ইস্তানবুল ও নয়াদিল্লি: তুরস্ক ও সিরিয়া (Turkey and Syria) সীমান্তে ভূমিকম্পে (Earthquake) মৃত্যুমিছিল প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে। সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এর্দোগান সরকারিভাবে ৯১২ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছেন। অন্যদিকে, সিরিয়া থেকে ১৩০০ জনের প্রাণহানির খবর মিলেছে। অর্থাৎ এখনও পর্যন্ত মোট ২০১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সিরিয়া ও তুরস্কের এই ভয়াবহ ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কারণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi) সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। কর্নাটকের বেঙ্গালুরুতে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, তুরস্কের ভয়ঙ্কর বিপর্যয় ঘটে গিয়েছে। অসংখ্য মানুষ এই ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছেন। ক্ষতি হয়েছে কয়েক কোটির সম্পত্তি। ভূকম্প বিধ্বস্ত দেশের জন্য ভারতের ১৪০ কোটি মানুষ সমব্যথী। প্রয়োজনে যে কোনও সাহায্যের আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী।
রিখটার স্কেলে ভূকম্পের তীব্রতা ছিল ৭.৮। দক্ষিণ তুরস্কের প্রাদেশিক গভর্নর সোমবার জানিয়েছেন, ভয়ঙ্কর কাঁপুনিতে নড়ে ওঠে গোটা এলাকা। হুড়মুড়িয়ে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে ঘরবাড়ি। আজ, সোমবার ভোর সওয়া ৪টে নাগাদ ভূমিকম্প হয়। ভূস্তরের ১৭.৯ কিমি গভীরে ছিল ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল।
প্রথম ভূমিকম্পের মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে ফের আফটার শকে কেঁপে ওঠে। যার তীব্রতা ৬.৭। এরকম মোট ৪০টি আফটার শক হয়েছে। অধিকৃত সিরিয়ার (Syria) সীমান্ত অঞ্চলে এই ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল। ভূমিকম্পের জেরে সুদূর সাইপ্রাস ও মিশরেও কম্পন অনুভূত হয়েছে। বেশ কয়েকটি শহরের বহুতলগুলি ঝুরঝুর করে ধসে পড়ে মাটিতে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তখন রাতের গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলেন নাগরিকরা। তাই প্রবল ভূমিকম্পে কেউ পালানোর বা নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার সুযোগটুকু পাননি। আপৎকালীন পরিস্থিতি হিসেবে সেখানে উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে জীবিত প্রাণের খোঁজ চলছে। যদিও কারও জীবিত থাকার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
টিভিতে দেখা যাচ্ছে, বরফের মধ্যে মানুষজন পাজামা ও সাধারণ পোশাকে রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে কাঁপছেন। ধ্বংসস্তূপের চারধারে শুধু হাহাকার ও বুক ফাটা কান্নার শব্দ। প্রায় এক শতাব্দীর মধ্যে এরকম ভূমিকম্প তুরস্ক চোখে দেখেনি। দেশের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এর্দোগান টুইটে বলেছেন, ভূমিকম্পে যাঁরা প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন, তাঁদের প্রতি আমার শুভেচ্ছা রইল। আমরা আশা করি, সকলে মিলে এই বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে পারব।
দক্ষিণ তুরস্কের বেশ কয়েকটি শহরের বহুতল ধুলোয় মিশে গিয়েছে। প্রভাব পড়েছে প্রতিবেশী সিরিয়াতেও। সিরিয়ার ভূমিকম্প কেন্দ্রের প্রধান রায়েদ আহমেদ জানিয়েছেন, এই ভূমিকম্প ইতিহাসে কখনও ঘটেনি। দেশের ভূ-বিজ্ঞানীরা সরকারকে অবিলম্বে বাঁধ পরিদর্শনের সুপারিশ করেছেন। কেননা ভূমিকম্পের ফলে বাঁধে ফাটল ধরলে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে।