skip to content
Tuesday, April 22, 2025
HomeCurrent Newsচতুর্থ স্তম্ভ: দেশ যাক চুলোর দোরে

চতুর্থ স্তম্ভ: দেশ যাক চুলোর দোরে

Follow Us :

আপনার ছেলে অসুস্থ? অ্যামবুল্যান্স ডাকতে হবে, অ্যামবুল্যান্স চাই তাড়াতাড়ি রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাবার জন্য, অ্যামবুল্যান্সের ওপরে জিএসটি ১০%, আপনার স্বজন মারা গেছেন, শ্মশানে নিয়ে যেতে হবে, শ্মশানের চুল্লির ওপর জিএসটি ১২%, রেমডিসিভির, এত দিনে জেনে গেছেন, জীবনদায়ী ওষুধ, জিএ টি ৫%, আরটিপিসিআর মেসিন, এই মূহূর্তে দরকার বেশি বেশি করে কোভিড টেস্ট, আরটিপিসিআর মেশিনের ওপরে জিএসটি ১৮%, হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ওপরে ৫%, মাস্ক ৫%, মোদীজি বার বার বলছেন, মাস্ক পহন না জরুরি হ্যায়, এই জন্য বলছেন না যে তাতে আপনার প্রাণ বাঁচবে, এই জন্য বলছেন যে মাস্ক বিক্রি হলে ওনার কাছে ৫% জিএসটি জমা হবে। এদিকে নন্দন নীলকার্ণী পেপার জমা দিয়েছেন, তাতে বলা হয়েছে জিএসটিতে ৭১ লক্ষ কোটি টাকা ফ্রড হয়েছে, ঘাপলা হয়েছে, ভুল সিস্টেমকে কাজে লাগিয়ে, মানে আপনি মাস্ক পরবেন, জিএসটি নেওয়া হবে, তারপর সেটা কোন ফাঁকে নীরব মোদীর ভাই ভাতিজার পকেটে ঢুকে যাবে বুঝতেই পারবেন না, কেবল জিএসটি? পুরো অর্থনীতিই এক সাংঘাতিক বেহাল অবস্থায় আছে, ইনফ্লেশন, মূল্যবৃদ্ধি গত ৫০ বছরে এই জায়গায় যায়নি, কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স গত এপ্রিলে ছিল ৪.২৯,  এপ্রিলে সেটা হয়েছে ৬.৩%। হোলসেল, মানে পাইকারি বাজারের প্রাইস ইন্ডেক্স এপ্রিলে ছিল ১০.৪৯, বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২.৯৪। কেবল খাবার, খাদ্যদ্রব্য এপ্রিলে ছিল ১.৯৬%, মে মাসে বেড়ে দাঁড়ালো ৫.০১%। মানে ৩% এর বেশি। একটু প্রোডাক্ট ধরে মূল্যবৃদ্ধিটা বুঝে নেওয়া যাক, তারপর বিষয়ে আসছি। মে মাসে ভোজ্য তেল বেড়েছে ৩০.৮৪%, হ্যাঁ ভুল বলছি না, এই বছরে ভোজ্য তেলের দাম বেড়েছে ৫০%, আদানি, গৌতম আদানির কোম্পানি প্রোডাক্ট ফরচুন তেল, ২০২০ এপ্রিলে দাম ছিল ১৩৫ টাকা, ২০২১ মে, দোকনে গিয়ে দেখুন, দাম ২১৫ টাকা, এক বছরে ৮০ টাকা দাম বেড়েছে, মাছ মাংস বেড়েছে ৯.০৩%, ডিম ১৫.১৬%, ফল ১১.৯৮%, ডাল ৯.৩৯%, মসলা ৬.৮৬%, নন অ্যালকোহলিক বেভারেজ ৫.