মালদহ: গাছে পাকা আম (Mango) থই থই করছে। বাগান ম ম করছে পাকা আমের ঘ্রাণে। ফলের রাজা আমের ভরা বাজারে খাঁখাঁ করছে খদ্দের। কম দামেও বিক্রি হচ্ছে না। এবার ব্যাপক ফলন হওয়ায় খুশিতে ভরে উঠেছিল আম চাষীর মন। ঝড়ে আম পড়ে গিয়েছে। তারপরও যা আছে তা নেওয়ার লোক হচ্ছে না। দাঁড়িপাল্লায় মেপে ৪ টাকা, ৫ টাকা কেজি দিলেও নেওয়ার কেউ নেই। তাই মাথায় হাত চাষীদের। ফলে বাগানের আম সেখানেই নষ্ট হচ্ছে। এই ঘটনা মালদহের। সেখানকার আম চাষীরা জানিয়েছেন, কালবৈশাখী ঝড়ের পরেও আমের দাম পাচ্ছেন না চাষীরা। কম দামে বিক্রি করলেও আম কেনার লোক নেই। বাকিতে আম বিক্রি করতে হচ্ছে। সেই টাকা আদৌ ঘরে উঠবে কি না সঠিক ভাবে বোঝা যাচ্ছে না।
মালদহ ম্যাঙ্গো মার্চেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি উজ্জ্বল সাহা জানালেন, কেন্দ্রীয় সরকার যদি বিদেশে আম পাঠানোর ব্যবস্থা না করে তবে আম চাষীরা টাকা ঘরে তুলতে পারবেন না। রাজ্যের উদ্যোগে দিল্লি, কলকাতা, এবং মালদহে আমের মেলা হতে চলেছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার যদি না এগিয়ে আসে তবে রেকর্ড আমের ফলনের পরেও চাষীরা লাভের মুখ দেখতে পাবেন না। আম চাষীদের বক্তব্য, এবার বৃষ্টির অভাব ছিল তাই আমের আকৃতি অনেক ছোটো থেকে গিয়েছে। সবে আম উঠতে আরম্ভ করেছে। এখনই যদি পাঁচ, ছয় টাকা প্রতি কেজি দরে আম বিক্রি করতে হয়, তবে সাত-দশ দিন পরে চাহিদার তুলনায় যোগান বেশী হলে দাম আরও কমে যাবে। অন্য রাজ্যে আম পাঠাতে গাড়ি ভাড়ার খচর উঠছে না। তাই জলের দামে আম বাগানেই বিক্রি করে করে দিতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: Fourth Pillar | মোদিজির স্ত্রী অনুপস্থিত কেন?
মালদহ জেলাতে প্রায় ৩২ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়। প্রায় ৪০টি প্রজাতির আম পাওয়া যায় মালদহ জেলাজুড়ে। এর মধ্যে সব থেকে বেশী ফলন হয় লক্ষণ ভোগ, হিমসাগর, ল্যাংড়া, ফজলি, আম্রপালী, মল্লিকা, দুধকুমার, রাখালভোগ, গোপালভোগ, আরাজন্মা, আশ্বিনা, জিলেপিখাঁড়া, বৃন্দাবনী আমের। রাজ্যের ৭০ ভাগ আম উৎপাদন হয় মালদহ জেলাতে। এই বছর ৪ লক্ষ মেট্রিকটন আম উৎপাদন হওয়ার কথা। এই রেকর্ড ফলনের পরেও আমচাষীরা বাইরের বাজারে আম পাঠাতে পারছেন না। পরিকাঠামো নেই বলে জেলাতে আম সংরক্ষণও করা যাচ্ছে না। ফলে গাছ থেকে ধারে পাকা আম বিলিয়ে দিতে হচ্ছে।