গুরগাঁও: করোনা কেড়ে নিয়েছে অনেকের প্রিয় মানুষকে, অনেকের জীবনের মূল্যবান সময়ও। সকলকেই একটা সময় পর্যন্ত গৃহবন্দি থাকতে হয়েছে।তবে কোলের সন্তানকে (Child) করোনার থেকে রক্ষা করার জন্য এক বেনজির কাণ্ড ঘটালেন গুরগাঁওয়ের (Gurgaon) মুনমুন মাঝি। টানা তিন বছর সন্তানকে নিয়ে ঘরবন্দি থাকলেন মুনমুন। অবশেষে পুলিশ (Police) ঘরের দরজা ভেঙে ওঁদের বার করে আনে।
মুনমুনের স্বামী সুজন মাঝি জানান, ২০২০ সালে যখন করোনার (Covid) প্রকোপ তুঙ্গে, সেই সময় সংক্রমণ এড়াতে ১০ বছরের ছেলেকে নিয়ে দরজা বন্ধ করেছিলেন স্ত্রী। এরপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে মানুষ নিজের ছন্দে ফিরতে শুরু করে।কিন্তু মুনমুন ছেলেকে নিয়ে ঘর থেকে বেরতে রাজি হয় না কিছুতেই। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার সুজন জানান, তাঁর ওয়ার্ক ফ্রম হোম (Work From Home) শেষ হলে তিনি কর্মস্থলে যেতে শুরু করেন। তবে প্রথম দিন কর্মস্থলে যাওয়ার পরই মুনমুন তাঁকে আর বাড়িতে ঢুকতে দেননি। তিনি বাধ্য হয়ে বাড়ির পাশে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে থাকেন।এভাবে কেটে গিয়েছে টানা তিন বছর। সন্তানকে একবারের জন্যও ঘর থেকে বার করেননি মুনমুন।
সুজন বলেন, অনেকবার স্ত্রীকে বুঝিয়েছি, কাজ হয়নি। বন্ধুদের দিয়ে বুঝিয়েছি, এমচকী ওঁর বাবা-মাকে দিয়ে বহুবার বলানোর পরও কোনও কাজ হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হই।
গুরগাঁওয়ের চক্করপুর থানার সাব ইন্সপেক্টর প্রবীণ কুমার বলেন, প্রথমে আমি ব্যাপারটিকে খুব একটা পাত্তা দিইনি। তবে যখন বুঝলাম সুজন সত্যিই সমস্যায় পড়েছেন, তখন আমি তাঁকে সাহায্য করি তিনি আমাকে মুনমুনের সঙ্গে ভিডিয়ো কলে কথা বলিয়ে দেন। তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করি, ওঁদের ছোট সন্তানের সঙ্গেও কথা হয়। সে কত দিন সূর্যের আলো দেখেনি। কিন্তু তাঁকে কোনওভাবে বোঝানো সম্ভব হয়নি। তিনি কিছুতেই দরজা খুলতে রাজি হননি।অবশেষে দরজা ভেঙে ওঁদের বার করতে বাধ্য হই।সূত্রের খবর দুজনেরই এখন কাউন্সিলিং ছলছে।নিয়মিত ডাক্তারও দেখানো হচ্ছে ওঁদের, এমনটাই জানান সুজন।