নয়াদিল্লি: প্রয়াত ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং (Manmohan Singh)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। বৃহস্পতিবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে রাত আটটা নাগাদ দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (AIIMS)-এ এমারজেন্সিতে ভর্তি হন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। শ্বাসকষ্টজনিত কারণে এদিন তাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে তাঁকে আইসিইউয়ে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্ত শেষ রক্ষা হল না। না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন কংগ্রেসে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং।
দিল্লি এইমসের তরফে জানানো হয়েছে, বয়সজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার বাড়িতেই হঠাৎ সংজ্ঞা হারান তিনি। রাত ৮টা ৬ মিনিটে তাঁকে দিল্লি এমসের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। চিকিৎসক দলের সবরকম চেষ্টার পরেও তাঁকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। রাত ৯টা ৫১ মিনিটে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে জানিয়েছে দিল্লি এইমস।
মনমোহন পত্নী সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। এইমসে যান ওয়েনাড়ের কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। এইমসে যান বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন মনমোহন সিং। চলতি বছরের শুরুতে রাজ্যসভার সাংসদ পদের মেয়াদ শেষে রাজনৈতিক পথচলায় ইতি টানেন তিনি। টানা ৩৩ বছর রাজ্যসভার সাংসদ ছিলেন।
ভারতের একমাত্র শিখ প্রধানমন্ত্রী হলেন মনমোহন সিং। অর্থনীতির অধ্যাপক ছিলেন। ১৯৮২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৮৫ সালের ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরও ছিলেন। তারপর ১৯৯১ সালের জুনে পিভি নরসিং রাওয়ের মন্ত্রিসভায় অর্থমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। এর চারমাস পর রাজ্যসভার সাংসদ নির্বাচিত হন।
এককালে নরসিমহা রাও সরকারের অর্থমন্ত্রী ও পরবর্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী থাকা এই বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ বেশ কিছুদিন ধরেই রাজনৈতিক আঙিনার থেকে দূরে ছিলেন শারীরিক নানান কারণে। অর্থমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সাফল্য আজও চর্চিত হয় দেশে বিদেশে। দেশের অর্থমন্ত্রী হিসাবে একধিক পর পর অর্থনৈতিক সংস্কার আনেন মনমোহন সিং।
ইউপিএ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসাবেও বেশ কিছু অধ্যায় তাঁর সঙ্গে শুরু হয়। ইউপিএর ২ বারের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, দেশের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ৩৩ বছর রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন। রাজ্যসভার এই সাংসদ সদ্য রাজ্যসভা থেকে অবসর নিয়েছেন। উল্লেখ্য, রাজ্যসভার সদস্য হিসাবেই তাঁর রাজনৈতিক জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ যাত্রা শুরু হয়। ১৯৯১ সালে তিনি রাজ্যসভার সদস্য হন। ১৯৯৮ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত তিনি বিরোধী দলনেতা ছিলেন। ২০০৪ সালের ২২ মে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন। এই বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা পর পর ২ বার প্রধানমন্ত্রীর পদে ছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি ২০০৯ সালের ২২ মে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছিলেন।
অন্য খবর দেখুন: