ওয়েব ডেস্ক: ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর। ডালাসে আমেরিকার (US) প্রেসিডেন্ট (President) জন এফ কেনেডিকে (John F Kennedy) স্বাগত জানাতে অসংখ্য মানুষের উচ্ছাস। আমেরিকা সহ সারা বিশ্বে শান্তির (Peace) আহ্বান করে দেওয়া তাঁর ভাষণ মানুষের মুখে মুখে ফিরছে। এয়ারফোর্স ১ ডালাস বিমানবন্দরের মাটি ছোঁয়। ঝকঝকে আকাশ। হুডখোলা গাড়ি। প্রেসিডেন্ট কেনেডি পিছনের আসনে ডানদিকে বসে। পাশে অসামান্য সুন্দরী ফার্স্ট লেডি জ্যাকলিন কেনেডি। প্যারেড রুটের একেবারে শেষ। ঠিক সেই সময় গুলির শব্দ। মুহূর্তেই নিথর হয়ে স্ত্রী জ্যাকলিনের কাঁধে পড়ে গেলেন দুনিয়া কাঁপানো মার্কিন প্রেসিডেন্ট। প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানাতে হাজির জনগণের কোলাহল থেমে গেল। মুহূর্তেই শুনশান চারিদিক। প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তারক্ষীরা ছুটে এলেন। ততক্ষণে সব শেষ। কেনেডি ভক্তরা হাউ হাউ করে কেঁদে ফেললেন সেখানেই। আমেরিকাবাসী বিশ্বাস করেন, সেই হত্যা রহস্যের কিনারা হয়নি আজও। সেই ঘটনায় একটি নাম বিশ্বে ঝড় তুলেছে নতুন করে। গ্যারি আন্ডারহিল। সৌজন্যে মঙ্গলবার কেনেডি হত্যা রহস্যের গোপন ফাইল প্রকাশ্যে আসা। এমন নয় এই প্রথম কেনেডি হত্যার ফাইল প্রকাশ করল আমেরিকা। এর আগেও করেছে। তাতে ধোঁয়াশা কাটেনি। ট্রাম্প সরকার এবার ২ হাজার ২০০টি ফাইল প্রকাশ করেছে। যার মধ্যে ৬৩ হাজার পাতার নথি রয়েছে। টাইপ রাইটারের লেখা। হাতে লেখা নোট। স্টিল ছবি। অডিও ক্লিপ, ভিডিও। সব মিলিয়ে বিপুল দলিল। আমেরিকার জাতীয় সংরক্ষণাগারের ওয়েবসাইটে সব নথি আপলোড হয়েছে। আমেরিকার বহু মানুষ এখনও বিশ্বাস করেন অসওয়াল্ড একমাত্র ঘাতক নয়। কেনেডি হত্যার নেপথ্যে রয়েছে সেই সময়ের মার্কিন প্রশাসন। জড়িত রয়েছে গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ। গোপন ফাইল প্রকাশ হতেই চর্চায় গ্যারি আন্ডারহিলের নাম। কে এই গ্যারি? সিআইএ এজেন্ট? জন গ্যারেট আন্ডার হিল জুনিয়র। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা সেনার একজন ক্যাপ্টেন ছিলেন। পরে তিনি সিআইএ-তে যোগ দেন। আমেরিকার সেনা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধের লেখক ছিলেন তিনি। সামরিক বিষয় সংক্রান্ত লাইফ ম্যাগাজিনের সম্পাদক ছিলেন।
আততায়ীর ছোড়া বুলেটে নিহত হন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি। সেদেশে গুপ্তচর বৃত্তির ইতিহাসে এই ঘটনা রহস্যে ঘেরা। বুলেটের কৌণিক গতিপথ নিয়ে তর্ক, বিতর্ক রয়েছে। ট্রাম্প সরকার কেনেডি হত্যার সেই গোপন ফাইল প্রকাশ করেছে। এবার কি তবে রহস্যের জট খুলবে? প্যারেড রুটের লাগোয়া একটি স্কুল বিল্ডিং। যার সাততলা থেকে পুলিশ আততায়ী লি হার্ভে অসওয়াল্ডকে গ্রেফতার করে। দুদিন পর জেলে যাওয়ার পথে একটি নাইট ক্লাব মালিক জ্যাক রুবি অসওয়াল্ডকে গুলি করে। ওয়ারেন কমিশন তদন্ত করে জানায় কেনেডি হত্যার সঙ্গে কোনও বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের সম্পর্ক নেই। অসওয়াল্ড একাই এই ঘটনার অপরাধী। বিষয়টি কি এতটাই সোজা? কীভাবে একটি বুলেট ৬টি জায়গায় আঘাত করতে পারে। তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
আরও পড়ুন: হামাস যোগের অভিযোগে আমেরিকায় গ্রেফতার ভারতীয় গবেষক
কেনেডি হত্যার পরের দিন গ্যারি খুব তাড়াহুড়ো করে ওয়াশিংটন ছাড়েন। সন্ধ্যার দিকে নিউ জার্সিতে এক বন্ধুর বাড়িতে দেখা যায় তাঁকে। গ্যারি বন্ধুকে জানান, কেনেডি হত্যার নেপথ্যে রয়েছে সিআইএর এক চক্র। আন্ডারহিল যে খুন হতে পারেন এমন আশঙ্কাও করেন বন্ধুর কাছে। মাস খানেকের মধ্যে ওয়াশিংটনের ফ্ল্যাটে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আন্ডারহিলের দেহ উদ্ধার হয়। বলা হয় তিনি আত্মহত্যা করেছেন। বাঁদিকের কানে গুলি করা হয়। যদিও আন্ডারহিল ছিলেন একজন ডানহাতি। কেনেডি হত্যার আততায়ী অসওয়াল্ড একজন সাজানো ঘাতক।
দেখুন অন্য খবর: