কলকাতা: তৃণমূলে যোগ দেওয়া সাগরদিঘির বিধায়ক বায়রন বিশ্বাস (Byron Biswas) একসময় বিজেপিতে যোগ দিতে চেয়েছিলেন বলে দাবি করলেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। কিন্তু তিনিই বায়রনকে নিরস্ত্র করেন। বুধবার একথা জানান বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বিজেপি নেতার কথায়, আমি ওকে চিনি। ও একসময় বিজেপি করতে চেয়েছিল। আমি ওকে বলি, তুমি ব্যবসায়ী বাড়ির ছেলে। বিজেপি করলে তোমার ব্যবসা করতে অসুবিধা হবে। তাছাড়া তুমি যেহেতু সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্য, তুমি সেভাবে বিজেপিতে স্বীকৃতিও পাবে না।
মাত্র তিনমাস আগেই উপনির্বাচনে সাগরদিঘি বিধানসভা (Sagardighi By Election) কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী হন বায়রন বিশ্বাস। সোমবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে রাজ্য বিধানসভার একমাত্র কংগ্রেস সদস্য বায়রনের তৃণমূলে যাওয়া নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। তারমধ্যেই বায়রন সম্পর্কে নতুন তথ্য হাজির করলেন দিলীপ ঘোষ। যদিও এ ব্যাপারে দলবদলু বায়রনের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
কংগ্রেস ছেড়ে বায়রনের তৃণমূলে যোগ দেওয়া নিয়ে ধাক্কা খেয়েছে সাগরদিঘি মডেল। কংগ্রেস বায়রনকে প্রার্থী করার পর বিজেপির দাবি ছিল, জিতেই তিনি তৃণমূলের গিয়ে ভিড়বেন। বিজেপির সেই দাবিই সত্যি হল। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরই বায়রনকে পাশে বসিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে অভিষেক বলেন, বায়রন নির্বাচনে দাঁড়ানোর আগে থেকেই আমার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন। তৃণমূল পরিবারেরই ছেলে তিনি। কিন্তু যে কোনও কারণেই হোক আমার সঙ্গে সংযোগ হয়ে ওঠেনি তখন। সম্প্রতি তিনি যোগাযোগ করেন আবার। শারীরিক ভাবে অসুস্থ ছিলেন। সুস্থ হয়ে আমাকে ফোন করেছিলেন। আমি অবস্থান জানাতে সুদূর মুর্শিদাবাদ থেকে ঘাটালে এসে যোগদান করলেন তৃণমূলে।
২০২১-এর বিধানসভা ভোটে যে সাগরদিঘি কেন্দ্রে জিতেছিলেন তৃণমূলের সুব্রত সাহা। তাঁর মৃত্যুতে এই কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়। বামেদের সমর্থনে কংগ্রেস প্রার্থী জেতেন। বায়রনের জয়কে সামনে রেখে কংগ্রেস দাবি করে, এই সাগরদিঘি মডেলেই আগামিদিনে রাজ্যে তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে ভোটের লড়াই হবে। সাগরদিঘিতে সংখ্যালঘুদের একটা বড় অংশের ভোট কংগ্রেসের পক্ষে যায়। রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, এতে তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোটে বড় ফাটল ধরল। যদিও এই ব্যাখ্যা মানতে নারাজ তৃণমূল।তাদের দাবি ছিল, সংখ্যালঘুরা তৃণমূলের সঙ্গেই আছে।
বুধবার দিলীপ আরও বলেন, কংগ্রেস ওকে পেতে প্রচুর টাকা খরচ করেছে। তবে বায়রন সক্রিয় রাজনীতির লোক নয়। তাকে সামনে রেখে সংখ্যালঘু সমাজ তৃণমূলকে একটা শিক্ষা দিয়েছে। এখন বায়রন তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় সংখ্যালঘুরাও ধাক্কা খেল।