১২%, স্বাস্থ্য সম্পর্কিত প্রোডাক্ট, ওষুধ, ব্যান্ডেজ ইত্যাদি ৮.৪৪%, যাতায়াত ১২.৩৮% আর জ্বালানী তেল ১১.৫৮%। মোদীজির আচ্ছে দিন? না কেবল মোদীজির নয়, কর্পোরেট প্রফিট গত চার বছরের তুলনায় সবচেয়ে বেশি, গ্রস ডমেস্টিক প্রোডাক্টের ২.৪% বেড়েছে, কেবল মে মাসে দেড় কোটি চাকরি চলে গেছে, বেকারত্ব স্বাধীনতার পরে সবথেকে বেশি, ইনফ্লেশন গত ৫০ বছরের মধ্যে সবথেকে বেশি, জিডিপি মাইনাস ৭.৩, স্বাধীনতার আগে পরে মিলিয়ে অল টাইম লো। নতুন তথ্য অনুযায়ী ৯০ কোটি মানুষ দরিদ্র, রোজগার দু ডলারের কম, মানে দিনে ১৫০ টাকার কম, ওদিকে আদানি ঘন্টায় ৭০ কোটি, আম্বানি ঘন্টায় ৯০ কোটি টাকা কামাচ্ছেন, আপনাদের মধ্যে যারা বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন, তাঁরা শুনেছিলেন, জেনেছিলেন, বিশ্বাস করেছিলেন, সবকা সাথ, সবকা বিকাস। প্রায় ৮৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গেছে, অ্যান্টিগুয়া থেকে রাহুল চোকসিকে ফেরত নেওয়া যায়নি, নীরব মোদী এখনও লন্ডনে। দু’জনেই নরেন্দ্র ভাই দামোদর দাস মোদীর ব্যক্তিগত পরিচিতের তালিকাতেই আছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমছে, আমাদের দেশে তেলের দাম বাড়ছে, এবং সেই দাম বাড়ানো থেকে ২০২০ -২০২১ এ ২ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকা রোজগার করেছেন, তা দিয়ে কী হবে? না গরীব মানুষদের চাল ডাল গম দেওয়া হবে, এই পেট্রোল ডিজেলের দাম বাড়ার ফলে সেই গরীব মানুষের পকেট থেকে, তার থেকেও বেশি টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে, তা দেখার সময় নেই কেন্দ্র সরকারের। কলকাতায় পেট্রোলের দামের ৩৩ টাকা কেন্দ্রে ট্যাক্স, রাজ্যের ট্যাক্স ১৮ টাকা। কোভিড সামলাতে রাজ্য খরচ করেছে ৬০০০ কোটি টাকা, কেন্দ্র দিয়েছে ২৭৯ কোটি আর স্বাস্থ্যখাতে আরও ১০০ কোটি টাকা, এক মাৎসন্যায় চলছে, সরকারের ঘরে টাকা যাচ্ছে, সরকার নতুন সংসদ ভবন, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের জন্য খরচ করছেন ২০ হাজার কোটি টাকা, প্রধানমন্ত্রীর জন্য স্পেশাল বিমান কেনা হচ্ছে ৮৭৫০ কোটি টাকায়, নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামের জন্য খরচ ৮০০ কোটি টাকা, অন্য দিকে এক দরিদ্র মানুষ, তার স্ত্রী আর দুটো সন্তানের আয় ১৫০ টাকা। সবকা সাথ সবকা বিকাশ!

