পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও বালুরঘাট: আদিবাসী সংগঠনের ডাকা ১২ ঘন্টা বাংলা বনধ পুরোপুরি ব্যর্থ হল পুরুলিয়ায়। রাজ্য সরকার ও পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে ১২ ঘণ্টার বাংলা বনধের ডাক আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের। শহর পুরুলিয়ার বাসস্ট্যান্ড থেকে অন্যান্য দিনের মতোই সরকারি ও বেসরকারি বাস চলাচল শুরু করে। জেলার বেশ কয়েকটি জায়গায় আন্দোলনকারীরা পথ অবরোধে শামিল হন। পুরুলিয়া জেলার লালপুর মোড়ে ৬০এ জাতীয় সড়ক অবরোধ আদিবাসীদের। জাতীয় সড়কের উপর ইতিমধ্যেই দাঁড়িয়ে পড়েছে বেশ কিছু যানবাহন। তাদের মূল অভিযোগ, অন্য একটি আদিবাসী সংগঠনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ সেই সংগঠনটি হুরা থানার মোড় জঙ্গলপুর গ্রামে প্রায় ১০০টি আদিবাসী পরিবারকে সামাজিক বয়কট করে রেখেছে প্রায় ৩ বছর ধরে। বারবার প্রশাসনকে জানানো সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। রাজ্য সরকারের পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে এই বনধ বলে দাবি আন্দোলনকারীদের।
আরও পড়ুন: Opposition | Nitish Kumar | বিরোধী ঐক্যে শান দিতে সোমবার মুখোমুখি নীতীশ-খাড়্গে
আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের ডাকা ১২ ঘণ্টার বাংলা বনধে বাস চলাচল ও বাজার-দোকানে প্রভাব পড়ল পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলমহলের চন্দ্রকোনা রোড এলাকায়। সোমবার সকাল থেকে জেলার অন্যান্য প্রান্তে বেসরকারি বাসের যাত্রী পরিষেবা স্বাভাবিক থাকলেও পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা রোড, গোয়ালতোড় অর্থাৎ জঙ্গলমহল হিসেবে পরিচিত বেশ কিছু এলাকায় বেসরকারি বাস চলাচলে প্রভাব পড়েছে। তবে দোকান-বাজারে মিশ্র প্রভাব পড়েছে। খোলা আছে বেশ কিছু প্রান্তে। বেসরকারি যান চলাচল ওই প্রান্তে বন্ধ থাকার কারণে যাত্রীরা পড়েছেন মহা সমস্যায়। সরকারি বাস দেখা যায়নি রাস্তায়। আদিবাসীদের স্বীকৃতি দেওয়া চলবে না, সামাজিকভাবে যে সমস্ত আদিবাসী পরিবারগুলি বহিষ্কৃত তাদের ন্যায়বিচার, এমন নানান দাবি নিয়ে আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের তরফে ডাকা হয়েছে বাংলা বনধ। এর প্রভাবে খড়্গপুর-রানিগঞ্জ রোড, গোয়ালতোড়-ঘাটাল রোডে যান চলাচলে যথেষ্ট প্রভাব পড়েছে।
আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের ডাকা ১২ ঘণ্টার বাংলা বনধে বাস চলাচলে প্রভাব পড়ল বাঁকুড়ার জঙ্গলমহল এলাকায়। সোমবার সকাল থেকে জেলার অন্যান্য প্রান্তে বেসরকারি বাসের যাত্রী পরিষেবা স্বাভাবিক থাকলেও বাঁকুড়ার দক্ষিণ প্রান্তে অর্থাৎ জঙ্গলমহল হিসেবে পরিচিত রানিবাঁধ, রাইপুর,সারেঙ্গা, ঝিলিমিলি, ফুলকুসমা, রাইপুর সহ বেশ কিছু এলাকায় বেসরকারি বাস চলাচলে প্রভাব পড়েছে। তবে দোকান-বাজার সব প্রান্তে খোলা রয়েছে। ওই এলাকায় হাতে গোনা সরকারি বাস দেখা গিয়েছে রাস্তায়।
বালুরঘাটে দন্ডি কাণ্ডের মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবির পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় বেশ কিছু আদিবাসী পরিবারের সাংবিধানিক ন্যায়ের দাবির পাশাপাশি পুলিশ ও সরকারের প্রতিবাদে ডাকা বাংলা বনধে এখনও পর্যন্ত দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় মিশ্র প্রভাব লক্ষ্য করা গিয়েছে। বনধ সফল করতে সকাল থেকেই তৎপর আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযান। রাজ্যের অন্যান্য জেলার পাশাপাশি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট সহ অনান্য ব্লকে ও এদিন সকাল ছয়টা থেকে বনধ পালিত হচ্ছে। বনধের কারণে বালুরঘাট বাস স্ট্যান্ড থেকে কোনও বেসরকারি বাস চলাচল করছে না। এদিকে সরকারি বাসস্ট্যান্ডে বাস দাঁড়িয়ে থাকলেও সেভাবে দেখা নেই যাত্রীদের। একটি-দুটি সরকারি বাস রাস্তায় বের হলেও সেগুলিকে হিলি মোড়ে আটকে দেন আন্দোলনকারীরা। এদিকে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বালুরঘাট শহর জুড়ে বিশাল পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সপ্তাহের প্রথম দিনে আচমকা এই বনধের ফলে বিপাকে পড়েছেন পথে সাধারণ মানুষ।
শেয়ার করুন