কলকাতা: প্রথমবার ২ দিনের পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal) সফরে এসে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর বাসভবন (Netaji Bhawan) এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মভিটে জোড়াসাঁকো ঠাকুবাড়ি (Jorasanko Thakur Bari) ঘুরে দেখলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু (President Droupadi Murmu)। রাষ্ট্রপতির আগমনকে ঘিরে এদিন শহরকে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়। রাষ্ট্রপতি দুপুর ১২ নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দরে (Calcutta Airport) এসে নামেন। সেখানে তাঁকে গার্ড অফ অনার দেওয়া হয়। এখান থেকে তিনি সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে এসে পৌঁছন রেসকোর্সে। সেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) তাঁকে উত্তরীয় পরিয়ে, পুষ্পস্তবক দিয়ে স্বাগত জানান। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যপাল ও রাজ্যের আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা।
রেসকোর্স থেকে সড়কপথে দ্রৌপদী মুর্মু প্রথমে আসেন নেতাজি ভবনে। সঙ্গে ছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ও কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। দুপুর ১টা নাগাদ নেতাজি ভবন ঘুরে দেখেন তিনি। নেতাজির ব্যবহৃত ও বিভিন্ন স্মারক, ছবি মন দিয়ে দেখেন। কিছু কিছু ব্যাপারে সাগ্রহে জানতে চান। কিছুক্ষণ সেখানে সময় কাটিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় নেতাজির পরিবারের সদস্যরা তাঁকে কয়েকটি বই উপহার দেন। যা পেয়ে অত্যন্ত খুশি রাষ্ট্রপতি।
আরও পড়ুন: TMC Joins Opposition Meeting | চমক তৃণমূলের, কংগ্রেসের বিরোধী বৈঠকে হঠাৎ কেন হাজির মমতার দল?
নেতাজি ভবন থেকে বেরিয়ে তিনি সোজা রওনা দেন জোড়াসাঁকোর উদ্দেশে। সেখানে তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে আগেভাগেই হাজির ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও মন্ত্রী শশী পাঁজা। দুপুর ১টা ১৯ মিনিট নাগাদ রাষ্ট্রপতি এসে পৌঁছন রবি ঠাকুরের জন্মভিটেয়। সেখানে মিনিট পনেরো সময় কাটিয়ে রাজভবনে মধ্যাহ্নভোজের জন্য চলে যান দ্রৌপদী। রাজভবনে ফিরে মধ্যাহ্নভোজন শেষে তিনি দেখা করবেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে।
রাষ্ট্রপতির সফর নিয়ে নজিরবিহীন নিরাপত্তার আয়োজন করেছে কলকাতা ও রাজ্য পুলিশ। তাঁর নিরাপত্তায় কলকাতার বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন থাকছে তিন হাজার পুলিশকর্মী এবং অফিসার। নিরাপত্তার কারণে যাত্রাপথের বিভিন্ন জায়গায় কড়া নিয়মবিধি কার্যকর হয়েছে।
বিকেলে রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী, কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি, রাজ্য বিধানসভার স্পিকার–সহ রাজ্যের শীর্ষ ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে মিলিত হবেন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। রাষ্ট্রপতির জন্য সেখানে আয়োজন করা হয়েছে নাগরিক সংবর্ধনার। রাতে অংশ নেবেন তাঁর সম্মানে রাজ্যপাল আয়োজিত ভোজসভায়।
মঙ্গলবার সকালে রাষ্ট্রপতির যাবেন বেলুড় মঠ। তারপর কর্মসূচি রয়েছে সায়েন্স সিটি অডিটোরিয়ামে। ইউকো ব্যাঙ্কের ৮০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান অংশ নেবেন রাষ্ট্রপতি।
অন্যদিকে শান্তিনিকেতনে সেনার হেলিকপ্টারে মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ পৌঁছবেন তিনি। ঘুরে দেখবেন রবীন্দ্রভবন, কলাভবন এবং কবিগুরুর আশ্রম। তাঁর সামনে বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রীরা মঞ্চস্থ করবেন নাটক। বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের সূচনাও করবেন তিনি। বিকেলে আসবেন কলকাতা বিমানবন্দরে। দু’দিনের বাংলা সফরশেষে তাঁকে নিয়ে দিল্লি উড়ে যাবে বায়ুসেনার বিশেষ বিমান।