কলকাতা: সন্ত্রাসবাদী অ্যাখ্যা দিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হল বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামি লিগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলিগকে। এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি জারি করল মুহাম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বুধবার সে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক বিবৃতিতে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন উল্লেখ করে ছাত্রলিগকে নিষিদ্ধের কথা জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে বিশেষ করে গত ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসনকালে বাংলাদেশ আওয়ামি লিগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলিগ হত্যা, নির্যাতন, গণরুমকেন্দ্রিক নিপীড়ন, ছাত্রাবাসে সিট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নসহ নানা ধরনের জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল এবং এ সম্পর্কিত প্রামাণ্য তথ্য দেশের সব প্রধান গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে এবং কিছু সন্ত্রাসের ঘটনায় সংগঠনটির নেতাকর্মীদের অপরাধ আদালতেও প্রমাণিত হয়েছে। গত ১৫ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন ছাত্রলিগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ জনগণকে উন্মত্ত ও বেপরোয়া সশস্ত্র আক্রমণ করে শতশত নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও ব্যক্তিকে হত্যা করেছে এবং আরও অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন করেছে।
আরও পড়ুন: রাশিয়াকে যুদ্ধে ‘সাথ’ দেবে উত্তর কোরিয়া, বিনিময়ে পাবে পরমাণু প্রযুক্তি!
সরকারের কাছে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ রয়েছে যে, গত ৫ অগাস্ট আওয়ামি লিগ সরকারের পতনের পরও বাংলাদেশ ছাত্রলিগ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক, ধ্বংসাত্মক ও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী কাজে জড়িত আছে।
এই অবস্থায় সরকার ‘সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯’-এর ধারা ১৮-এর উপধারা ১-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ আওয়ামি লিগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল এবং ওই আইনের তফসিল-২ এ ‘বাংলাদেশ ছাত্রলিগ’ নামের ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত করল বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
প্রসঙ্গত, ছাত্রলিগ উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন। মুজিববাহিনী নামে এরা ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের অ্যাসেম্বলি হলে পূর্ব-পাকিস্তান ছাত্রলিগের প্রতিষ্ঠা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশ ছাত্রলিগ বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন অধিকার সংক্রান্ত আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, শিক্ষার অধিকার, বাঙালির স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা, গণ-অভ্যুত্থান, স্বাধীনতা ও স্বাধিকার আন্দোলন।
দেখুন অন্য খবর: