কলকাতা: চার মাসেই পুরো খেলা ঘুরে গেল। মহারাষ্ট্রে (Maharashtra Assembly Election) বিজেপি ঝড়। লোকসভা নির্বাচনে মহারাষ্ট্রে দাপট দেখিয়েছিল মহা বিকাশ আঘাড়ি। লোকসভা নির্বাচনের পর ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়াল বিজেপি। নির্বাচনের ফলাফল বলছে মহারাষ্ট্রে সব ছাপিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে ক্ষমতায় ফিরতে চলেছে বিজেপি। ফিগার বলছে ধরাশায়ী বিরোধী শিবির। কোনও অঘটন না ঘটলে এই ফলাফলে বদল হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। বলা যেতেই পারে বালা সাহেবের লিগ্যাসি হারালেন উদ্ধব।
মহারাষ্ট্রে বিধানসভা ভোটে বিপিল ভোটে এগিয়ে মহায়ুতি জোট এগিয়ে। বিজেপি নেতৃত্বাধীন মহায়ুতি জোট ২২৩টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। সরকার গঠনের সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ১৪৫টি আসন। অন্যদিকে, মহা বিকাশ আঘাড়ির বিরোধী জোট ৫৭টি আসনে এগিয়ে। নির্দল ২, অন্যান্য ৭টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। ভোটের ফলাফলে স্পষ্ট যে মারাঠাভুমের মা-বোনেরা ঢেলে ভোট দিয়েছেন। এই জয়ের গেমচেঞ্জার বাংলার লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের অনুকরণে অনুকরণে তৈরি ‘লাডকি বহিন’ (Ladki Bahin Yojana Maharashtra) প্রকল্প। এই প্রকল্পের হাত ধরে সাফল্য পেল এনডিএ। চারমাস আগেই লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর এনডিএ-মহা বিকাশ আঘাড়ির বিরোধী জোটের মানসিকতা দুরকমের ছিল। লোকসভার ধাক্কা খেয়ে ঘুরে দাঁড়াতেই ভরসা সেই মমতার প্রকল্প।
আরও পড়ুন: মমতার পথেই মহিলাদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে মহারাষ্ট্রে ‘নভেম্বর বিপ্লব’ এনডিএ-র?
তৃণমূলনেত্রীর দেখানো পথে হেঁটে লাডলি বহিন, টোল ট্যাক্সে ছাড়, ইলেকট্রিক বিলে ছাড়ের মতো খয়রাতি শুরু করে মহাজুটির সরকার। নির্বাচনী প্রচারে নেতারা ‘লাডকি বহিন’ প্রকল্প নিয়ে ঢালাও প্রচার করেছিলেন। ‘মুখ্যমন্ত্রী মাঝি লাডকি বহিন’ এই প্রকল্পের মাধ্যমে মারাঠাভূমের ২১ থেকে ৬৫ বছরের মহিলাদের মাসে দেড় হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। এই প্রকল্পের আওয়াত থাকা ২ হাজার ১০০ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল মহায়ুতি জোট। পিছিয়ে ছিল না মহাবিকাশ আগাড়িও। তারাও মহিলাদের মাসে ৩ হাজার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল নির্বাচনী ইস্তেহারে। রাজনৈতিক কারবারিরদের মতে মহারাষ্ট্রের এনডিএর জয়ের কারিগর লাডলি বহিন। নির্বাচনী সাফল্যের পর কতটা কার্যকরি হয় তা দেখার।
মহারাষ্ট্রে আরএসএস কোমর বেঁধে নেমেছিল। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মধ্যে নাগপুরের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ নীতিন গাদকারিকেই মহরাষ্ট্রের ভোটে প্রচারে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়। রাজনৈতিক কারবারিদের মতে, লোকসভা ভোটের যা ফলাফলের পর অতিরিক্ত আত্মতুষ্টিতে ভোগা বিরোধী শিবির ধরেই নিয়েছিল সেই রেজাল্টের পুনরাবৃত্তি হবে। যার জেরে তারা তৃণমূলস্তরে নজর দেয়নি। এছাড়াও লোকসভা নির্বাচনে দলিত-মারাঠা সমীকরণ কাজ করেছিল, সেই দলিত-মারাঠাদেরও কাজ করেনি। পাশাপাশি বিরোধীদের সেই দুর্বলতাকে হাতিয়ার করেছে অনডিএ জোট। মহারাষ্ট্রে দলিত ভোটারদের একত্রিত করতে ৬০ হাজারের বেশি কর্মসূচি নিয়েছিল বিজেপি-আরএসএস। যা জয়ের এক্স ফ্যাক্টর।
অন্য খবর দেখুন