Friday, July 11, 2025
HomeScrollAajke | পুরীর খাজা, দিঘার গজা, বাঙালি খুশি?
Aajke

Aajke | পুরীর খাজা, দিঘার গজা, বাঙালি খুশি?

২০২৬-এর নির্বাচনের আগে এই মিষ্টির লড়াইয়ে রাজনীতি পেয়েছে এক নতুন মেজাজ

Follow Us :

২০২৬-এর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের মুখে দাঁড়িয়ে রাজ্য রাজনীতি এক অদ্ভুত জায়গায় এসে পৌঁছেছে। বলাই যায় অভূতপূর্ব। মাথায় রাখুন, অমন যে বিরাট ঢাকঢোল পিটিয়ে উদ্বোধন, সেই রামমন্দিরের উদ্বোধনের প্রসাদ বিলি এ রাজ্যে কিন্তু হয়নি। মানে অত্ত বড় রাম আপাতত এই বাংলাতে নির্বাচনের ইস্যু নয়, সেই গল্প খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, শুরু হয়েছে খাজা আর গজা নিয়ে কড়া রাজনৈতিক মারপ্যাঁচ। ইস্যু এখন জগন্নাথ। এতদিন যারা মুসলিম তোষণের অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে হিন্দুত্বের তাস খেলছিল, তারাই এখন হাত লাগিয়েছেন প্রসাদ বিলির এক নতুন প্রকল্পে— খাজা বিতরণ। কিন্তু এই খাজা বিতরণ হঠাৎ কোথা থেকে এল? রামমন্দিরের নাম করে যাঁরা গো-মাতা, গো-রক্ষা, গোমূত্র, সব নিয়েই সরগরম ছিলেন, তাঁরা হঠাৎ জগন্নাথদেবের ‘খাজা’ প্রসাদ বিলিতে কেন মন দিচ্ছেন? উত্তরটা খুঁজতে যেতেই হবে দিঘায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরেই তৈরি হয়েছে দিঘার নতুন জগন্নাথ মন্দির, যা এখন নতুন হিন্দু তীর্থক্ষেত্র হয়ে ওঠার মুখে। আর মন্দিরের কথা যত ছড়াচ্ছে, মন্দিরে ভিড় যত বাড়ছে, ততই রাজ্যের হিন্দু ভোটের একটি মনস্তাত্ত্বিক দখল মুখ্যমন্ত্রীর হাতেই চলে যাচ্ছে— এই ভাবনাতেই বিজেপির টিমলিডাররা এখন ‘হিন্দুত্বে হেরে গেলে চলে না’ কাজেই পুরীর খাজা বিতরণে হাত লাগিয়েছেন। মানে এক প্রশ্ন তুলে দিলেন এই বিজেপি নেতারাই যে পুরীর জগন্নাথ বড় না দিঘার জগন্নাথ বড়? মানে স্থানভেদে ভাগবানও ছোট বা বড় হয়ে যান, সেই তত্ত্ব নিয়ে তথাকথিত সনাতনীরা মাঠে হাজির। বিষয়টা এতটাই রাজনৈতিক হয়ে উঠেছে যে, খুব শিগগিরই হয়তো বাংলা ভাগ হয়ে যাবে খাজা-সমর্থক বনাম গজা-ভক্তে। একদিকে খাজা বিলি হবে রোডশোতে, অন্যদিকে গজা বিলি হবে জনসভায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ড উঠবে—#TeamKhaja বনাম #TeamGoja। কেউ বলবে—“পুরী আমাদের আত্মা”, আবার কেউ বলবে—“দিঘা আমাদের গর্ব”। সেটাই বিষয় আজকে, পুরীর খাজা, দিঘার গজা। বাঙালি খুশি?

সব মিলিয়ে ২০২৬-এর নির্বাচনের আগে এই মিষ্টির লড়াইয়ে রাজনীতি পেয়েছে এক নতুন মেজাজ— মৌলবাদ নয়, এখনকার রাজনীতি যেন মিষ্টিবাদ। ভোটার এখন প্রশ্ন করছে— কে কতটা খাঁটি হিন্দু নয়, কে কতটা খাঁটি প্রসাদ দিতে পারে? শুভেন্দু অধিকারী তো বহু আগেই সপাট বলেই দিয়েছেন— আমাদের মুসলমান ভোটের দরকার নেই। কিন্তু বাস্তব রাজনীতি এত সোজাসাপটা নয়। একদিকে সংখ্যালঘু ভোট বাদ দিলে ৩০ শতাংশ ভোট তো হাতছাড়া হয়েই যায়, আবার অন্যদিকে সংখ্যাগুরু হিন্দু ভোটেও তৃণমূলের দখল বাড়তে থাকলে বিজেপির আসনসংখ্যা ৫০-এর ঘরেও নেমে যেতে পারে— এমন আশঙ্কা বিজেপির অন্দরেই ঘুরপাক খাচ্ছে।

আরও পড়ুন: Aajke | বিজেপির বাংলা দুঃস্বপ্ন: ২০২৬-এ কি আসন কমে হবে প-এ পঞ্চাশ?

