skip to content
Friday, October 4, 2024

skip to content
HomeআজকেAajke | দিদি এলেন ধরনা মঞ্চে
Aajke

Aajke | দিদি এলেন ধরনা মঞ্চে

এবারে ব্যাখ্যা করতে থাকুন সব্বাই মিলে কাকে বলে মাস্টারস্ট্রোক

Follow Us :

এবারে ব্যাখ্যা করতে থাকুন সব্বাই মিলে কাকে বলে মাস্টারস্ট্রোক। মমতা কোথায় বাকি আর দশজন নেতা-নেত্রীর থেকে আলাদা, আলোচনা করুন এমন এক সময়ে যখন মনে হচ্ছিল এ এক পয়েন্ট অফ নো রিটার্ন, না ফেরার জায়গাতে চলে গিয়েছে বাংলার রাজনীতি, সেখান থেকে কীভাবে প্রায় সম্পূর্ণ হাওয়া নিজের দিকে নিয়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী, কীভাবে মানুষের সঙ্গে নিজের ঘনিষ্ঠতম সম্পর্কের দাবি নিয়েই সব ক্ষোভ, রাগ, প্রতিবাদের মুহূর্তেও একজন কেবল নিজের উপস্থিতি দিয়েই পরিস্থিতির দখল নিতে পারেন। হ্যাঁ, আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা বলছি, তিনি সটান চলে গেলেন ধরনা মঞ্চে, বললেন এখন আমি মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে এখানে আসিনি। আন্দোলনের সমব্যথী হিসাবে এসেছি। আপনাদের বড় দিদি হয়ে এসেছি। আমাকে সময় দিন। ভালো থাকুন। বলেননি ধরনা তুলে নিন, বলেননি আমি দাবি মেনে নিচ্ছি। বলেছেন এসেছি, বুঝিয়েছেন আলোচনা শেষ হয়ে যায়নি, বুঝিয়েছেন আপনারা আলোচনা চাইলে আমরা আলোচনা করতে রাজি। এটাই এই বিরাট বিক্ষোভ আন্দোলনের সেই মুহূর্ত যা ঢুকে যাচ্ছিল এক কানাগলিতে। এক অমীমাংসিত লড়াই আগামী দিনে আর এক আন্দোলন ক্ষোভ-বিক্ষোভের বীজ হয়ে থেকে যেত, মমতা নিজে এসে সেই সম্ভাবনা দূর করলেন। সেটাই আমাদের আজকের আলোচনা, বিষয় আজকে, দিদি এলেন ধরনা মঞ্চে।

আগেও বেশ কয়েকবার বলেছি, সেই নন্দীগ্রামের গুলি চালনার পরে চারিদিকে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ, সিভিল সোসাইটির মানুষজন রাস্তায়। সেরকম এক সময়ে দিল্লিতে গেছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, বঙ্গভবনে উঠেছেন। এক অফিসার এসে বলেন, বুদ্ধবাবুও বঙ্গভবনেই আছেন, বুদ্ধবাবু সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ব্যক্তিগত জীবনে বন্ধু মানুষ ছিলেন। আপনাকে ডাকছেন শুনে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় যান, বুদ্ধবাবু খানিকটা হতাশ, তিনি বলেন দেখেছেন, আমাকে বলছে নরখাদক, আমাকে বলছে জনবিরোধী, আমি নাকি অর্ডার দিয়ে গুলি চালিয়ে মানুষ মেরেছি। সৌমিত্রবাবু বলেছিলেন, ওসব কিছুই নয়, আপনি সোজা নন্দীগ্রামে চলে যান, হাতজোড় করে বলুন ভুল হয়েছে, ক্ষমা চাইছি, মানুষ সব মাফ করে দেবে, কে কী বলছে ওসবে কান দেবেন না।

আরও পড়ুন: Aajke | লাইভ স্ট্রিমিং না হলে আলোচনাতেই বসব না? 

কিন্তু নিজের ইগোর বিশাল দেওয়াল পার করে বুদ্ধবাবু সেই কাজ করতে পারেননি, যা আজ অনায়াসে মমতা করে দেখালেন। এবারে জল এক দিকেই বইতে শুরু করবে, আন্দোলোনকারীরা আলোচনাতে বসলেন তো ভালো না বসলেও মানুষ দেখলেন রাজ্যের নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী নিজে পৌঁছে গেছেন ধর্নামঞ্চে, নিজেই জানিয়েছেন এসো কথা বলো। সবচেয়ে বড় যে কথা সেটা হল এক প্রশাসক নন, এক মুখ্যমন্ত্রী নন, মঞ্চে গেলেন এক দিদি। সারা ভারতে গণ আন্দোলনে এর আরেকটা নজির দেখান তো? এই পশ্চিমবঙ্গে খাদ্য আন্দোলন থেকে ট্রাম বাস ভাড়ার আন্দোলন থেকে ভোটার কার্ডের দাবিতে আন্দোলন থেকে নন্দীগ্রাম সিঙ্গুরের আন্দোলন, মুখ্যমন্ত্রীদের একজনের সাহস হয়নি আন্দোলনকারীদের ধরনা মঞ্চে গিয়ে হাজির হওয়ার। সারা দেশের কথা তো বাদই দিলাম, কেবল ধরনা দিচ্ছে বলে বুলডোজার চালিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ঘর ইউপিতে, আমরা চরম অসংবেদনশীল সরকারকে দেখেছি কৃষক আন্দোলনের সময়ে। এখানে এক অন্য চেহারা। তিনি তিনদিন বসে থাকলেন, এক দেড় দু’ ঘণ্টা, আন্দোলনকারীরা দরজা পর্যন্ত গিয়ে ফিরে এলেন, তারপরেও সমস্ত আড় ভেঙে আমি আন্দোলন করে বড় হয়েছি, আমি তাই তোমাদের সঙ্গে কথা বলতে এসেছি, তোমাদের বিচার আমি দেব, আমি মুখ্যমন্ত্রী নয় তোমাদের দিদি হিসেবে এসেছি। পরেশ রাওয়াল থাকলে বলতেন আরে থাম পাগলি, রুলায়েগা কেয়া? হ্যাঁ এটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমরা আমাদের দর্শকদের জিজ্ঞেস করেছিলাম, এক নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী এভাবে নিজেই আন্দোলন মঞ্চে গিয়ে হাজির হওয়ার ঘটনা এর আগে কি দেখেছেন? আপনাদের কি মনে হয় না যে মঞ্চে হাজির হয়ে এক সংবেদনশীল মানুষ হিসেবে নিজেকে সবার সামনে আবার গ্রহণযোগ্য করে তুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? শুনুন মানুষজন কী বলেছেন।

এটা পুলিশ রাষ্ট্র নয়, এই রাষ্ট্রে এখনও কমবেশি ৩০ শতাংশ নিরক্ষর আছে। সাক্ষরদের মধ্যেও প্রকৃত শিক্ষার অভাব আছে, আইন কানুন অসম্ভব রকমের জটিল, বিচার ব্যবস্থা অসম্ভব ধীর। এখানে সামাজিক অপরাধ হবে, হবেই, কেউ আটকাতে পারবে না, কিন্তু সেই অপরাধ হলে যাতে দোষী শাস্তি পায় তা নিশ্চিত করতে হবে রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে, সরকারকে, প্রশাসককে। আরজি কর কাণ্ড একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বহুদিনের জমা বহু অন্যায়ের বিরুদ্ধে মানুষ রাস্তায় নেমেছিলেন, এক সামাজিক অপরাধের বিরুদ্ধে নারীরা সরব হয়েছিলেন। সেই আন্দোলন হয়ে উঠছিল বা করে তোলার চেষ্টা হচ্ছিল, যাতে তা হয়ে উঠতে পারে প্রশাসক বনাম জনতা। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তা হতে দিলেন না, মানুষকে বোঝেন, আন্দোলনের ধারাপাত মুখস্থ ওনার, দখল নিলেন সেন্টার স্টেজের, দেখে মনে হচ্ছে সিটি দিয়ে বলি, দিদি তু সি গ্রেট হো, তোফা কবুল করো।

RELATED ARTICLES

Most Popular