শিকড়ের টানে মার্কিন মুলুক থেকে বাংলা। সেই বাংলার টানে সুদূর আমেরিকা থেকে সাহায্য পাঠাতে চান প্রবাসী বাঙালি প্রদীপ কুমার ঘোষ। আমেরিকা থেকে ৩৫০টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর পাঠিয়েছেন তিনি। রহড়া রামকৃষ্ণ মিশনের কৃতী ছাত্র প্রদীপ কুমার ঘোষ। হাভার্ড থেকে অর্থনীতি নিয়ে পাশ করেছেন তিনি। তবে মার্কিন মুলুকে থাকলেও করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বাংলার মানুষের পাশে দাঁড়াতে চান তিনি।
ভারতের সঙ্গে নিজেকে প্রতি নিয়ত বেঁধে রাখতে চেয়েছেন প্রদীপ কুমার ঘোষ। স্ত্রীও বাঙালি। তিনি দক্ষিণ কলকাতার বিজয়গড়ের মেয়ে। বাংলার প্রতি তাই টানটা সবদিক থেকে। এই করোনা আবহে পশ্চিমবঙ্গের অনেক জায়গায় অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। অক্সিজেন না পেয়ে প্রাণ হারিয়েছেন বহু মানুষ। ফলে নিজের জন্মভূমির এই অক্সিজেন চাহিদা মেটাতে সাহায্যের হাত বাড়ালেন এই প্রবাসী বাঙালি। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরকে ৩৫০টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর পাঠিয়েছেন তিনি। তাঁর পাঠানো অক্সিজেন কনসেনট্রেটরগুলি থাকবে লালবাজার সহ থানাগুলিতে। এই ৩৫০টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটরের মধ্যে ৮০টি কনসেনট্রেটর তুলে দেওয়া হয় মন্ত্রী সুজিত বসু এবং বিধায়ক অদিতি মুন্সির হাতে, যাতে তাঁরা নিজেদের এলাকায় প্রয়োজনে অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারেন। রাজারহাট ও নিয়টাউন এলাকার ৩টি থানায় এই কন্সেন্ট্রেটর রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। একই সঙ্গে বেশ কিছু স্থানীয় বিধায়কদের সাহায্য করেছেন প্রদীপ কুমার ঘোষ।
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে রাজারহাট অঞ্চলের তৈরি হয়েছে ১০টি সেফ হোম। সেখানে এই অক্সিজেন কন্সেন্ট্রেটরের ব্যবস্থা করা হবে। প্রদীপ কুমার ঘোষের তৈরি ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ইনোভেশন অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউটে জনস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করছেন ১০০ জনের বেশি বৈজ্ঞানিক। আগে এই ইনস্টিটিউটে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গুর ওপর গবেষণা চালানো হত। এখন সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে করোনা। ফলে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গুর সঙ্গে কিভাবে করোনা নির্মূল করা সম্ভব, তা নিয়েও গবেষণা শুরু হয়েছে। এই ইনস্টিটিউটে কো-অর্ডিনেটর মুনমুন চক্রবর্তী জানিয়েছে, কলকাতা ছাড়াও এই অক্সিজেন কন্সেন্ট্রেটর তাঁরা রাজ্যের অন্যান্য জায়গা, বিশেষত প্রত্যন্ত অঞ্চলে পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন। তাঁদের ইনস্টিটিউটের তরফে রাজ্যের বিভিন্ন দফতরে এর আগেও বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করা হয়েছিল। আগামী দিনে আরও অন্যান্য সংস্থাকে তাঁরা এই রকম সাহায্য করতে চান বলে জানান মুনমুন চক্রবর্তী।