নয়াদিল্লি: ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাজাবাসীকে (Gaza) এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিল ইজরায়েলি সেনাবাহিনী (IDF)। তারমধ্যে কেটে গিয়েছে ৮ ঘণ্টা। এরপর গাজায় স্থলপথে বাহিনী ঢুকবে বলে হুঁশিয়ারি ইজরায়েলের (Israel)। এই ঘটনাকে রাষ্ট্রসঙ্ঘ (UN) ‘বিধ্বংসী পরিণতি’ হতে পারে বলে বর্ণনা করেছে। যদিও হামাস (Hamas) বাহিনী এই হুমকিকে ভুয়ো প্রচার বলে ব্যাখ্যা করেছে। প্রসঙ্গত, মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানইয়াহুর বৈঠকের পরেই এই সিদ্ধান্তের কথা জানায় সেদেশের সেনা।
রাষ্ট্রসঙ্ঘ জানিয়েছে, উত্তর গাজা থেকে প্রায় ১১ লক্ষ বাসিন্দাকে দক্ষিণ প্রান্তে সরিয়ে নিয়ে যেতে বলেছে ইজরায়েলি বাহিনী। তার জন্য সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে মাত্র ২৪ ঘণ্টা। গাজা শহরে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে লুকিয়ে রয়েছে হামাস বাহিনী। ইজরায়েলি চর সংস্থার এই খবরের পরেই বিমান হামলার সঙ্গেই জল ও স্থলপথে আক্রমণের কৌশল সাজাচ্ছে সেনা। সে কারণে ব্যক্তিগত ও পরিবারের নিরাপত্তা চাইলে গাজাবাসীকে দক্ষিণ প্রান্তে সরে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ইজরায়েলি বাহিনীর তরফে।
আরও পড়ুন: অপারেশন অজয়ের প্রথম বিমান দেশে ফিরল
সেনাবাহিনী জানিয়েছে, হামাস আপনাদের মানববর্ম হিসেবে ব্যবহার করছে। ফলে নিজের মঙ্গল চাইলে গাজা শহর ছেড়ে চলে যান। এবার গাজা শহরে বিধ্বংসী অভিযান চালানো হবে। তাতে কোনও সাধারণ মানুষের হোক, তা আমরা চাই না, প্রতিরক্ষা বাহিনী থেকে এক বিবৃতিতে একথা জানানো হয়েছে।
রাষ্ট্রসঙ্ঘ এর জবাবে জানিয়েছে, রাতারাতি গাজার মানুষকে সরে যেতে হলে তা বিরাট ঝুঁকিপূর্ণ হবে। একটা বিপদ এড়াতে গিয়ে অন্য বিপদের মুখোমুখি হবেন তাঁরা। লক্ষ লক্ষ শিশু-মহিলাসহ বৃদ্ধবৃদ্ধাদের ঘর ছেড়ে অজানার উদ্দেশে পাড়ি দেওয়ার পরিণাম বিধ্বংসী হবে। শুধু তাই নয়, গাজায় রয়েছে রাষ্ট্রসঙ্ঘের কর্মীরাও। রাষ্ট্রসঙ্ঘের স্কুল এবং হাসপাতালেই রয়েছেন কয়েক হাজার নিরাশ্রয় মানুষ। তাঁদের সকলকে কী করে নিয়ে যাওয়া যাবে?
রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্যালেস্তিনীয় উদ্বাস্তু এজেন্সির উত্তর গাজার দায়িত্বপ্রাপ্ত এক অফিসার বলেন, এত কম সময়ে এত লোককে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া প্রায় অসম্ভব। মিশরের এক প্রবীণ রাজনীতিক বলেন, এটা আসলে প্যালেস্তিনীয়দের মিশরে ঢোকার মতলব ইজরায়েলের। তাহলেই প্যালেস্তাইন গঠনের স্বপ্নকে ওরা চিরতরে মুছে ফেলতে পারবে।
মিশরের আশঙ্কা দেশের আর্থিক মন্দার মধ্যে উদ্বাস্তুরা ঢুকে পড়তে পারে। কারণ ইজরায়েলের দেওয়া ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইতিমধ্যেই ৮ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের ওই আধিকারিক বলেন, চতুর্দিকে চিৎকার-কান্নাকাটি পড়ে গিয়েছে। উদ্বাস্তু শিবিরে যে যা পারছে ব্যাগে ভরে পালানোর চেষ্টা করছে। খাবার, বিদ্যুৎ, জ্বালানির কথা কারও মাথায় নেই। সকলেই ভাবছে এখান থেকে যে করেই হোক পালাতে হবে। নইলে প্রাণে মরতে হবে।
দেখুন অন্য় খবর