কলকাতাঃ আজ নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশনায় প্রশাসনিক বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়। আর সেই বৈঠকেই উপস্থিত হন বীরভূমের বাঘ অনুব্রত মণ্ডল। পুরো বৈঠকের দিকে যেমন নজর ছিল, ঠিক তেমনই নজর ছিল মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কী কথোপকথন হয় সবে মাত্র তিহার থেকে ফেরা অনুব্রতর সঙ্গে সেদিকেই নজর ছিল সবার।
কিন্তু সরাসরি অনুব্রতর সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়নি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বরং কানে কানে কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী তাঁর অতি ঘনিষ্ঠ কেষ্টর সঙ্গে। তৃণমূলের কর্মসমিতির বৈঠকের মধ্যেই হঠাৎই অনুব্রতকে কাছে ডাকেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুনঃ এবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন মামলা হতে চলেছে নতুন এজলাসে
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে কর্ম সমিতির বৈঠকে অনুব্রত মণ্ডল ডাক পাওয়ার পারই তিনি সাংবাদিকদের করা প্রশ্নে বলেন, ‘ দিদি ডেকেছে ভাই তো যাবেই, ভালোই লাগছে আমন্ত্রণ পেয়ে’। আর সেই বৈঠকেই এবার মুখ্যমন্ত্রী কানে কানে কথা বললেন বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে।
কিন্তু কানে কানে কী কথা হল অনুব্রতর মণ্ডলের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর?
বৈঠক শুরু হওয়ার পর থেকেই সকলের নজর ছিল অনুব্রত মণ্ডলের দিকে। গরু পাচার মামলায় দেড় বছরের বেশি সময় ধরে সিবিআই এবং ইডির দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার করা হয় বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। আর তারপর থেকেই প্রশ্ন উঠতে আরম্ভ করে তাহলে কি কাজল শেখই হতে চলেছে বীরভূমের পরবর্তী জেলা সভাপতি। কিন্তু সেইসব জল্পনাকে নস্যাৎ করে মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন জেলে থাকলেও অনুব্রতই জেলা সভাপতি পদে বহাল থাকবে। তার পরিবর্তে গঠন করা হয় ৬ সদস্যের সিট, যার মাথা ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। জেলার দায়িত্ব সামলানোর জন্য কাজল শেখকে দেওয়া হয় জেলা সভাধিপতির পদ। অনুব্রত তিহার থেকে ছাড়া পেয়ে বীরভূমে ফেরার পরই কোর কমিটির সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়া হয় ৬ থেকে ৭। যা থেকে অনুমান তিহার থেকে ছাড়া পাওয়ার পরই অনুব্রত মণ্ডলকে বীরভূমের কোর-কমিটিতে জায়গা দেওয়া হয়। আর আজ এই বৈঠকে সকলের নজর ছিল বীরভূম জেলা নিয়ে কি বার্তা দিতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী কেষ্টকে? কিন্তু দেখা গেল বৈঠক শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ আগেই মুখ্যমন্ত্রী কাছে ডেকে নেন অনুব্রত মণ্ডলকে এবং কানে কানে কিছু কথা বলেন। তবে কী কথা কানে কানে বললেন তা এখনও অবধি জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ অনুব্রত তা স্পষ্ট বহু ক্ষেত্রেই। অনুব্রত মণ্ডল যখন দোষী সাব্যস্ত হন গরু পাচার মামলায় তখন মুখ্যমন্ত্রী সমস্ত বৈঠক থেকে শুরু করে সভায় স্পষ্টত দাবি করেন অনুব্রত মণ্ডলকে ফাঁসানো হচ্ছে। যদিও এই ভাব দেখা যায়নি অন্য কোন নেতার ক্ষেত্রে। যেমন শিক্ষা দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পরই দল থেকে বহিষ্কার করা হয় তাঁকে, পাশাপাশি দলের পক্ষ থেকে সাফ জানানও হয় দল কোনভাবেই দোষীদের বরদাস্থ করবেনা। কিন্তু সেই রূপ দেখা যায়নি অনুব্রতের ক্ষেত্রে।
আর এবার প্রশ্ন উঠছে কানে কানে কোন গপন কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী অনুব্রতকে? নাকি জেলা সংক্রান্ত বিষয়ে দিলেন কোন পরামর্শ? সেদিকেই এখন নজর সবার।
দেখুন অন্য খবর