আরও পড়ুন:চতুর্থ স্তম্ভ: খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি।

তৈরি হচ্ছে বিকাশ পুরুষ রামের মন্দির, খবর এল সেখানেও ঘাপলা, রামের নামেও টাকা কামাচ্ছে রামভক্তরা, সরকার চুপ, চোরে চোরে মাসতুতো ভাই!

দু কোটি টাকায় জমি কেনা হল, যারা কিনলেন তারা ঘন্টাখানেকের মধ্যে রামমন্দির ট্রাস্টকে ১৮ কোটি টাকায় সেটা বেচে দিলেন, মধ্যের ১৬ কোটি কে খেলো? কারা কারা খেলো? রাম মন্দির থেকে ভিস্তা প্রকল্প একই খেলা চলছে, আমাদের টাকায়, মানুষের টাকায়, কখনও দেশের নামে, কখনও ভগবানের নামে ফূর্তি ডট কম, মোচ্ছব চলছে। আর তার মধ্যে প্যান্ডেমিক, অতিমারির জন্য লকডাউন। সবচেয়ে গরীব মানুষদের ওপর সব থেকে বড় চোট, সবথেকে বড়লোকেরা আরও বড়লোক হবার সুযোগ পেয়ে যাচ্ছেন, তাকিয়ে দেখুন কর্পোরেট প্রফিট বাড়ছে, শেয়ার বাজার বাড়ছে, ফাটকা বাজারে জোয়ার, কিন্তু অর্থনীতি ধীরে ধীরে গভীর মন্দার দিকে এগোচ্ছে। এখন কী করণীয়? অর্থনীতি হল এক শরীর, টাকা হল তার রক্ত, টাকা যত ঘোরাফেরা করবে, তত অর্থনীতি সবল হবে, এটাই অর্থনীতির মূল সূত্র, থাম্ব রুল। কীভাবে? আসুন একটু বোঝা যাক। একটু আগেই বললাম যে দেশের কর্পোরেট প্রফিট বেড়েছে জিডিপির ২.৪%। মনেই হবে বেশ তো কর্পোরেট প্রফিট বেড়েছে, তাহলে ইনভেস্টমেন্টও বাড়বে, সেগুড়ে বালি। বাজারে চাহিদা নেই, মানে দোকানে গিয়ে মানুষ বলছে না যে আমাকে এটা দিন, ওটা দিন। এক্কেবারে যেটা না হলেই নয়, সেটা কেনার চেষ্টা করছেন মানুষজন। মধ্যবিত্তদের কাছে যেটুকু বেশি পয়সা রয়েছে তাঁরা আতঙ্কে খরচ করছেন না, মানে ১ লক্ষ টাকা রয়েছে, একটা গাড়ির জন্য ডাউন পেমেন্ট দেওয়াই যায়, তারপর মাসে মাসে কিস্তি, কিন্তু তখনই ভাবছেন, চাকরিটা থাকবে তো? দেখেছেন, পাশাপাশি বন্ধু বান্ধব আত্মীয় স্বাজনের চাকরি চলে যেতে, তাঁরা খরচ করছেন না। আর দরিদ্র মানুষ খরচ করছেন না। দেশের ১১০ কোটি মানুষের কাছে হয় খরচ করার পয়সা নেই, না হলে যেটুকু আছে, সেটা জমিয়ে রাখছেন, আগামী বিপদের কথা ভেবে। আচ্ছা এটা কি কেবল আমাদের দেশে হয়েছিল? না, সব দেশেই কমবেশি হয়েছিল, তাহলে তারা খানিকটা হলেও সামলালো কেমন করে? খুব সোজা উত্তর হল, এক্ষেত্রে সরকারের উচিত অনেকটা টাকা ওই গরীব মানুষদের হাতে দেওয়া, যাঁরা ওই টাকাটা পেলেই খরচ করবেন, তাঁরা খরচ করতে শুরু করলে ওই যে কর্পোরেট সেক্টরের লাভ, সেটা ইনভেস্ট করতে শুরু করবে, তাদের ইনভেস্টমেন্ট এলেই আবার কারখানা চালু, মধ্যবিত্তদের ইনক্রিমেন্ট বোনাস চালু, তাঁরা আবার বাড়ি, গাড়ি, বাইক স্কুটার, টিভি, ফ্রিজ কেনা শুরু করবে, আরও কারখানা বাড়বে, আন স্কিলড গরীবদের কাজ হবে, তাঁদের হাতেও আরও টাকা আসবে, দেখুন গোটা অর্থনীতি সচল, তার ধমনি শিরা দিয়ে বইছে টাকা টাকা টাকা। আর এখন যে অবস্থা চলছে, তাকে বলে স্ট্যাগফ্লেশন, জিডিপি নেমেছে, মানুষ প্রতি আয় কমেছে, হু হু করে বেড়েছে বেকারত্ব, সিএমআইআরের হিসেব অনুযায়ী, স্বাধীনতার পরে এতটা বেকারত্ব বাড়েনি আগে, এবং স্বাভাবিকভাবেই মূল্যবৃদ্ধি বাড়ছে, ডিজেল, পেট্রোলের দাম বাড়ানো হয়েছে, মূল্যবৃদ্ধি আরও বাড়ছে। ফলে অর্থনীতি ক্রমশ ধুঁকছে, যত ধুঁকছে তত আশঙ্কা বাড়ছে, পুঁজি নিবেশ কমছে, চাকরি কমছে।

