কলকাতা টিভির সম্পাদকীয় অনুষ্ঠান চতুর্থ স্তম্ভ খুলে দেখুন যা ইতিমধ্যে ১০০০ পর্ব পার করেছে। তার সিংহভাগে আমরা বার বার বলেছি যে এমন নয় যে কংগ্রেসের আমলে এমনকী নেহরুর আমলেও দুধের নদী বয়ে গেছে, বরং উল্টোটা। আমাদের দেশের গরিবস্য গরিবদের জন্য এক চুঁইয়ে পড়া অর্থব্যবস্থা তৈরি হয়েছে সেই কবে থেকেই। যে ব্যবস্থা বৈষম্য বাড়িয়েছে, এক অপার ধন সম্পত্তিশালী মিলিওনেয়ার বিলিওনেয়ারদের তৈরি করেছে, এবং সেই কাজ সবাই মিলেই করেছে, প্রত্যেকে।
ধীরুভাই আম্বানি থেকে রতন টাটা বা বিড়লা পরিবারের পাশে তো ছিলই সব রংয়ের সব দলের সরকার। কিন্তু বিজেপির সরকার তাদের চেয়ে আলাদা দুটো কারণে। প্রথমটা হল এই আরএসএস–বিজেপির এক হিন্দুরাষ্ট্রের ঘোষিত লক্ষ্য আছে, আজ নয়, চিরটাকালই আছে, তারা দেশের সংখ্যালঘুদের দেশের মধ্যে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক করে রাখতে চায়। দ্বিতীয়টা হল এই আরএসএস–বিজেপি আমাদের সংবিধানে বিশ্বাসই করে না। প্রত্যেকটা সাংবিধানিক কাঠামোকে এরা ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে এবং সেটা পরিকল্পনা মাফিক, ইয়েস দেয়ার ইজ আ প্ল্যান ইন দেয়ার ম্যাডনেস। আপনি ভাবছেন পাগলের মতো তারা সাংবিধানিক কাঠামোগুলোকে ভাঙছে নিজেদের কাজে লাগাচ্ছে, এটা পাগলামি নয়, এটা পরিকল্পনা। আর সেই পরিকল্পনা মাফিক তারা দেশের সবকটা ভিজিলেন্স এজেন্সিকে তাদের কাজে লাগাচ্ছে। তোলাবাজদের যেমন কিছু পোষা গুন্ডা থাকে, মাফিয়াদের যেমন কিছু গ্যাংস্টার শার্প শুটার বা সুপারি কিলার থাকে, ঠিক সেইভাবে তারা ইডি, সিবিআই, ইনকাম ট্যাক্স বা অন্যান্য ভিজিলেন্স এজেন্সিগুলোকে ব্যবহার করছে, লুকিয়ে নয়, প্রকাশ্যেই।
আরও পড়ুন: কারার ওই লৌহকপাট, ভেঙে ফেল কর রে লোপাট (পর্ব ২৪)
তিন ধরনের ব্যবস্থা, প্রথম হল ইডি-সিবিআই পাঠিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের ভয় দেখাও, দল ভাঙাও, সরকার ফেলে দাও, এমএলএ-এমপি কিনে নাও। দুই হল বিরোধীদের সমর্থনে বা সরকারের বিরুদ্ধে যে কোনও মতামতকে, তা সংবাদমাধ্যমের হতে পারে, কোনও ব্যক্তি হতে পারেন, তাদের থামাতে একই কায়দায় ইডি-সিবিআইয়ের মামলায় জড়িয়ে দাও, জেলে পোরো এবং বহুদিন জেলে থাকার পরে একটা সময়ে তো সেই মানুষটার ক্লান্তি আসবে, অসহায়তা বাড়বে, তখন তার ঘাড় নিচু করতে বাধ্য করো। আর তিন আরও বেয়াড়া লোকজনের জন্য, উমর খালিদ বা শরজিল ইমাম বা গৌতম নভলাখা, সোমা সেন বা জি সাইবাবাদের জন্য, দেশদ্রোহী বলে জেলে পুরে দাও। গোটা ভারতবর্ষকে এক কারাগারে রূপান্তরিত করে দেশের গণতান্ত্রিক সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ছিন্নভিন্ন করে তারা তাদের হিন্দুরাষ্ট্রের লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে। আর সেই গ্র্যান্ড পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবেই আমাদের সম্পাদককে জেলে পুরে রাখা হয়েছে। হ্যাঁ, জানি, ঘাড় নোয়ালেই, শুভেন্দুর কোলে চড়লেই মুক্তি অনিবার্য। কিন্তু তিনি লড়ছেন, বিচার চাইছেন। আমরাও বলছি জাস্টিস চাই, জাস্টিস ফর কলকাতা টিভি, জাস্টিস ফর কৌস্তুভ রায়।
দেখুন ভিডিও: