কলকাতা: আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ, খুনের ঘটনায় (RG Kar Incident) গোটা দেশে। কলকাতা সহ পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি জেলায় জেলায় চলছে প্রতিবাদ, আন্দোলন। শহর, জেলা, রাজ্যের গণ্ডি পার করে আন্দোলন পৌঁছেছে জাতীয় স্তরে। মহিলা চিকিৎসক-পড়ুয়ার উপরে নারকীয় অত্যাচার ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদে দফায় দফায় চলছে প্রতিবাদ।
সঠিক বিচারের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন টলিপাড়ার অনেকেই। দফায় দফায় পথে নেমেছেন বিনোদন জগতের তারকারা। এবার আর্টিস ফোরামের পক্ষ থেকে টালিগঞ্জে কিশোর কুমার মূর্তির পার্শ্বদেশে অনুষ্ঠিত হল এক প্রতিবাদ সভা। সেখানেই উপস্থিত ছিলেন, অভিনেতা দেব, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, আবির চট্টোপাধ্যায়, রঞ্জিত মল্লিক, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, পাওলি দাম, গৌরব-ঋধিমা সহ টলিপাড়ার একরাশ তারকা। প্রতিবাদ সভার মঞ্চ থেকেই আরজি কর কাণ্ড নিয়ে এই প্রথম সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন অভিনেতা দেব।
আরও পড়ুন: …প্রতিবাদ যেন না থামে! আরজি কর নিয়ে প্রতিবাদী পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
আরজি কর কাণ্ডের পর কেবলমাত্র খাদানের টিজার মুক্তি স্থগিত রাখা ছাড়া সেভাবে কোনও প্রতিবাদী সুর শোনা যায়নি অভিনেতা দেবের কণ্ঠে। বিদেশে থাকার কারণে মুখোমুখি হননি কোনও সংবাদমাধ্যমেরও। আর সেই নিয়েই নানান সমালোচনার শিকার হয়েছেন অভিনেতা। শাসক দলের প্রতিনিধি বলেই কি চুপ? উঠেছে সেই প্রশ্নও। এর মাঝেই গত বুধবার হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়েন দেবের বাবা। হার্টে ব্লকেজ দেখা গিয়েছে তাঁর। তবে অসুস্থ বাবাকে সামলেই শনিবার আর জি কর কাণ্ড নিয়ে আর্টিস ফোরামের প্রতিবাদ মঞ্চে সামিল হলেন দেব (Dev)। আর সেখান থেকেই কড়া ভাষায় জানিয়ে দিলেন, “ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই”।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দেব বলেছেন, “তদন্তের ভার রয়েছে ভারতবর্ষের সেরা সংস্থার হাতে। সিবিআই-এর উপর ভরসা আমাদের করতেই হবে। কলকাতা পুলিশের হাতে এক সময় তদন্তের দায়িত্ব ছিল কিন্তু তারা দু’দিনের বেশি সময় পায়নি। এখন সিবিআইকে প্রয়োজনীয় সময়টুকু দিতেই হবে। আমরা চাই দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি হোক। শুধু তাই নয় যারা দোষীদের আড়াল করবার চেষ্টা করছে তাদেরও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।” আর জি করের পাশাপাশি দেবের গলায় উঠে আসে সারা দেশে ঘটে যাওয়া অজস্র নারী নির্যাতনের কথা। তিনি বলেন, “শুধু কি আরজি কর? গত ১৪ দিনে সারা দেশে একের পর এক ধর্ষণ ঘটে গিয়েছে। দেশ জুড়ে এত প্রতিবাদ চলছে তবু কারও মনে কোনও ভয় নে। কিছুই করতে পারছি না আমরা। এই সময় আমাদের সকলকে একসঙ্গে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।” তিনি উল্লেখ করেন, সারাদেশে ধর্ষকের একটাই শাস্তি, মৃত্যুদণ্ড।
আরজি কর প্রসঙ্গে কথা বলতে বলতেই অভিনেতার কথায় উঠে আসে হাথরাস, আশারাম বাপু, রামরহিমের কথা। উঠে আসে বিলকিস বানুর ধর্ষণ প্রসঙ্গ। তিনি প্রশ্ন করেন, “কী করে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরও সংশোধনাগারের বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে এরা? কেন ছাড় দেওয়া হচ্ছে শাস্তির ক্ষেত্রে? যে কেন্দ্র সরকার রাতারাতি নোটবন্দি করেছিল, ৩৭০ ধারা বিলোপ করেছিল তাদের কাছে আবেদন, ধর্ষকের যত শীঘ্র সম্ভব শাস্তি দিন। আমি কোনও রাজনৈতিক কথা বলতে চাই না। কিন্তু এ কথা না বললেই নয়। যতদিন না, পুরুষ ভয় পাবে কোনও মহিলার দিকে কু-নজরে তাকাতে, ততদিন এই কদর্যতা রোখা যাবে না।” স্কুল শিক্ষায় সচেতনতা তৈরির বিষয়েও মত প্রকাশ করে দেব বলেন, শুধু মেয়েদের নয়, ছোট ছোট ছেলেদেরও শেখাতে হবে কোন স্পর্শ ভালো, কোন স্পর্শ খারাপ। সব শিক্ষা, সব সহবৎ মেয়েদের জন্য নয়। যেকোনও জায়গায় মহিলারা শ্লীলতাহানির শিকার হন। কড়া শাস্তির ব্যবস্থা না করলে এ থেকে মুক্তি নেই বলেই মত অভিনেতা দেবের।
দেখুন বিস্তারিত খবর