কলকাতা: ত্রিপুরার ব্যান্ড অ্যাম্বাসাডর সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly)। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, বেশ কিছু দিন আগে উত্তর-পূর্ব রাজ্যে গিয়েছিলেন মহারাজ। ত্রিপুরার পর্যটনকে বাড়ানোর লক্ষ্যে সে রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরীর সঙ্গে দেখাও করেন সৌরভ। বেশ কয়েক দিন আগেই সৌরভকে রাজ্যের পর্যটন দপ্তরের শুভেচ্ছা দূত হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল ত্রিপুরা সরকার (Tripura)। তারপর বিষয়টি আলোচনা স্তরেই ছিল, কিন্তু মঙ্গলবার বিকেলে ত্রিপুরা সরকারকে সবুজ সঙ্কেত দেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। এই খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জানিয়েছেন খোদ ত্রিপুরার পর্যটন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। মঙ্গলবার সৌরভের (Sourav Ganguly) বেহালার বাড়িতে এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন ত্রিপুরার পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। তাঁকে উত্তরীয় দিয়ে এবং মা ত্রিপুরেশ্বরীর প্রতিকৃতি দিয়ে অভিনন্দন জ্ঞাপন করা হয়। আর এই ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই ফের সৌরভের রাজনীতিতে আসা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে বিজেপিশাসিত উত্তর পূর্বের রাজ্যে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হওয়ায় ফের একবার সৌরভের বিজেপিতে (BJP) যোগ দেওয়ার জল্পনা নতুন করে শুরু হয়েছে।
তবে এই জল্পনার মাঝেই কলকাতা টিভি অনলাইন-কে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় জানালেন, 'পর্যটন দফতরের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর খবর সত্যি, তবে এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।'
আরও পড়ুন: ১০ বছরের বকেয়া, KKR-কে টাকা মেটাতে বলল কলকাতা পুরসভা
এদিন ত্রিপুরার পর্যটন মন্ত্রী ফেসবুকে সৌরভ সাক্ষাতের ছবি পোস্ট করে লেখেন, আমাদের ত্রিপুরা রাজ্যের পর্যটনকে সারা বিশ্বের সামনে তোলে ধরার জন্য প্রয়োজন এর বহুল প্রচার ও সঠিক ব্রান্ডিং এবং এর জন্য আমাদের দরকার এমন একজন জনপ্রিয় ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর যাঁকে সারা বিশ্ব চেনে! ত্রিপুরার পর্যটনকে সারা বিশ্বের সামনে তোলে ধরতে আমাদের সবার প্রিয় দাদা ভারতের ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলীর চেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব আর কে হতে পারে?! তাঁর সংযোজন, এই পরিকল্পনা ও ভাবনার অঙ্গ হিসেবে আজ কলকাতায় ভারতের ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী দাদা'র বেহালাস্থিত বাড়ীতে উনার সাথে সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎকারের পাশাপাশি এই সংক্রান্ত বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় আলোচনার জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হই। খুবই সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে গঠনমূলক দীর্ঘ আলোচনায় ত্রিপুরার পর্যটনের বিকাশের সাথে সম্পৃক্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়। আমি আশাবাদী দাদা শত ব্যস্ততার মধ্যেও আমাদের আবেদনে সাড়া দেবেন এবং খুব শীঘ্রই সৌরভ গাঙ্গুলী দাদা'র সাথে আজকের বৈঠকের ইতিবাচক ফলাফল আমরা পেয়ে যাবো!
উল্লেখ্য, সৌরভের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগাতে চাইছে বিজেপি শাসিত ত্রিপুরা সরকার। ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে বিসিসিআই (BCCI)-এর প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত হন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। তারপর থেকেই বিজেপি-র সঙ্গে সৌরভের সমীকরণ নিয়ে নানা কথা বারবার উঠে এসেছ। এমনকী ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে সৌরভের বেহালার বাড়িতে নৈশভোজ সারেন খোদ অমিত শাহ। কিন্তু তখন বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জল্পনা নস্যাৎ করে দেন খোদ সৌরভ। এরপর হার্টের সমস্যা নিয়ে হাসপাতেল ভর্তি হলে তখনও একাধিকবার তাঁর শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন শাহ। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে জল্পনা উঠে ছিল রাজনীতিতে যোগ দিতে চলেছে সৌরভ। পরে ধীরে ধীরে বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার খবরও থিতিয়ে যায়। পরে দুর্গাপুজোর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্তিতে রেড রোডে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঠিক পাশেই দেখা যায় সৌরভকে।
তবে এদিনের ঘটনা পুরোপুরি অবাক করার মতো, কারণ সৌরভের রাজনীতি-যোগের জল্পনা উঠলেও তার থেকেই বরাবরই তিনি দূরেই থেকেছেন। এদিনের বিজেপি শাসিত ত্রিপুরা সরকারের ব্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হয়ে কিছু কী ইঙ্গিত করলেন মহারাজ?
শেয়ার করুন