কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: বাম ট্রেড ইউনিয়নের দু’দিনের ডাকা ভারত বনধের কোনও প্রভাব পড়েনি হাওড়া শহরে। হাওড়া ব্রিজ দিয়ে প্রত্যেক দিনের মতো যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল। হাওড়া স্টেশন চত্বরে ট্যাক্সি চলাচল স্বাভাবিক। তবে ডোমজুড়ের বেশ কিছু জায়গায় বাম শ্রমিক সংগঠনের সমর্থকরা জোর করে বাস আটকানোর চেষ্টা করে রাস্তায় বসে পড়ে। বিশাল পুলিশ বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে কিছুক্ষণের মধ্যে যান চলাচল স্বাভাবিক করে দেয়। সরকারি বাসের চালককে হেলমেট পরে বাস চালাতে দেখা যায়।
উলুবেড়িয়ায় বামেদের মিছিল। একটু বেলার দিকে উলুবেড়িয়া উড়ালপুলের উপর বামেদের মিছিল থেকে ভাঙা হয় বাস ও লরির কাচ। বাসের চাকার হাওয়া খুলে দেন বাম কর্মীরা। কোনা এক্সপ্রেসওয়ের সাঁতরাগাছি ব্রিজের সামনে রাস্তা অবরোধ করেন বনধ সমর্থকরা। রাস্তার উপরে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।

হাওড়া-দক্ষিণ পূর্ব শাখার কুলগাছিয়া স্টেশনের কাছে রেল অবরোধ করে বাম সমর্থকরা। আন্দোলনকারীদের জোর করে সরিয়ে দিয়ে ট্রেন চলাচলের চেষ্টা করায় তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। এতে আহত হয়েছেন ২ বাম সমর্থক। হাওড়ার সানপুরে রাস্তা অবরোধ হয়, পুলিসের সঙ্গে এখানেও ধস্তাধস্তি হয় বাম কর্মীদের| গ্রেফতার করা হয় অবরোধকারীদের। বাম সমর্থকরা বন্ধ করে দেয় বাঁধাঘাটের ফেরি সার্ভিস।
বামেদের ডাকা বনধে সকাল থেকে চুঁচুড়া ও হুগলির মাঝে রেল অবরোধ হয়। চুঁচুড়া রবীন্দ্রনগর এলাকায় জিটি রোডের উপর আগুন জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করে বামেরা।

২ দিনের ধর্মঘটের প্রথম দিনে মিশ্র প্রভাব ডায়মন্ডহারবারে। ক্যানিংয়ে বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন সিপিএম কর্মীরা। ক্যানিং-বারুইপুর রাস্তা অবরোধ করে চলে বিক্ষোভ। সকাল থেকে বন্ধ ডায়মন্ড হারবার-শিয়ালদহ শাখার ট্রেন চলাচল। হোটর স্টেশনে রেল অবরোধ করেন বাম কর্মী-সমর্থকরা। মথুরাপুরে বনধের সমর্থনে মিছিল করে বামেরা।
লক্ষ্মীকান্তপুরে বনধের কোনও প্রভাব পড়েনি। তবে ডায়মন্ড হারবারে বাজারঘাট খোলা থাকলেও, বন্ধ রয়েছে রেল পরিষেবা।
ধর্মঘটের প্রথম দিনে তেমন কোনও প্রভাব পড়েনি মুর্শিদাবাদে। জেলার সদর শহর বহরমপুর থেকে বিভিন্ন রুটে সরকারি ও বেসরকারি বাস চলাচল স্বাভাবিক ছিল। বাসস্ট্যান্ড সহ বিভিন্ন রাস্তায় যাত্রীদেরও ভিড় লক্ষ্য করা গিয়েছে। বাজারহাট পুরোপুরি খোলা। জনজীবন ছিল স্বাভাবিক।
আরও পড়ুন: Rampurhat Violence: সোনা শেখের বাড়ি থেকে জার উদ্ধার করল ফরেনসিক টিম

পূর্ব মেদিনীপুরেও ৪১নং জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বনধ সমর্থকরা। যদিও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন জায়গায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ তমলুক-মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের রাধারানির কাছে বাম সংগঠনগুলি পথ অবরোধ করে দেয়। সেখানে আসেন হলদিয়ার বিধায়ক তাপসী মণ্ডল। তাপসী মণ্ডলকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান বাম কর্মীরা। তমলুক থানার পুলিস এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। পরে পুলিস অবরোধ তুলে যান চলাচল স্বাভাবিক করে দেয়।
হুগলির কামারপুকুরে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভের ফলে যানজটের সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থলে যায় গোঘাট থানার পুলিস। পাণ্ডুয়া স্টেশনে রেল অবরোধ হয়।
ভারত বনধে মিশ্র প্রভাব কল্যাণী শিল্পাঞ্চলে। সকাল থেকেই শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন। এখনও পর্যন্ত স্বাভাবিক রয়েছে ট্রেন পরিষেবা। কৃষ্ণনগরে বনধের সমর্থনে মিছিল বের হয় বাসস্ট্যান্ড ও পোস্ট অফিস মোড়ে। রাস্তা অবরোধ করেন বনধ সমর্থনকারীরা।
আরও পড়ুন: Petrol-Diesel Price Hike: টানা সাতদিন বাড়ল পেট্রোল-ডিজেলের
বসিরহাট মহকুমার সীমান্ত থেকে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ অঞ্চল, বসিরহাট শহরে বেশিরভাগ দোকানপাট খোলা। সুন্দরবনের নদীমাতৃক এলাকায় প্রত্যেক দিনের মতো যাত্রীরা আজও খেয়া পারাপার করছেন। ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর ভারত-বাংলাদেশের ঘোজাডাঙায় সীমান্ত বাণিজ্য চালু রয়েছে। পাশাপাশি কলকাতা-বাসন্তী হাইওয়েতে অন্য পাঁচটা দিনের মতো যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল। টাকি পর্যটন কেন্দ্রও খোলা রয়েছে। সেখানে পর্যটকরা রয়েছেন। অনেকেই বলছেন, কর্মনাশা ধর্মঘট মানুষের কাছে অভিশাপ হিসেবে সামনে দাঁড়িয়েছে। তাই সপ্তাহের প্রথম দিন বনধকে উপেক্ষা করেই সাধারণ মানুষ তাঁদের কর্মস্থলে গিয়েছেন।