দুর্গাপুর : বসানো হয়েছিল হৃদযন্ত্র।কিন্তু, তা নাকি বুক ফুঁড়ে বেরিয়ে এসেছে (Durgapur Pacemaker Allegations)। এমনই অভিযোগ দুর্গাপুরের (Durgapur) একটি বেসরকারি হাসপাতালের (Durgapur Hospital) বিরুদ্ধে। আর যে অভিযোগ ঘিরে রীতিমতো উত্তাল হাসপাতাল। দেখানো হয় বিক্ষোভ ।
হৃদরোগের সমস্যা । বছর ছয়েক আগে পেসমেকার লাগানো হয়েছিল কাশীনাথ চৌধুরীর শরীরে। এত দিন ভালই ছিলেন । গত বছরের শেষের দিকে কিছু সমস্যা দেখা দেয় । কার্ডিয়্যাক রিসিঙ্ক্রোনাইজ়েশন থেরাপি ডিভাইস (সিআরটি-ডি) তাঁর বুকে বসাতে হয়। আর তাতেই বিপত্তি। অভিযোগ, সুস্থ হওয়া তো দূর, সেই যন্ত্র এখন কাশীনাথের বুকের চামড়া ফুঁড়ে বেরিয়ে এসেছে। ক্রমশই অবনতি হচ্ছে বছর তিয়াত্তরের বৃদ্ধের শারীরিক অবস্থার। এই পরিস্থিতিতে যে বেসরকারি হাসপাতালে সিআরটি-ডি বসানো হয়েছিল । অভিযোগ, তারা হাত তুলে নিয়েছে । হাসপাতালের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী-সহ জেলা ও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ এনেছে বৃদ্ধের পরিবার ।

বছর ছয়েক আদের কথা । অসুস্থ হওয়ার পরে কাশীনাথকে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । সেখানে চিকিৎসক অর্ণব ঘোষচৌধুরীর তত্ত্বাবধানে তাঁর চিকিৎসা হচ্ছিল। চিকিৎকের দাবি, “আমাদের তরফে কোনও গাফিলতি হয়নি । পেসমেকার বসানো ছিল । সেটির ব্যাটারি ঠিক ভাবে কাজ করছিল না। পরে সেটি সচল রাখতে একটি সিআরটি-ডি লাগানো হয়। সাবধানে চলাফেরা-সহ নির্দিষ্ট কিছু নিয়মের মধ্যে থাকতে বলা হয়েছিল ।”
আরও পড়ুন Bankura Independent Candidate: সোনামুখীতে তৃণমূল-নির্দল হাতাহাতিতে উত্তেজনা
চিকিৎকের অভিযোগ, কাশীনাথবাবু সে কথা শোনেননি। শারীরিক পরিশ্রম করেছেন । হাসপাতাল থেকে ছুটির পরে সময় মতো চিকিৎসা করাতেও আসেননি। ফলে সমস্যা হয়েছে । এখন ওঁর যা পরিস্থিতি তাতে এখানে আর চিকিৎসা করা সম্ভব নয়। বাইরে কোনও ভাল হাসপাতালে দেখাতে বলা হয়েছে। কাশীনাথের পরিবারের দায়ের করা অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক মহম্মদ ইউনুস বলেন, ‘আমি অভিযোগ পেয়েছি। ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথাও হয়েছে । রোগীর এই অবস্থা কী ভাবে হল এবং রোগীকে কী ভাবে সুস্থ করা যায়, তা জানাতে বলেছি।’
স্টিল টাউনশিপের এ-জোন অঞ্চলের বাসিন্দা, দুর্গাপুর স্টিল প্লান্টের প্রাক্তন কর্মী কাশীনাথের শরীরে পেসমেকার বসে ২০১৬ সালে । কলকাতার একটি হাসপাতাল থেকে পেসমেকার বসানোর পরে মোটামুটি ভালই ছিলেন তিনি। গত বছর ডিসেম্বরে ফের হার্টের সমস্যা শুরু হয়। একটি বেসরকারি হাসপাতালে গেলে চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে ৬ ডিসেম্বর ভর্তি হন। ৯ তারিখ অস্ত্রোপচার করে বুকে একটি সিআরটি-ডি বসানো হয়। ১৩ তারিখ হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁকে । অস্ত্রোপচারের সেলাই কাটার পরে সমস্যা শুরু হয়। তাঁর ছেলে লক্ষ্মণ চৌধুরী বলেন, ‘সেলাই কাটার পর ছোট একটি ফুটো লক্ষ্য করি। সেখান দিয়ে মেশিনটা দেখা যাচ্ছিল। ডাক্তারকে বলা হয়েছিল। বলেছিলেন, ড্রেসিং করলে ঠিক হয়ে যাবে। পরে ওই জায়গায় ইনফেকশন হয়ে যায়। ক্রমশ ফুটো বড় হয়ে মেশিনটা বেরিয়ে আসে। এখন বাবার শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ।’ পরিবারের দাবি, বেসরকারি হাসপাতালে ৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা খরচ করে চিকিৎসা করানো হয়। এখন হাসপাতালে কর্তৃপক্ষ আর কোনও দায় নিতে চাইছেন না। বলছেন, অন্য কোনও হাসপাতালে নিয়ে যেতে ।