কলকাতাঃ নয়া তিন ফৌজদারি আইন নিয়েও রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাতে জড়াল রাজভবন। এই আইনগুলি খতিয়ে দেখার জন্য রাজ্য সরকার সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বুধবার। কমিটির মাথায় রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীম রায়। আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক, অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, এজি কিশোর দত্ত প্রমুখও এই কমিটিতে রয়েছেন। এদিকে এই কমিটির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। কেন এই কমিটি গড়া হল, কমিটি কী কাজ করবে, তা জনাতে চেয়ে নবান্নের কাছে রিপোর্ট তলব করেছেন রাজ্যপাল। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, দেশের মধ্যে আলাদা দেশ হয়ে উঠতে পারে না পশ্চিমবঙ্গ। এই কমিটিকে বেআইনি বলে কটাক্ষ করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুর আপত্তিকে পাত্তা দিতে নারাজ রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
বুধবারই রাজ্য সরকার ওই কমিটির কথা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে নবান্ন। বৃহস্পতিবার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে ওই কমিটিকে বেআইনি বলে আখ্যা দিয়েছেন বিরোধী নেতা। রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা বলেন, আমরা কোনও পরামর্শ দিলে রাষ্ট্রপতি নিশ্চয়ই তা বিবেচনা করবেন। তিনি তাঁর দায়িত্ব ভালোই জানেন। কিন্তু শুভেন্দুবাবু তো এলওপি। তাই তিনি একটু বেশি বোঝেন, বেশি জানেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিক-পড়ুয়াদের বার্তা কেন্দ্রীয় সরকারের
শুভেন্দু লিখছেন, ১৬ জুলাই রাজ্য সরকার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে পরামর্শদাতা কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা এবং ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম সংশোধনের পরামর্শ দেওয়ার জন্য ওই কমিটি গঠন করা হয়েছে। ভারত সরকার ১ জুলাই থেকে নয়া ফৌজদারি আইনি চালু করেছে। রাজ্য স্তরে এই আইনের নাম বদল করা যায় কি না, তাও খতিয়ে দেখবে কমিটি।
শুভেন্দুর অভিযোগ, রাজ্য সরকারের এই ধরনের উদ্যোগ গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি লেখেন, এটা শুধু বেআইনি নয়, যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর পরিপন্থী। এই প্রচেষ্টা ভারতীয় সংসদ এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করছে। গত চার বছর ধরে সমাজের বিভিন্ন স্তরের সঙ্গে এই আইনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা কর হয়েছে। প্রতিটি রাজ্য সরকারের মত নেওয়া হয়েছে। সংসদে একবার পাশ হয়ে যাওয়া আইন পর্যালোচনা করার অধিকার বা ক্ষমতা রাজ্য সরকারের নেই। একটি প্রাদেশিক সরকারের প্রধান হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সীমা লঙ্ঘন করছেন।