গোসাবা: এলাকা উন্নয়নের তহবিলের টাকায় বিলাসবহুল স্পিডবোট কিনে বিতর্কে জড়ালেন গোসাবার তৃণমূল বিধায়ক। অভিযোগ, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে বিধায়ক তহবিলের টাকা দিয়ে ২০ আসন বিশিষ্ট একটি স্পীড বোট কিনেছেন বিধায়ক সুব্রত মণ্ডল। যা নিয়ে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
রাজ্যের প্রতিটি বিধায়ক নিজের নিজের এলাকায় উন্নয়নের জন্য বছরে ৬০ লক্ষ টাকা পেয়ে থাকেন। গোসাবার বিধায়ক সুব্রত মণ্ডলও ২০২১-২২ অর্থবর্ষে সেই টাকা পেয়েছেন। কিন্তু সেই টাকা এলাকার উন্নয়নের কাজে না লাগিয়ে তাঁর সিংহভাগ দিয়েই ২০ আসন বিশিষ্ট একটি বিলাশবহুল স্পিডবোট কিনেছেন। এলাকার বাসিন্দারা জানান, এমনিতেই গোসাবা ব্লক দ্বীপ বেষ্টিত। প্রায় প্রতিবছর নানা ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়তে হয় এলাকার বাসিন্দাদের। আর সেই কারণে এলাকার বহু রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে জেটিঘাটের বেহাল দশা। এছাড়াও এই ব্লকের সাধারণ মানুষ পানীয় জলের সমস্যায় দীর্ঘদিন ধরেই ভুগছেন। কোনও উন্নয়ন হয়নি বলেও দাবি করেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: Durgapur | দুর্গাপুরে সপরিবারে রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় ধৃত মা, মাসতুতো ভাই-সহ ধৃত ৩
তাঁদের আরও অবিযওগ, এলাকায় গভীর নলকূপের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। সর্বপরি এই ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার নদীবাঁধের বেহাল দশা। অনেক সময়ই সামান্য পূর্ণিমা বা অমাবস্যার ভরা কটালে নদীবাঁধ ভেঙে গ্রাম জলমগ্ন হয়ে যায়। যে এলাকায় সাধারণ মানুষের এত সমস্যা, এতকিছু প্রয়োজন, সেখানে এলাকা উন্নয়নের তহবিল থেকে এলাকার উন্নয়ন না করে স্পীডবোট কেনার যুক্তি কী, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। ক্যালকাটা স্পোর্টসবোট ম্যানুফ্যাকচারিং প্রাইভেট লিমিটেড এই স্পীড বোটটি তৈরি করেছে। দুটি এসি রয়েছে এতে। এছাড়াও ভিতরে রয়েছে সোফাসেট ও টেবিল। দ্রুত একদ্বীপ থেকে আরেক দ্বীপে পৌঁছতে পুলিশ বা বন দফতর এই এলাকায় যে স্পীডবোট ব্যবহার করে, তার তুলনায় এটি অনেক বেশি অত্যাধুনিক।
এই বিতর্কের মাঝে এলাকার সাধারণ মানুষ থেকে বিরোধী দলের লোকজন ছাড়াও খোদ তৃণমূলের লোকেরাও এই প্রশ্ন তুলেছেন। যদিও বিধায়ক যুক্তি, এই স্পীড বোটে গোসাবার দ্বীপাঞ্চল থেকে প্রসূতি মায়েদের এই স্পীডবোটে করে আনা হবে। এটা কার্যত একটা অ্যাম্বুল্যান্স হিসেবে ব্যবহার করা হবে। এছাড়াও ভিআইপিরা সুন্দরবনে এলে এই স্পীড বোটে বিভিন্ন দ্বীপে যাতায়াত করতে পারবেন। বিধায়কের এই যুক্তিকে অবশ্য হাস্যকর বলেই দাবি করেছে সকলে। তাঁদের দাবি, দেড় বছর আগে সুন্দরবনের মানুষের জন্য সুন্দরবন উন্নয়ন দফতরের তরফে একটি ওয়াটার অ্যাম্বল্যান্স চালু করা হয়েছিল। কিন্তু তার জ্বালানী খরচ যোগানো সম্ভব না হওয়ায় সেটি বন্ধ হয়ে যায়। আর এই স্পীড বোট চালাতে আরও অনেক বেশি জ্বালানী খরচ প্রয়োজন হবে। সেক্ষেত্রে এই স্পীড বোট চালানোর মত জ্বালানী খরচ কে যোগাবে, তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।
শেয়ার করুন