এক ঠগবাজ লুঠেরার হাতে আজ দেশ। ইতিমধ্যেই জেনে ফেলেছেন ইলেকশন বন্ডের বহু তথ্য। যে দল দেশের ৩৭.৮ শতাংশ ভোট পায়, সেই দল নির্বাচনী চাঁদার ৫০ শতাংশ একলাই পেয়েছে। এটাও পুরো হিসেব নয়, আরও হিসেব আসছে, এখনও বহু তথ্য আসা বাকি। আজ এই আলোচনায় আমরা এই নির্বাচনী বন্ড নিয়ে এক অন্য তথ্যের কথা বলব। ২০১৪ থেকে ক্ষমতায় আসার পরে আমাদের চৌকিদার বারবার বলেছেন না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গা। সেই থেকেই দেশে চলছে এক ইডি, সিবিআই রাজ, চারিদিকে রেড চলছে, ধরে ধরে জেলে পোরা হচ্ছে।
আমরা শুরু থেকেই বলেছিলাম, এ এক তোলাবাজির কায়দা, হয় ঘাড় ঝোঁকাও, কোটি কোটি টাকা দাও, বিরোধিতা বন্ধ করো, না হলে জেলে পচে মরো, এটাই করা হচ্ছে। যা যা বলছিলাম আজ তার সপক্ষে প্রমাণও হাজির। নির্বাচনী বন্ড মানে হল বিভিন্ন ব্যক্তি বা কোম্পানি বা সংস্থা রাজনৈতিক দলকে তার পরিচয় গোপন রেখে চাঁদা দেবে, এই তো? তো ধরুন আপনি রোজগার করেন ৩০ হাজার টাকা, আপনার পাড়ার পুজোতে কত টাকা চাঁদা দেন? ধরে নিলাম প্রচুর দেন, এক মাসের মাইনেই দিয়ে দেন, ১১ মাসের মাইনে দিয়ে বছর চালান। হতেই পারে। কিন্তু এখানে কিছু কোম্পানি বা সংস্থার নাম বেরিয়ে এসেছে, যারা তাদের লাভের চেয়ে বেশি, বহুগুণ টাকা ইলেকশন বন্ডে দান করেছে। ধরুন ইউ এম কেবলস তার কোম্পানির খাতায় দেখানো লাভের ২২৫০ গুণ ডোনেশন দিয়েছে। কুইক সাপ্লাই চেন প্রাইভেট লিমিটেড, যা নাকি মুকেশ আম্বানির রাজত্বে এক ছোট অংশ সেই কোম্পানি তার লাভের ৩৭৬ শতাংশ দান করেছে, নেক্সজ ডিভাইসেস প্রাইভেট লিমিটেড ১৮৭ গুণ, আশিস ফাইনান্স ৯২ শতাংশ, গুণ্রেণুকেশ্বর ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ফিনান্স লিমিটেড ৭৫ গুণ, রেণুকা ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ফিনান্স লিমিটেড তার লাভের ৭১ গুণ দান করেছে।
আরও পড়ুন: কারার ওই লৌহকপাট, ভেঙে ফেল কর রে লোপাট (পর্ব ২৩)
আচ্ছা, এদের কোম্পানির খাতায় তো তবু লাভ কিছু হলেও ছিল, ধরুন ভারতী এয়ারটেল ২০১৯–২০ থেকে ২০২২-২৩ পর্যন্ত লস করেছে ৬৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি। কিন্তু মজার কথা হল এরাও গণতন্ত্রকে বাঁচিয়ে রাখতে ১৯৮ কোটি টাকা দান করেছে। পি আর ডেভলপার-এর ক্ষতি ১১৩৯ কোটি টাকা, তাতে কী? তারা দিয়েছে ২০ কোটি টাকা। এরকম বহু তথ্য উঠে আসছে। ২৫টা এমন কোম্পানি আছে যাদের পেড আপ ক্যাপিটাল, ঘোষিত পুঁজি ৫ কোটি টাকা, কিন্তু তারা ২৫০ কোটি টাকা নির্বাচনী ফান্ডে দান করেছে। তথ্য সামনে আছে, একজনও জেলে? একজনও না। কিন্তু আদালত যাকে চিটিংবাজির দায়ে আজীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে, সেই পিনকন কোম্পানির মালিকের বয়ানের ভিত্তিতে আমাদের চ্যানেলের সম্পাদক আজও জেলে। কারণ খুব সোজা, তিনি ঘাড় ঝোঁকাননি, তিনি নির্বাচনী ফান্ডে টাকা দেননি। আমরা বিচার চাইছি, জাস্টিস ফর কলকাতা টিভি, জাস্টিস ফর কৌস্তুভ রায়।
দেখুন ভিডিও: