মালদহ: নকল (Copying) করতে বাধা দেওয়ায় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের (Teacher) মারধর পরীক্ষার্থীদের। মালদহ (Malda) জেলার কালিয়াচক-২ নম্বর ব্লকের রথবাড়ি হাইস্কুলে (Rathbari High School) উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার (HS Exam 2023) আজ, বৃহস্পতিবার ছিল ইংরেজি পরীক্ষা। মোবাইল (Mobile) এবং নকল করার জন্য বইয়ের পৃষ্ঠা নিয়ে পরীক্ষার হলে বেশ কিছু ছাত্র ঢুকেছিল। সেই সময় এক শিক্ষিকা তা দেখে ফেলেন। মোবাইল চাইতে গেলে শুরু হয় বচসা এমনকী ওই শিক্ষিকাকে ধাক্কাধাক্কি করে ছাত্ররা।
প্রধান শিক্ষক বাঁচাতে এলে তাঁকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। গোটা স্কুল চত্বর রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ সমস্ত কিছু ভাঙচুর করা হয়। শেষ পর্যন্ত মোথাবাড়ি থানা থেকে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। প্রধান শিক্ষক লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। এই রথবাড়ি বিদ্যালয়ে বাঙ্গিটোলা, মোথাবাড়ি এবং মেহেরাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্ররা এবার পরীক্ষা দিচ্ছে। পরীক্ষার্থী ছাত্রদের এহেন আচরণে রথবাড়ি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা রীতিমতো আতঙ্কিত।
আরও পড়ুন: Adani Group in Defense | প্রতিরক্ষা মন্ত্রকেও কেন আদানিদের হাত, প্রশ্ন বিরোধীদের
উল্লেখ্য, বুধবার মুর্শিদাবাদে পরীক্ষা কেন্দ্রে (Exam Center) বোর্ড নিয়ে ঢুকতে না দেওয়ায় বিক্ষোভ দেখায় পরীক্ষার্থীরা। পরীক্ষাকেন্দ্রকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয় ইট-পাটকেল। বিশাল পুলিশবাহিনী গিয়ে ছত্রভঙ্গ করে পরীক্ষার্থীদের। এই ঘটনার পরপরই রাস্তা অবরোধ (Road Blocked) করে বিক্ষোভ দেখান স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের (Second Year Graduate Students) পড়ুয়ারা। এ নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। ঘটনাটি ঘটে মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) রানিনগরের সেখপাড়ার জিডি কলেজে। ওই কলেজের সামনে সেখপাড়া-সাগরপাড়া রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন পরীক্ষার্থীরা। রানিনগরের বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে অবরোধকারীদের ধমকে তুলে দেয়।
ওই ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীরা ছুটে গিয়ে কলেজে ইটবৃষ্টি করে। ইটের ঘায়ে দরজা-জানালা ভেঙে চুরমাচুর হয়ে গিয়েছে। ইটের আঘাতে কলেজের দুজন কর্মীও সামান্য জখম হয়েছেন বলে কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে।
সেখপাড়ার ওই বেসরকারি কলেজে স্নাতক দ্বিতীর বর্ষের পরীক্ষার সেন্টার পড়েছে ডোমকল বসন্তপুর কলেজের ছাত্রছাত্রীদের। পড়ুয়াদের অভিযোগ, লকডাউনের পর সেভাবে পড়াশোনার সুযোগ পাওয়া যায়নি। সেই পরিস্থিতিতে আমরা পরীক্ষা দিতে এসেছি। কিন্তু এখানকার সেন্টারের শিক্ষকরা পরীক্ষা হলে ঘাড় ঘোরাতেও দিচ্ছেন না। এমনভাবে কড়া পাহারা দিচ্ছেন। যাতে আমাদের জানা উত্তর ভুল হয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে মঙ্গলবার পরীক্ষা শেষে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে অনেককে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
যদিও কলেজের এক অধ্যাপক জানান, মঙ্গলবার সুষ্ঠু ভাবেই পরীক্ষা হয়েছিল। পরীক্ষা শেষে হঠাৎ করেই পরীক্ষার্থীরা তাদের সঙ্গে থাকা লেখার বোর্ড দিয়ে কলেজের সিসি ক্যামেরা ভেঙে দেয় বলে অভিযোগ। ভেঙেছে চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ। তাদের দাবি, বই খুলে লিখতে দিতে হবে। কোনও গার্ড দেওয়া চলবে না। এ নিয়ে একটা বিশৃঙ্খলা হয়েছিল, পরে তা মিটেও যায়।
তিনি জানান, ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয় যে, পরীক্ষা হলে আর লেখার বোর্ড নেওয়া যাবে না। সেটা বোর্ডের নিয়মের মধ্যেও পড়ে। আর তাই এদিন বোর্ড নিয়ে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তার জেরে ওরা বিক্ষোভ করেছে ও কলেজে ইট-পাটকেল ছুড়ে ক্ষতি করেছে। জানা গিয়েছে, বিক্ষোভের জেরে অনেক পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিতেও বসেননি। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন ২২৯ জনের পরীক্ষায় বসার কথা। সেই জায়গায় মাত্র ৭৯ জন পরীক্ষায় বসেছেন।
বিক্ষোভকারীরা জানান, কলেজ কর্তৃপক্ষের হঠকারী সিদ্ধান্তের জেরে আমাদের অনেকের পরীক্ষায় বসা হল না। কলেজের তরফে জানানো হয়, পরীক্ষার হলে পুলিশের সহযোগিতা না পাওয়ার জেরেই এই বিশৃঙ্খলা ঘটেছে। এদিকে পুলিশের তরফে প্রশ্ন তোলা হয়েছে মঙ্গলবার বোর্ড নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হল তো এদিন করা হল না কেন? পরীক্ষা কেন্দ্র চালাতে হলে একই নিয়ম রাখতে হবে। একেক দিন একেক নিয়ম করবেন, আর তার জেরে বিশৃঙ্খলা তো হবেই।
শেয়ার করুন