হাবড়া: এ এক আজব পাঠশালা। বিভিন্ন বয়সের মানুষ মাঠে বসে পাঠ নিচ্ছেন। কথায় আছে না, শেখার কোনও বয়স নেই। তাই পাক ধরা চুলেও অভিজ্ঞতার সঙ্গে বিজ্ঞানের মিশেলে আধুনিক চাষের পাঠশালা বসেছে ধানখেতেই।
তাঁদের বয়স হয়েছে, তবু বইখাতা নিয়ে সেই পাঠশালায় ছুটছেন সকলেই। একেবারে স্কুল জীবনের মতো নিয়মিত শিক্ষার পাঠ নিতে বেশ আগ্রহী সকলেই। এই পাঠশালার পড়ুয়াদের এমন উৎসাহ দেখে খুশিতে ডগমগ শিক্ষকরাও। এই কৃষি পাঠশালার সকল পড়ুয়ারাই কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত। আর শিক্ষকরা হলেন কৃষিবিজ্ঞানী ও কৃষি আধিকারিক।
আরও পড়ুন:Bankura Maoist Poster: ‘এবার TMC নেতাদের সঙ্গে খেলব’, বাঁকুড়ায় উদ্ধার মাওবাদী পোস্টার
সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে ২৫ থেকে ৭০ বছর বয়সি কৃষকরা চলে আসেন গ্রামের এই কৃষি পাঠশালায়। এই পাঠশালার মাধ্যমে কৃষকের ভবিষ্যৎ গড়ে দিতে বিজ্ঞানভিত্তিক চাষাবাদ বোঝানোর দায়িত্ব নিয়েছেন আধিকারিকরা।
কৃষি বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস, এখানে শিক্ষা নিলেই কৃষিকাজে মনোবল বাড়বে প্রতিটি কৃষকের। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাবড়া ১ নম্বর ব্লকের ইছাপুর গ্রামে এমনই স্কুল বসছে। রাজ্য কৃষি দফতরের আতমা প্রকল্পের উদ্যোগে ২৫ জন কৃষককে নিয়ে ইছাপুর গ্রামে শুরু কৃষি পাঠশালা। বিজ্ঞানভিত্তিক উপায়ে কীভাবে চাষ করলে বাড়বে ফলন, এরই পাঠ শেখানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: Weather Update: কলকাতায় আরও বাড়ল তাপমাত্রা, তাপপ্রবাহের সতর্কতা আবহাওয়া দফতরের
কৃষক আব্দুল কাদের মোল্লা জানান, এতদিন পর্যন্ত জমিতে রোগপোকার আক্রমণ হলে সারের দোকানদারদের উপর ভরসা করতে হতো, এখন কৃষি আধিকারিকরা প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। ফলে আমাদের সুবিধা হচ্ছে। আর এক কৃষক আলাউদ্দিন মণ্ডল বলেন, এখন আমরা রোগপোকা চিনতে পারছি। কোন ফসলের কখন সার দেওয়া দরকার সেটা জানতে পারছি। কোন সময়ে কী ধরনের চাষ করা উচিত ? মরশুম অনুযায়ী বিকল্প কী চাষ করে অধিক মুনাফা ঘরে তোলা যাবে?
শুধু তাই নয় আতমা প্রকল্পের উদ্যোগে প্রযুক্তিগতভাবে মেশিনের সাহায্যে ধান রোয়ার পদ্ধতি অধিক পরিমাণে ফসল ঘরে তুলতে সাহায্য করেছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। এ ব্যাপারে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন হাবড়া ১ নম্বর ব্লকের কৃষি সহঅধিকর্তা কুসুমকমল মজুমদার। তাঁর কথায়, এই কৃষি পাঠশালাই একদিন বদলে দেবে কৃষি জগৎকে। কৃষিতে লাভ নেই, এই কারণ দেখিয়ে যাঁরা বিকল্প রোজগারের আশায় পা বাড়াচ্ছেন, তাঁরাও ফের ফিরবেন মাঠে।