কলকাতা: শিশুমৃত্যুর ঘটনায় অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল তিলজলায় (Tiljala)। র্যাফ (RAF) নামানোর এখন থমথমে অবস্থা। স্থানীয় মানুষ শান্ত হয়নি, চাপা ক্ষোভ জমে রয়েছে এখনও। বন্ডেল গেট এবং পিকনিক গার্ডেনের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ধিকিধিকি জ্বলছে ক্রোধের আগুন। গোটা এলাকায় টহলদারি করছে বিশাল র্যাফ বাহিনী। রয়েছেন উচপদস্থ পুলিশ আধিকারিকরাও। এখনও রাস্তায় ইতস্তত পড়ে রয়েছে, ইট-পাথর, কাঁদানে গ্যাসের শেল।
রবিবার তিলজলায় কুসংস্কারের বলি হয়েছে এক চার বছরের শিশু। সন্তানলাভের আশায় তাকে খুন করেছিল অলোক কুমার নামে এক যুবক। তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল রবিবার রাতেই। খুনের কথা সে স্বীকার করেছে বলে দাবি পুলিশ (Police) আধিকারিকদের। জেরায় ধৃত জানিয়েছে, নবরাত্রির মধ্যে নরবলি দিলে সন্তানধারণ করবে স্ত্রী। তান্ত্রিকের (Tantrik) নির্দেশেই শিশুকন্যাকে অপহরণ করে নৃশংসভাবে খুন করেছে সে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় অপহরণ করে খুন এবং যৌন নির্যাতনের মামলা রুজু করা হয়েছে। খোঁজ শুরু হয়েছে তান্ত্রিকেরও।
আরও পড়ুন: President Draupadi Murmu | আগামিকাল বেলুড় মঠে যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি, হাজির হবেন শান্তিনিকেতনেও
তিলজলা থানা এলাকার ২১ নম্বর শ্রীধর রায় রোডে একটি বিল্ডিংয়ের ফ্ল্যাটে মা, বাবা, ভাইয়ের সঙ্গে থাকত ৪ বছরের নাবালিকাটি। পরিবারটি বিহারের বাসিন্দা। এদিন সকালে ময়লা ফেলতে রাস্তায় বেরিয়েছিল নাবালিকাটি। তারপর তার আর হদিশ মেলেনি। বহু খোঁজাখুঁজির পরেও নাবালিকাটির কেউ কোনও খবর দিতে পারেনি। এরপর নাবালিকাটির পরিবার তিলজলা থানায় অভিযোগ দায়ের করে। তারপর রাত ১০টা নাগাদ তিলজলা থানার পুলিশের তল্লাশি অভিযানে ওই বিল্ডিংয়েরই প্রতিবেশী অলোক কুমারের ফ্ল্যাটে রান্নাঘরে গ্যাস সিলিন্ডারের পাশ থেকে হাত, পা, মুখ বাঁধা অবস্থায় নাবালিকার দেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, ধর্ষণ করে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে নাবালিকাটিকে।
তবে পুলিশ আরও আগে তল্লাশি শুরু করলে নাবালিকাটিকে বাঁচানো যেতে বলে দাবি মৃতের পরিবার সহ প্রতিবেশীদের। পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে রবিবার রাতেই তিলজলা থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। গতকাল রাত থেকেই উত্তাল ওঠে তিলজলা এলাকা। তিলজলা থানার সামনেও বিক্ষোভ দেখাতে থাকে এলাকার বাসিন্দারা। বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনতে দু’জন মহিলাকে আটক করে পুলিশ। পাশাপাশি ওই এলাকায় ২০০ জন পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়। স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, একটি শিশু কন্যাকে খুঁজতে মাত্র দু’জন পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। আর বিক্ষোভ হটাতে ২০০ জন পুলিশ। সোমবার সকালেও উত্তাল হয়ে ওঠে তিলজলা এলাকা। দুজন মহিলাকে আটক করার প্রতিবাদে দীর্ঘক্ষণ অবরোধ করে রাখা হয়েছে বন্ডেল রোড। এখনও পর্যন্ত চলছে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি।
শেয়ার করুন