কলকাতা: ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়। কালীপুজোর মুখে বাংলা-ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়তে চলেছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় দানা। রবিবার আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। ২৪ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার সকাল নাগাদ সেটি ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূল সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে পৌঁছে যাবে। তারপর ঠিক কখন ও কোন এলাকা দিয়ে ঝড়টি উপকূল অতিক্রম করবে, তা নির্দিষ্টভাবে এখনই কিছু জানা যায়নি। দানা-র উপকূলে আছড়ে পড়ার প্রক্রিয়া ঝোড়ো হাওয়ার সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার হতে পারে। এর প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অংশে দুর্যোগ পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।
ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসনের কাছে সতর্কবার্তা পৌঁছে গিয়েছে। সুন্দরবন উপকূলে বাড়তি নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নবান্ন থেকে। সুন্দরবন উপকূল থানাগুলির পক্ষ থেকে মাইকিং শুরু হয়েছে। মৎস্যজীবীদের সতর্ক করা হচ্ছে। আজ সোমবার সন্ধের মধ্যে সব মৎস্যজীবী ট্রলার গুলিকে উপকূলে নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরে আসতে বলা হয়েছে। বুধবার থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়েছে। মৎস্য দফতরের পক্ষ থেকে এই নির্দেশ পৌঁছে গিয়েছে সমস্ত মৎস্যজীবী সংগঠনের কাছে। নবান্ন থেকে ঘূর্ণিঝড় সতর্কতার নির্দেশ আসার পরেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ব্লককে সতর্ক করা হয়েছে। দুর্বল বাঁধের উপর সেচ দফতরকে নজর রাখতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে উপকূলের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরানো হবে। সেজন্য সুন্দরবনের বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র ও স্কুলগুলিকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ব্লক অফিস গুলোতে শুকনো খাবার, তার্পোলিন, পানীয় জলের পাউচ মজুত রাখা হচ্ছে। জেলা, মহকুমা ও ব্লক স্তরে কন্ট্রোল রুম খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলার সঙ্গে যুক্ত সব বিভাগের সরকারি কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: অনশনে অনড়, আজ নবান্নে বৈঠক মুখ্যমন্ত্রী-জুনিয়র ডাক্তারদের
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বুধবার দুই ২৪ পরগনা এবং দুই মেদিনীপুরে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃহস্পতিবার উপকূলের জেলাগুলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। অতি ভারী বৃষ্টি হবে দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে। বৃহস্পতিবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা ও ঝাড়গ্রাম জেলাতে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে মঙ্গলবার থেকেই উত্তাল হয়ে উঠবে সমুদ্র। ঝড়ের প্রভাবে নদী ও সমুদ্র উপকূলে সর্বোচ্চ ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড়ো হাওয়া বইতে পারে। নিরাপত্তার কারণে বুধবার থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে যাওয়ার ওপর সম্পূর্ণ ভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আগামী ২৪ শে অক্টোবর সকালে বাংলা-ওড়িশা উপকূলে প্রভাব ফেলতে পারে এই ঘূর্ণিঝড়।
দেখুন আরও অন্যান্য খবর: