কলকাতা: মোদি বিরোধী জোটে কংগ্রেসের (Congress) সঙ্গে হাত মেলানো কোনও পক্ষেরই সম্ভব নয়, তাই মমতার (Mamata Banerjee) সঙ্গে নতুন জোটের (Third Front) সম্ভাবনা গড়ে তুললেন সমাজবাদী পার্টির (SP) নেতা অখিলেশ যাদব (Akhilesh Yadav)। সংসদে কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিরোধীরা সম্মিলিতভাবে যে লড়াই চালাচ্ছে, তাতেও যোগ দিচ্ছে সপা। আবার কলকাতায় এসে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে অ-কংগ্রেসি, অ-বিজেপি নতুন জোটের দরজা খুলে দেওয়ার স্পষ্ট ইঙ্গিত দিলেন অখিলেশ। অর্থাৎ সমাজবাদী পার্টি এবং তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপি (BJP) বিরোধিতায় ভিন্ন ধাঁচের জোটের পক্ষে। দুজনেই রাজধানীর রাজনীতিতে কংগ্রেস এবং বিজেপির সঙ্গে হাতখানেক দূরত্ব বজায় রেখে চলবে।
প্রসঙ্গত, আগামী সপ্তাহে ওড়িশায় যাচ্ছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে পুরীর মন্দির দর্শন ছাড়াও বিজু জনতা দলের নেতা তথা ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের সঙ্গেও কথা হবে মমতার। সেখানে বিজেপি-ঘেঁষা নবীনকেও কাছে টানার চেষ্টা করতে পারেন তিনি। এই কৌশলের অন্যতম কারণ বিরোধীদের মূল মুখ হিসেবে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে তুলে ধরার যে চেষ্টা বিজেপি করছে, তাতে জল ঢেলে দেওয়া। কারণ, সংসদের বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বের গোড়া থেকে রাহুলকে নিয়ে উঠেপড়ে লেগেছে বিজেপি। আর কংগ্রেস বিজেপির এই চেষ্টাকে প্রতিহত করতে অন্যান্য বিরোধী দলকে নিয়ে জোট বেঁধেছে। এখন অনেকেরই সন্দেহ এই যে, বিজেপি আসলে রাহুলকে সামনে রেখে বিরোধীদের নিশানা বানাতে চাইছে।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee | মুর্শিদাবাদে অধীরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন, দুই সাংসদকে তোপ মমতার
এই অবস্থায় উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ এদিন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা কংগ্রেস এবং বিজেপির সঙ্গে সমদূরত্ব নীতি বজায় রেখে চলবেন। সাংবাদিকদের অখিলেশ বলেন, বাংলায় আমরা মমতাদিদির সঙ্গে আছি। এই মুহূর্তে আমাদের অবস্থান হল আমরা কংগ্রেস এবং বিজেপির সঙ্গে সমদূরত্ব নীতি নিয়ে চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তিনি আরও বলেন, যারা বিজেপি-টিকা লাগিয়েছে, তারা সিবিআই, ইডি এবং আয়করের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে গিয়েছে। আবার দুর্নীতির অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও যারা বিজেপি খাতায় নাম লিখিয়েছে, তারা ছাড় পেয়েছে।
সপার জাতীয় কার্যকরী সমিতির বৈঠক উপলক্ষ্যে এদিন কলকাতায় আসেন অখিলেশ। এরই ফাঁকে শুক্রবার বিকেলে তিনি মমতার কালীঘাটের বাড়ি যান। সেখানেই ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের রণকৌশল নিয়ে আলোচনা হয়। যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে এ ব্যাপারে সরকারিভাবে কোনও জোটনীতি ঘোষণা করা হয়নি। তবে দলের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এদিনই জানিয়ে দেন, তৃণমূল একলা চলোর নীতি নিয়েছে। কংগ্রেসকে কখনই বিগ বস বা বড়দা হিসেবে মেনে নেওয়া হবে না।
অন্যদিকে, অখিলেশও নাম করে বলেন, তেলেঙ্গনার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও, তামিলনাড়ুর এম কে স্ট্যালিন, বিহারের নীতিশ কুমার এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এখন নির্বাচনে কংগ্রেস কীভাবে লড়াই করবে, তা তারা ঠিক করুক। জোটের নাম পরবর্তীকালে ঠিক করা যাবে। অর্থাৎ তাঁর এই বক্তব্যে এটা জলের মতো পরিষ্কার যে, অ-বিজেপি, অ-কংগ্রেসি বিরোধী জোট গড়ে উঠতে চলেছে। আগামী লোকসভা ভোটে বিজেপি এবং কংগ্রেসকে তৃতীয় বিকল্পের সঙ্গে লড়াইয়ের জমি প্রস্তুত হতে যাচ্ছে।
শেয়ার করুন