তারই প্রতিক্রিয়ায় জন্ম নিয়েছে নতুন হিন্দুত্ব প্রজেক্ট: খাজা বনাম গজা। দিলীপ ঘোষ তো আবার এককাঠি সরেস। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, দিঘার গজা আর পুরীর খাজা দুটোই সমান। এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে একদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গড়া হিন্দু প্রতীককেও সামলে রাখলেন, অন্তত রাখার চেষ্টা করলেন, আবার অন্যদিকে পুরীর জগন্নাথকে সামনে এনে গেরুয়া ব্র্যান্ডের নিজের তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করলেন, ওনার এখন দু’ নৌকোতে পা। আপাতত আপনাকে আমাকে প্রসাদ খেয়েই বুঝতে হবে রাজনীতি, প্রশ্ন উঠবেই তুমি কোন রাজনৈতিক মতবাদে বিশ্বাস করো? খাজা না গজা? এই পুরো পরিস্থিতি বাংলা রাজনীতিকে এমন এক জায়গায় নিয়ে এসেছে, যেখানে মিষ্টির মধ্যেই চলছে ভোটের রসায়ন। তৃণমূল বলছে— মন্দির গড়েছি, হিন্দুদের সম্মান বাড়িয়েছি, গজা আমাদেরই দেওয়া। বিজেপি বলছে— হিন্দুত্ব মানে আমাদের বাপকেলে সম্পত্তি, আর সেই জন্যই আমরা খাজা বিলি করছি। অথচ এই রাজ্যেই গত এক দশকে বিজেপি রামনবমী, হনুমান জয়ন্তী, গরু রক্ষা, এনআরসি, এসব দিয়েই রাজনীতির বাজার গরম করেছে। তখন তারা রামমন্দিরের প্রসাদ তো দূর অস্ত, পুরীর খাজাও কোনওদিনই বিলি করেনি। তবে এটাও ঠিক, এই খাজা বিলি বা গজার রাজনীতি হালকা হাসির খোরাক হলেও, এর পিছনে রয়েছে গভীর রাজনৈতিক প্যাঁচপয়জার। বিজেপি বুঝে গেছে, শুধু মুসলিম বিরোধিতা দিয়ে বা ‘দাঙ্গার স্মৃতি’ টেনে এনে ভোট আদায় করা আর সহজ নয়। তৃণমূলও বুঝে গেছে হিন্দু ভোট সবটাই ওধারে চলে গেলে বিপদ আছে, তাই এখন পাল্টা হিন্দুত্বের জবাব দিচ্ছে উন্নয়ন দিয়ে, আর সেই উন্নয়নের প্রতীক হয়ে উঠেছে দিঘার জগন্নাথ মন্দির। ফলে বিজেপিকে হিন্দুত্বের লড়াইয়েও নতুন করে সাজতে হচ্ছে— আর তারই ফল হল এই ‘খাজা অভিযান’। আমরা আমাদের দর্শকদের জিজ্ঞেস করেছিলাম, তাঁরা এই খাজা-গজার লড়াইকে কোন চোখে দেখছেন? মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চে মন্ত্র পাঠ করেন, রথের রশি টানেন, তিনি জগন্নাথের মন্দির করেছেন, তার পিছনে রাজনীতি নিশ্চয়ই আছে, কিন্তু সেই চালে কি বিজেপি খানিকটা ব্যাকফুটে? শুনুন মানুষজন কী বলেছেন?

সব মিলিয়ে ২০২৬-এর নির্বাচনের আগে এই মিষ্টির লড়াইয়ে রাজনীতি পেয়েছে এক নতুন মেজাজ— মৌলবাদ নয়, এখনকার রাজনীতি যেন মিষ্টিবাদ। ভোটার এখন প্রশ্ন করছে— কে কতটা খাঁটি হিন্দু নয়, কে কতটা খাঁটি প্রসাদ দিতে পারে? আর এই রাজনীতির মজা এখানেই— যেখানে একদিকে ধর্মের নামে বিভাজনের রাজনীতি চলছে, আর অন্যদিকে সেই বিভাজনের হাতিয়ার হয়ে উঠছে চিনি, ময়দা আর ঘিয়ের তৈরি এক টুকরো মিষ্টি। ২০২৬-এর নির্বাচনের আগে বাংলার হাওয়া কোন দিকে বইবে তা এখনই বলা খুব কঠিন নয়। কিন্তু এটুকু নিশ্চিত, এবারকার ভোটে রণভূমি শুধু ময়দানে নয়, মিষ্টির দোকানেও বসছে। কারণ, রাজনীতিতে আপাতত এখন প্রশ্ন একটাই— আপনি খাজা খাবেন না গজা?

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Mamata Banerjee | Omar Abdullah | মমতা সাক্ষাতে কলকাতায় ওমর আবদুল্লাহ
03:04:16
Video thumbnail
Delhi Earthquake | ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল দিল্লি, রিখটার স্কেলে মাত্রা ৪.৪
02:44:45
Video thumbnail
Donald Trump | ব্রাজিলের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপালেন ক্রুদ্ধ ট্রাম্প
01:48:16
Video thumbnail
Nimisha Priya | ইয়েমেনে কেরলের নার্স নিমিশাকে সহায়তা করুক কেন্দ্র, আর্জি সুপ্রিম কোর্টে
01:31:16
Video thumbnail
Weather Update | জেলা জুড়ে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, পূর্ণিমার কোটালে উত্তাল থাকবে সমুদ্র
01:57:35
Video thumbnail
Bangla Bolche | Prasun Banerjee | আরজি কর তদন্তে কী করছে সিবিআই?
03:35
Video thumbnail
Bangla Bolche | আরজি কর কাণ্ডের নামে নবান্ন অভিযান, বিজেপিকে তুলো/ধনা সিপিএম-কংগ্রেসের
04:29
Video thumbnail
Bangla Bolche | Anirban Guha Thakurta | আরজি কর কাণ্ডে দোষী সঞ্জয় কি ছাড়া পাবে
04:03
Video thumbnail
Politics | নীচুতলার কর্মীদের নিয়ে শমীক এবার পড়বেন ঝাঁপিয়ে
04:58
Video thumbnail
Politics | আধার, রেশন কার্ডে ভোট পরামর্শে সুপ্রিম কোর্ট
05:55

Deprecated: Automatic conversion of false to array is deprecated in /var/www/ktv/wp-content/themes/techinfer-child/functions.php on line 39