কলকাতা: আরজি করের হাসপাতালের (RG Kar Hospital) প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে (Sandip Ghosh) স্বেচ্ছায় লম্বা ছুটিতে পাঠানোর নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) প্রধান বিচারপতি টিএস শিভগননমের। প্রধান বিচারপতি বলেন, বিকেল ৩টে পর্যন্ত সময় দিলাম। এর মধ্যেই অধ্যক্ষ স্বেচ্ছায় ছুটির আবেদন না করলে, আমি প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেব। সেই সঙ্গে এই ঘটনার প্রতিবাদে জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনকেও গুরুত্ব দিয়ে দেখছে আদালত। চিকিৎসকরা আন্দোলন যুক্তি সঙ্গত। তারা তাদের সহকর্মীকে হারিয়েছেন। তাই চিকিৎসকদের আবেগকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে, মন্তব্য প্রধান বিচারপতির।
মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতি টিএস শিভগননম (Chief Justice TS Shivagannam) এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি হয় আরজি করের মহিলা চিকিৎসক খুনের ঘটনার একাধিক জনস্বার্থ মামলার। শুনানিতে সন্দীপের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। শুনানিতে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য (Bikash Ranjan Bhattacharya) বলেন, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সোমবার সকালে জানিয়েছিলেন সরকারি চাকরি ছেড়ে দিচ্ছেন। সোমবার বিকেলেই অন্য কলেজের মাথায় তাঁকে বসানো হল। এরপরই প্রধান বিচারপতি জানতে চান প্রিন্সিপাল কোথায় ট্রান্সফার হয়েছেন। আবেদনকারীরা জানান ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ (National Medical College)। সন্দীপ ঘোষের আইনজীবীকে প্রধান বিচারপতি বলেন, কীভাবে একজন ইস্তফা দেওয়ার পর, ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তাঁকে ফেরত আনা হল? আপনি কি এত পাওয়ারফুল লোক? আপনি হাসপাতালের অভিভাবক। আপনার যদি নির্যাতিতার প্রতি সহানুভূতি না থাকে, তাহলে আর কার থাকবে? কোনও মানুষ আইনের উর্ধ্বে নয়। এই কথা শুনে ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি। তিনি বলেন, এভাবে তদন্ত এগোচ্ছে?
আরও পড়ুন: আদালতের দ্বারস্থ আরজি করে নিহত চিকিৎসকের পরিবার
প্রধান বিচারপতি এদিন সন্দীপ ঘোষের ইস্তফাপত্র ও নতুন নিয়োগপত্র দেখতে চেয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা দেখতে চাই, পদত্যাগ পত্রে কী লিখেছেন ওই প্রিন্সিপাল? বিচারপতি বলেন, সন্দীপ আরজি কর হাসপাতালের প্রধান, কেন তাঁর বয়ান রেকর্ড করা হয়নি। তাঁকে কেন বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে? কিছু তো মিসিং আছে। সন্দীপকে বলুন বিকেল ৩ টের মধ্যে লম্বা ছুটিতে যেতে।
আদালতে মৃত চিকিৎসকের পরিবারের দাবি, প্রথমে ফোন আসে। তারপরে জানানো হয় আত্মহত্যা করেছে। তিন ঘণ্টা ধরে হাসপাতালে দেহ রাখা হয়েছিল কিন্তু পরিবারের কাউকে সেই দেহ দেখতে দেওয়া হয়নি। আদালতের নজরদারিতে তদন্ত হোক, আবেদন পরিবারের। তদন্ত ঠিক পথে এগোচ্ছে না বলে আশঙ্কা পরিবারের। ঘটনার শুরু থেকে তথ্যে অসঙ্গতির অভিযোগ পরিবারের। এর প্রক্ষিতে আদলতকে রাজ্য সরকার জানায়, হাইকোর্ট চাইলে আমরা অল্প সময়ের মধ্যেই তদন্ত সংক্রান্ত রিপোর্ট সিল করা খামে আদালতে জমা করতে পারি। এর প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দেন, পরিবারের করা মামলার কপি ২ ঘণ্টার মধ্যে সব পক্ষকে দিতে হবে।
অন্য খবর দেখুন