ব্রিটেনের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ঋষি শৌনকের দলের বাঙালি কাউন্সিলরের বাড়িতে সরস্বতী পুজো ।বাঙালি গৃহবধূ ড: শ্রবণা ভট্টাচার্য এখন বৃটেনের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ঋষি শৌনকের দল কনজারভেটিভ পার্টির বর্তমান কাউন্সিলর। ঋষি শৌণক ছিলেন প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। বিগত ১২ বছর ধরে শ্রবণা কেমব্রিজে রয়েছেন। শ্রবণা স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গ ইউনিভার্সিটি থেকে পড়াশোনা করেন এবং গবেষণা করেছেন।কেমব্রিজে তাঁর বাড়িতে যথেষ্ট জাঁকজমকপূর্ণ সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হয়েছে। পুজোর সমস্ত নিয়ম-আচার মেনে বাড়িতে স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে পুজোর আয়োজন করেছিলেন। তিনি ক্যামকেয়ারের প্রতিষ্ঠাতা, পাশাপাশি ব্রিটেনে বাঙালি কনভেনশন অর্থাৎ ইউকেবিসি প্রতিষ্ঠা করেছেন। দুই সন্তানের জননী শ্রবণা মানুষের জন্য কাজ করতে প্রথম থেকেই ভালোবাসেন। কিন্তু তিনি জানতেন না বিদেশের মাটিতে কিভাবে তা সংঘটিত করতে হয়। তাঁর কথায় কলকাতা মিউনিসিপ্যালিটির কাউন্সিলর আর ব্রিটেনের কাউন্সিলরের ধারণার মধ্যে একটু তফাৎ আছে। শ্রবণা কেমব্রিজে এসে প্রথম একটি কুকিং প্রজেক্ট শুরু করেছিলেন। কারণ তার মনে হয়েছিল এখানকার বয়স্ক মানুষরা ভীষণ একা। তাঁদের কথা ভেবেই তিনি এই প্রজেক্ট শুরু করেন। এরপর স্থানীয় মানুষদের নানান কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেন। এভাবেই আস্তে আস্তে তিনি রাজনীতির আঙ্গিনায় পা দিয়ে বাঙালি গৃহিণী হয়েও ব্রিটেনে আজ কাউন্সিলর।
স্থানীয় অনেকেরই ধারণা ঋষি শৌণক যদি আবার ক্ষমতায় আসেন তবে শ্রবণা মন্ত্রিসভায় যেতে পারেন।যাইহোক বসন্ত পঞ্চমীর দিনে শুধু বাঙালিরাই নয় পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের লোকজনের ভিড় হয়েছিল গতকাল শ্রবণার বাড়িতে। সরস্বতী বন্দনার পাশাপাশি প্রসাদ ছাড়াও ছিল বাঙালি খিচুড়ি, লাবরা,মিষ্টি ও অন্যান্য সুস্বাদু খাবার। একেবারে খাঁটি বাংলার স্বাদ। এত বছর ধরে দেশ থেকে দূরে থেকেও শ্রবণা পরবাসে নিজের পরিচিতি গড়ে তুলেছেন। বাগদেবীর আরাধনায় সেই উত্তর কলকাতার মেয়েকে নিজের মধ্যে যেন ফিরে পেয়েছেন।
অন্যদিকে, লন্ডনের আরবাড়ি কমিউনিটি সেন্টার কেমব্রিজের একেবারে মাঝ বরাবর অবস্থিত। সেখানেও ছোট থেকে বড়দের মিলনক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল সরস্বতী পূজার মঞ্চ। ২৪ বছরে পড়লো ক্রেমব্রিজের এই সরস্বতী পুজো । চোখ ধাঁধানো শহরের সনাতনী রীতিতে পুজো-অর্চনা সাজানো গোছানো সবই যেন ছিল বাংলার মতন। মায়াবী মেশানো মাতৃ প্রতিমার আলিঙ্গন দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। বিলেতি ইংরেজি মিডিয়ামের পড়ার পাশাপাশি বাংলা ভাষার সংস্কৃতি হারিয়ে যায়নি। তাই এখনো শিশুরা ‘কুমোর পাড়ার গরুর গাড়ি’ কবিতা গড়গড়িয়ে বলতে পারে। পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে প্রসাদ হাতে নিয়ে অনেকের সঙ্গে গল্প। কেউ আবার কথার ফাঁকে নিজের ছোটবেলার ফেলে আসা দিনগুলো স্মৃতিচারণার সাথে -পুরনো স্কুলের গল্প থেকে ডানপিটেপনার রঙিন কাহিনী বর্ণনা করতে ভোলেনি।। ছিল ভোগের খিচুড়ি,লাবড়া,পায়েস,মিষ্টি চাটনি,পাপড়,রসগোল্লা।সবই যেন কলকাতার মতো। কেমব্রিজের এই বাঙালি পুজোতে ব্রিটিশ থেকে শুরু করে স্প্যানিশ,ফরাসি সমস্ত মানুষের চোখে-মুখে আনন্দ বুঝিয়েছে বাঙালির ভ্যালেন্টাইন্স সত্যি স্পেশাল।
কেমব্রিজের বাঙালি কাউন্সিলরের বাড়িতে সরস্বতী পূজা
ঋষি শৌনকের দলের বাঙালি কাউন্সিলরের বাড়িতে সরস্বতী পুজো
Follow Us :