নয়াদিল্লি: ভারতের রাষ্ট্রপতির পদকে একটুকরো স্মারকচিহ্নে পরিণত করেছে বিজেপি-আরএসএসের সরকার। রাহুল গান্ধী, মিম প্রধান আসাউদ্দিন ওয়েইসি, তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় এবং সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজাসহ বহু বিরোধী নেতার আপত্তির পর এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির 'কর্তৃত্ববাদী' রাজনীতির নিন্দা করলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে। আগামী রবিবার নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে আমন্ত্রণ না জানানোয় বিরোধীদের আক্রমণের গিলোটিনে পড়েছে বিজেপি সরকার। এর আগে সংসদ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের অনুষ্ঠানেও তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে ছেঁটে মোদিই তা করেছিলেন। এবারেও একই ধারা বজায় রাখায় সোমবার খাড়্গে তুলোধনা করেন মোদি সরকারকে।
মল্লিকার্জুনের মতে, কেন্দ্রীয় সরকার রাষ্ট্রপতিকে আমন্ত্রণ না জানিয়ে তাঁকে অপমান করেছে। রাষ্ট্রপতির পদকে স্মারক হিসেবে রেখে দিয়েছে বিজেপি। ভোটের স্বার্থে দলিত এবং আদিবাসী রাষ্ট্রপতি করেছিল মোদি সরকার। কিন্তু, বারংবার এই পদমর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করেছে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং সাংবিধানিক সম্মান বজায় রাখার প্রতি ভারত সরকার দায়বদ্ধ থাকলে সংসদের নতুন ভবনের উদ্বোধন করা উচিত রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর, টুইটে লিখেছেন খাড়্গে। কারণ দেশের শীর্ষ আইনসভার সর্বোচ্চ পদটি হল রাষ্ট্রপতির। খাড়্গে আরও বলেছেন, ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিনেও তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে আমন্ত্রণ জানায়নি এই সরকার। এবার নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনেও রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে আমন্ত্রণ করা হয়নি।
আরও পড়ুন: Abhishek Case in Supreme Court | শীর্ষ আদালতে অভিষেক মামলার শুনানি শুক্রবার
খাড়্গে বলেন, ভারতে রাষ্ট্রপতির পদটি শীর্ষ। তিনি সরকারের প্রতিভূ। তাঁকে দেশের প্রথম নাগরিক বলা হয়। ফলে তিনি উদ্বোধন করলেই বোঝা যাবে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও সাংবিধানিক মান্যতার বিষয়ে সরকার দায়বদ্ধ। প্রসঙ্গত, আগামী রবিবার বীর সাভারকরের জন্মদিনে নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সাড়ে ৬৪ হাজার বর্গমিটার এলাকায় ত্রিকোণাকৃতি চারতলা বাড়িটি গড়ে উঠেছে। কিন্তু, উদ্বোধন নিয়েই বিতর্কের মুখে প্রধানমন্ত্রী মোদি। বিতর্কের কারণ হল, অধিকাংশ বিরোধী দলনেতার মতে, প্রধানমন্ত্রী হলেন সরকারের প্রধান, কিন্তু আইনসভার প্রধান নন।
এর আগে গত সপ্তাহে রাহুল গান্ধী টুইটে বলেছিলেন, রাষ্ট্রপতিকে দিয়ে নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করানো উচিত। প্রধানমন্ত্রীর নয়। ওয়েইসি প্রশ্ন তোলেন, লোকসভার স্পিকার কিংবা রাজ্যসভার চেয়ারপার্সন জগদীপ ধনখড়, যিনি দেশের উপরাষ্ট্রপতি, তাঁরা কেন উদ্বোধন করতে পারবেন না। প্রধানমন্ত্রীই কেন সংসদের উদ্বোধন করবেন? তিনি প্রশাসনিক মাথা হতে পারেন, আইনসভার তো নয়! এটা সরকারি টাকায় তৈরি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর আচার-ব্যবহার দেখে মনে হচ্ছে তাঁর বন্ধুদের ব্যক্তিগত টাকায় এটা তৈরি হয়েছে।
শেয়ার করুন