Placeholder canvas

Placeholder canvas
HomeCurrent Newsচতুর্থ স্তম্ভ: অগ্নিপথ আর অগ্নিবীরদের নিয়ে আরও কিছু কথা

চতুর্থ স্তম্ভ: অগ্নিপথ আর অগ্নিবীরদের নিয়ে আরও কিছু কথা

Follow Us :

ভয় নেই
আমি এমন ব্যবস্থা করবো যাতে সেনাবাহিনী
গোলাপের গুচ্ছ কাঁধে নিয়ে
মার্চপাস্ট করে চলে যাবে
এবং স্যালুট করবে
কেবল তোমাকে প্রিয়তমা।
ভয় নেই, আমি এমন ব্যবস্থা করবো
বন-বাদাড় ডিঙ্গিয়ে
কাঁটা-তার, ব্যারিকেড পার হয়ে, অনেক রণাঙ্গনের স্মৃতি নিয়ে
আর্মার্ড-কারগুলো এসে দাঁড়াবে
ভায়োলিন বোঝাই করে
কেবল তোমার দোরগোড়ায় প্রিয়তমা।

ভয় নেই, আমি এমন ব্যবস্থা করবো-
বি-৫২ আর মিগ-২১গুলো
মাথার ওপর গোঁ-গোঁ করবে
ভয় নেই, আমি এমন ব্যবস্থা করবো
চকোলেট, টফি আর লজেন্সগুলো
প্যারাট্রুপারদের মতো ঝরে পড়বে
কেবল তোমার উঠোনে প্রিয়তমা।
ভয় নেই…আমি এমন ব্যবস্থা করবো
শহীদ কাদরির লেখা কবিতা, যা পরে কবির সুমন গেয়েছিলেন। কবি কল্পনা করেছেন সেই দিন, যেদিন সব যুদ্ধ থেমে যাবে, রণক্ষেত্র ছেয়ে যাবে ঘাসে, ট্যাংকের ওপরে করবে খেলা শিশুরা। সেদিনের কল্পনায় সেনা এসে হাজির হবে গোলাপের তোড়া হাতে নিয়ে। বা ইমাজিন, জন লেননের ইমাজিন, ইমাজিন দেয়ার ইজ নো কন্ট্রিজ,ইট ইজন্ট হার্ড টু ডু, নথিং টু কিল অর ডাই ফর, অ্যান্ড নো রিলিজিওন টু, ইমাজিন অল দ্য পিপল লিভিং লাইফ ইন পিস, আপনি বলবেন তো? ইউটপিয়া, অলীক স্বপ্ন? লেনন ও জানতেন, বলেছিলেন হ্যাঁ, স্বপ্ন কিন্তু এ স্বপ্ন উনি একা দেখছেন না, আপনি, আপনি বা আপনিও কোনওদিন এই স্বপ্ন দেখতে শুরু করবেন, কিন্তু এখনও এরকম হয় নি, হয়নি বলেই আমাদের দেশের খাদ্য, স্বাস্থ, শিক্ষা, বাসস্থান সব মিলিয়ে যত বাজেট, তারচেয়েও বেশি বাজেট বরাদ্দ সৈন্যবাহিনীর জন্য, আকাশ, জল আর স্থলে কড়া মিলিটারি পোশাক, তাদের রকমারি মারণাস্ত্র, যার প্রত্যেকটার ডগায় লেখাই আছে ধ্বংশ, প্রায় ১৩ লক্ষ সামরিক পোশাক পরা মানুষের জন্য, এবং তার অনেকগুণ বেশি সেই সব মানুষ, যারা একদিন ছিলেন সৈনিক, এখন হয়তো চাকরি করছেন, বা করছেন না, কিন্তু পেনশন পাচ্ছেন, সেই পেনশনের জন্য, সবমিলিয়ে খরচ বাজেটের প্রায় ১৬%। খরচ করতে হবে, কারণ ওপাসে চীন, এপাসে পাকিস্থান। এ উত্তেজনা থামানোর কোনও কার্যকরী প্রয়াস? এদেশ, ওদেশ সবদেশের নেতারাই বলবেন, আমি তো চেষ্টা করছি, কিন্তু উনি করছেন না। শেষ হাসি হাসছে পৃথিবীর অস্ত্র ব্যবসায়ীরা, অস্ত্র ব্যবসার দালালেরা, যারা কিনছে তারা, যারা বিক্রি করছে তারা, লক্ষ কোটি টাকার ব্যবসা, এক লপ্তে কত মানুষ মারা যায়, তার ব্যবসা। পৃথিবীতে মানুষই নাকি একমাত্র বিচক্ষণ সভ্য প্রাণী, হায় রে। দেখেছেন নাকি বাঘ, সিংহকে? খাবার বেচে পিস্তল কিনতে? মানুষ পারে, বিচক্ষণ সভ্য মানুষ। তো যাই হোক, বাস্তবতা হল, আমাদের সেনাবাহিনী রাখতে হবে। এবং সেনাবাহিনীর খরচ, নতুন মারণাস্ত্র কেনার খরচ যোগাতে হবে, অভুক্ত শিশুর কান্নার পাশেই থাকবে রাফায়েল এর গর্জন, ঢাকা পড়ে যাবে কান্না। এদিকে এটাও বাস্তব যে সেনাবাহিনীর খরচের কমবেশি ৫০% চলে যাচ্ছে কেবল মাইনে আর পেনশন দিতে, নতুন টেকনোলজি, মানে নতুন মারণাস্ত্র কেনার পয়সা জুটছে না, কাজেই সেটা নিয়ে ভাবতে হবে, মোদ্দা কথা হল মাইনে আর পেনশনের ভার কমাতেই হবে, আর কোনও কারণ নেই, একমাত্র এইজন্যই আনা হয়েছে অগ্নিপথ। আর একটা কারণ বলা হচ্ছে যে, সেনাবাহিনীর গড় বয়স কমাতে হবে, কেন? কারণ তাহলেই সেনাবাহিনী টগবগ ঘোড়ার মত ছুটবে? কিন্তু একটা কথা বুঝুন, এখন তো যুদ্ধের আগে আক্রমনননন বা হামলাআআআআ বলে চিতকার করে ছোটাছুটি হয় না, সে তো কুরুক্ষেত্রে কি পানিপথে হয়েছিল, এখন সবটা ই রিমোট কন্ট্রোল, বা ঐ সুইচ টিপে যুদ্ধ, অনেক দুর থেকে, তাহলে সবাইকে খামোখা ছুটতে হবে কেন? বরং এক্সপিয়েন্স চাই, অভিজ্ঞতা, ট্রেনিং। ধরুন অগ্নিবীর একজন এলেন, তাকে ৬ মাসের বেসিক ট্রেনিং দেওয়া হল, আমার এক সামরিক অফিসার বন্ধু বললেন, বেসিক ট্রেনিং মানে রোজ সাত সকালে উঠে মাঠে হাজিরা দেওয়া, তারপর ছোটা, বিভিন্ন ব্যারিয়ার টপকে ছোটা, ক্রল করা, কখনও কখনও একদিনে ১৪/১৮ কিলমিটার হাঁটা, লং জাম্প, হাই জাম্প, এবং খানিক আর্মস বেসিক ট্রেনিং, বেসিক ট্রেনিং শেষ, অগ্নিবীরের হাতে রইল সাড়ে তিন বছর। এবারে সে কোথায় যাবে? কোন ট্রেডে? ইলেক্ট্রিক, কার্পেন্ট্রি, কনস্ট্রাকশন, কমপিউটার, গানার, ড্রাইভার, হাজারো ট্রেড আছে। এবার তার ট্রেনিং শুরু, মিনিমাম ৬ মাস তো বটেই। হাতে তিন বছর। এবার পোস্টিং, হাতে কলমে শেখা, বোঝা, খানিক হলেও ধারণা পাওয়া, কেটে যাবে হু হু করে আরও একটা বছর। রইল বাকি এক। যার পরে ৪ জনের তিন জন কে বাড়ি যেতে হবে, বাকি ১ জন সেনাবাহিনীর সাধারণ ফৌজ এ ১৫ বছরের জন্য যোগ দেবে, লাভটা কী? এবার আপনি বলতেই পারেন ক্ষতিটা কী? এই বাংলা থেকে সেনাবাহিনীতে মানুষ জন যোগ দেয় বটে, তবে তা নিয়ে কোনও ব্যাকুলতা নেই, একটা চাকরি দরকার, সেনাবাহিনীর চাকরিতে আইনে ভাল, সুযোগ সুবিধে আছে, তাই। বাংলায় ফৌজি হব, যুদ্ধু করবো, এসব আকাংখা নেই বললেই চলে, কারণ বাঙালি ছোট্ট বেলাতেই শিখেছে, ওরে হাল্লা রাজার সেনা, তোরা যুদ্ধ কোরে করবি কি তা বল, মিথ্যে অস্ত্র শস্ত্র ধরে প্রাণটা কেন যায় বেঘোরে, রাজ্যে রাজ্যে পরস্পরে দন্দ্বে অমঙ্গল, তোরা যুদ্ধ করে করবি কি তা বল? কিন্তু উত্তরাখন্ড, হিমচল, হরিয়ানা, ইউপি, বিহার, রাজস্থান, এম পি, এখানে ম্যাঁয় ফৌজি হুঁ, মেরে পিতা ফৌজি হ্যাঁয়, এসব বলার মধ্যে এক গর্ব আছে, রিটায়ার্ড সিপাহি, ইউনিফর্ম পরে বিয়েবাড়িতে খেতে যায়, হ্যাঁ এটাই চলন। ছেলে ফৌজি, পাত্রির বাবা মা রা লাইন দিয়ে হাজির। শহীদ ফৌজির বাবা? তাঁর সন্মানই আলাদা। মাইনে ভাল? হ্যাঁ ভাল। সুযোগ সুবিধে ভালো? হ্যাঁ ভালো, কিন্তু এই যে ফৌজি পরিচয়, ঐ যে ইউনিফর্ম, সে এক বিরাট ব্যাপার এই রাজ্যগুলোতে, এবং খেয়াল করে দেখুন এই সব রাজ্যেই মারমুখি বিক্ষোভ চলছে, এখানেই ট্রেনে আগুন লাগানো হচ্ছে, বাস জ্বালানো হচ্ছে। ৪ বছর পরে ইউনিফর্ম নেই? এটাই সব চেয়ে বড় সমস্যা, চাকরি নয়, চাকরি নয়, ফৌজির পরিচয় কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, সেখানেই সবচেয়ে বড় সমস্যা। এবং আরেক বাস্তব সমস্যা হল তারা করবে কী? হাতে ১১ লক্ষ টাকা? ২০২৬ এ? কী হবে তা দিয়ে? এবার নতুন ফিরিস্তি আসতে শুরু করেছে, সেন্ট্রাল আর্মড পুলিশ ফোর্স এ সংরক্ষণ থাকবে, সি আর পি এফ, সি এ পি এফ এদের ট্রেনিং আর সৈন্যবাহিনীর ট্রেনিং এর তফাৎটা কোথায়? সবথেকে বড় তফাৎ হল সৈন্যবাহিনীকে শত্রু, দেশের শত্রুর সঙ্গে লড়াই করতে শেখানো হয়, বুলস আই, মাথা লক্ষ করে গুলি, মারো কিম্বা মরো, দেশের ভেতরে আর্মড ফোর্স কে সেই ট্রেনিং দেওয়া হয় না, দেবার কথাও না, এবার এমনও নয় যে সেনাবাহিনীতে ১৫/১৮ বছর চাকরি করেছে, সি আর পি এফ এ কোথাও আর্মস টেনিং, কোথাও অ্যামুনেশন প্রকিওরমেন্ট ইত্যাদির মত চাকরি করবে, এরা ২১/২৩ বছরের যুবক, ট্রেনিং মাথা লক্ষ করে গুলি চালানোর, কী হতে চলেছে ভাবুন? নতুন ফিরিস্তি দিলেন আনন্দ মহিন্দ্রা, বললেন তাঁর