আচ্ছা এই খবর আমাদের প্রধান দেশসেবক, চওকিদার, চায়ওয়ালা। আচ্ছে দিন লানেবালা জানেন না, না জানেন না। তিনি রামরাজ্য চান। এদিকে রামায়নে আজকের অর্থনীতি নিয়ে একটাও কথা নেই, ওখানে রামের বিরাট প্রাসাদ, রামের পাশে মন্ত্রী সান্ত্রী, পাত্র মিত্র, অমাত্যের দল, দূরে, বহু দূরে কোথাও প্রজারা জয়ধ্বনী করছে, আমাদের প্রধানমন্ত্রী সেটাই চান, প্রজারা জয়ধ্বনী দেবে, ওটাই তাদের কাজ, উনি প্রাসাদের অলিন্দে ঘুরে বেড়াবেন, হাত নাড়বেন, উনি হ্যাঁ বললে অমাত্য, পাত্র মিত্ররা হ্যাঁ হ্যাঁ বলবে, উনি চাইলে দান করবেন, না চাইলে গর্দান নেবেন। এক মধ্যযুগীয় চিন্তাভাবনার মানুষ, স্বাভাবিকভাবেই আধুনিক অর্থনীতির অ আ ক খ জানেন না, এবং প্রধান সমস্যা হল, সেই মানুষটি আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Mamata Banerjee | 'স্কুলে ফিরুন' চাকরিহারাদের মমতার বার্তা
00:00
Video thumbnail
Mamata Banerjee | 'এই গরমে কেন বসে আছেন? স্কুলে যানমাইনে পাবেন!' চাকরিহারাদের আর কী বললেন মমতা?
00:00
Video thumbnail
Mamata Banerjee | চাকরিহারাদের কী বার্তা মমতার?
00:00
Video thumbnail
Sharad Pawar | Ajit Pawar | শরদ ও অজিত পাওয়ারের একান্ত বৈঠক, কোন সমীকরণে মহারাষ্ট্রের রাজনীতি?
00:00
Video thumbnail
Gold Price Today | Gold Price Hike | সোনার দাম ১ লাখ টাকার বেশি, আর কত বাড়বে?
00:00
Video thumbnail
Bratya Basu | কত জন যোগ্য? জানিয়ে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী, দেখুন বড় আপডেট
00:00
Video thumbnail
Bratya Basu | Press Meet | SSC | সাংবাদির বৈঠকে বিরাট মন্তব‍্য শিক্ষামন্ত্রীর
00:00
Video thumbnail
Bratya Basu | Press Meet | SSC | সাংবাদিক বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী, দেখুন সরাসরি
00:00
Video thumbnail
Bratya Basu | কোর্ট বললেই তালিকা রিভিউ পিটিশন পর্যন্ত অপেক্ষা করার বার্তা শিক্ষামন্ত্রীর
02:17:06
Video thumbnail
Mamata Banerjee Speech | মেদিনীপুরে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠক, দেখুন সরাসরি
03:55:24