enhanced-Heat-Flux – EHF)) ফার্স্ট ওয়াল (First Wall – FW) প্যানেল হিসেবে পরিচিত উপাদানের সম্পূর্ণ প্রোটোটাইপ তারা তৈরি করেছে। আর এর ইন্ডিকেটরগুলি ডিজাইনের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করেছে। গ্লোবাল টাইমসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সাউথওয়েস্টার্ন ইনস্টিটিউট অব ফিজিক্স (Southwestern Institute of Physics) এটি তৈরি করেছে। এই সংস্থা চিনের রাষ্ট্র পরিচালিত চায়না ন্যাশনাল নিউক্লিয়ার কর্পোরেশন (China National Nuclear Corporation)-এর অধীনে রয়েছে।
আইটিইআর-এর এই ওয়াল প্যানেল সরাসরি ১০০ মিলিয়ন ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার প্লাজমার সঙ্গে সরাসরি সংস্পর্শে আসবে। ফলে এটি অত্যন্ত গুরুত্ব উপাদান এই পরীক্ষামূলক উদ্যোগের। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ছোট আয়তনের সূর্য আমরা তৈরি করছি এবং তা আমাদের সূর্যের মতো শক্তির যোগান দেবে। প্রত্যাশা রয়েছে, ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের এই প্রজেক্ট ২০২৫ সালে কাজ শুরু করবে।