পোর্ট-অউ-প্রিন্স: ফের কলেরা রোগের প্রাদুর্ভাব হাইতিতে। নতুন করে দেখা দেওয়া এই রোগে এখনও পর্যন্ত ৭ জন মারা গিয়েছেন। গোষ্ঠী অবরোধের (gang blockade) জেরে এই মুহূর্তে একেবারে বিধ্বস্ত হাইতি। দেশের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড এবং জনজীবন অব্যাহত রাখার জন্য যে জ্বালানির প্রয়োজন, তার অভাব দেখা দিয়েছে। তেমনই চলছে পানীয় জলের সঙ্কট।
২০২০ সালে প্যান আমেরিকান হেলথ অর্গানাইজেশন (Pan American Health Organization) তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছিল, হাইতিতে সেই সময় একবছর কোনও কলেরার ঘটনা নথিবদ্ধ হয়নি। তার আগে ২০১০ সালে কলেরার প্রাদুর্ভাবে ১০ হাজারের মতো মানুষ প্রাণ হারান। কলেরা মহামারী আকার নেওয়ার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিরক্ষী বাহিনীকে দায়ী করা হয়েছিল।
হাইতির হেলথ মিনিস্ট্র জেনারেল ডিরেক্টর (Health Ministry General Director) লরে আদ্রিয়েন (Laure Adrien) এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, সরকারের কাছে যা রিপোর্ট এসেছে, তাতে ৭-৮ জন মারা গিয়েছেন। হাসপাতাল থেকে এ বিষয়ে তথ্য পেতে সমস্যা হচ্ছে। হাইতির রাজধানী পোর্ট-অউ-প্রিন্স অঞ্চল (Port-au-Prince) এবং সিটে সোলেইল (Cite Soleil) শহরেও কলেরায় মৃত্যুর খবর এসেছে।
আরও পড়ুন: Pakistan Flood: বন্যায় বিপর্যস্ত পাকিস্তান আন্তর্জাতিক মহলের হস্তক্ষেপ চায়
জ্বালানির দাম বৃদ্ধির কারণে হাইতির কিছু বিদ্রোহ গোষ্ঠী দেশের প্রধান জ্বালানি বন্দর অবরুদ্ধ করে রেখেছে। জ্বালানির ঘাটতি দেখা দেওয়ায় জেনারেটর চালাতে না পারার কারণে বন্ধ রয়েছে কিছু হাসপাতালও। প্যাকেজ ড্রিকিং ওয়াটার সরবরাহকারী একটি ক্যারিবিয়ান সংস্থা রবিবার জানিয়েছে, ডিজেলের অভাবের কারণে তাদের সে দেশে প্যাকেজ ড্রিঙ্কিং ওয়াটার উৎপাদন এবং বণ্টনের কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে, ফলে সাপ্লাই চেইন সঙ্কটের মুখে পড়েছে।
উল্লেখ্য, কলেরা এমন একটি অসুখ, যা আক্রান্ত রোগীর মল থেকে দূষিত হওয়া জলের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরিশুদ্ধ জলের অভাব একটি বড় কারণ এই রোগের প্রাদুর্ভাবের। নেপালে কলেরা রোগের প্রাদুর্ভাব রয়েছে। ২০০৪ সালে হাইতির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জাঁ-বার্ট্রান্ড অ্যারিস্ট্রাইডকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর নেপাল (Nepal) থেকে সেনাবাহিনী পাঠানো হয়েছিল রাষ্ট্রপুঞ্জ শান্তিরক্ষী বাহিনীর অঙ্গ হিসেবে। ২০১০ সালে হাইতিতে ভূমিকম্পের পর সেনার পরিমাণ আরও বাড়ানো হয়। তার পরপরই সেখানে কলেরা মারাত্মক আকার নেয়। ২০১৩ সালে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে বলা হয়, শান্তিরক্ষী বাহিনীই সম্ভবত কারণ ছিল হাইতিতে কলেরা ছড়িয়ে পড়ার। ২০১৬ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জ এই কারণে হাইতির কাছে ক্ষমাও চায় যথাসময়ে সঠিক পদক্ষেপ না নেওয়ার জন্য।