কোম্পানিতে এইসব ডিসিপ্লিন্ড অগ্নীবীরদের চাকরি দেবেন, বলার পরেই প্রশ্ন, বেশ তো, সে তো চার বছর পরে, আগে বলুন আপনি রিটায়ার্ড ফৌজিদের কজন কে চাকরি দিয়েছেন? ব্যস, মৌনিবাবা, আর কোনও কথা নেই, কিন্তু সরকারের সঙ্গে কাঁধ ঘসাঘসি করার জন্য আরও কয়েকজন শিল্পপতি একই কথা বললেন, কেবল এটা জানালেন না যে, আজ ওবদি তাঁরা কতজন রিটায়ার্ড ফৌজিকে চাকরি দিয়েছেন। মোদ্দা কথা হল, আসলে এই স্কিম আনা হয়েছে মাইনে আর পেনশনের ভার কমানোর জন্য, একাজ করা যেত, অন্যভাবেও করা যেত, সেনাবাহিনীকে ছোট করা যেত, যন্ত্রের যুগ, ধীরে ধীরে সৈন্য সংখ্যা কমানো যেত, সাধারণ নিয়োগ এর সঙ্গে একটা ছোট পাইলট প্রজেক্ট করা যেত, যারা সরাসরি সেনায় যেতে পারলেন না, তারা অগ্নিবীর হলেন, কিছুদিন পর এর ফলাফল বোঝা যেত, কিন্তু না এই সরকার সবটাই চমকে ধমকে করানোর পক্ষপাতি, হঠাৎ নোটবন্দী, হঠাৎ জি এস টি, হঠাৎ অগ্নিপথ। বেকার ছেলেদের চাকরি চাই, যে কোনও চাকরি, এই চারবছরেরও মাইনে নিতে লাইন পড়বেই শেষমেষ, কিন্তু এ এক বিষবৃক্ষ পোঁতা হল, এর ফল বোঝা যাবে ৪ বছর পর থেকে, দেরি হয়ে যাবে, খুব দেরি হয়ে যাবে।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
ধর্মযুদ্ধে মুখোমুখি | দিল্লিতে মোদি থাকবে না: অলোকেশ দাস
09:46
Video thumbnail
আমার শহর (Amar Sahar) | মাটির গর্ত থেকেই পানীয় জল সংগ্রহ গ্রামবাসীদের
02:14
Video thumbnail
Good Morning Kolkata | দেখে নিন আজ সকালের গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলি
13:41
Video thumbnail
বাংলার ৪২ | ঘাটালে কোন দল এগিয়ে?
05:59
Video thumbnail
আজকে (Aajke) | অমিত শাহের ভোট প্রচার মানে মিথ্যের ফুলঝুরি
10:46
Video thumbnail
Fourth Pillar | মোদিজির পায়ের তলায় ধস নামছে, উন্নয়ন নয়, এবার হিন্দু-মুসলমান খেলায় নেমে পড়েছেন
15:25
Video thumbnail
বাংলা বলছে | চাকরি বাতিল, হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকার ও SSC
53:28
Video thumbnail
Politics | পলিটিক্স (24 April, 2024)
15:13
Video thumbnail
Abhishek Banerjee | বিজেপি দলটাকে উঠিয়ে দেব: অভিষেক
10:43
Video thumbnail
নারদ নারদ | তৃণমূলপ্রার্থীর প্রচারে গিয়ে বিরোধী সুকান্তর প্রশংসা! দেবের মন্তব্যে শোরগোল রাজনীতিতে
15:36