কুড়ি বছর আগে ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গার সময় তাঁর সেই তরোয়াল হাতে আস্ফালনের ছবি এখনও মনে আছে অনেকের। যেন দাঙ্গার মুখ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। শিঁরদাড়া দিয়ে ঠান্ডা স্রোত বয়ে যাওয়া সেই ছবি তখন ছড়িয়ে পড়েছিল দেশ-বিদেশের নানা পত্র-পত্রিকায়। আর গুজরাট নির্বাচনের আগে রাজ্যে ক্ষমতাসীন বিজেপি-কে (BJP) অস্বস্তিতে ফেলে অশোক পারমার (Ashok Parmar) জানিয়ে দিলেন, গোধরা হিংসার পরবর্তীতে ছড়িয়ে পড়া দাঙ্গায় হিন্দু কিংবা মুসলিম, কারোর কোনও লাভ হয়নি। দাঙ্গায় যদি কেউ লাভবান হয়ে থাকেন, তবে তিনি হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)।
অশোক পারমারের দাবি, গুজরাটে ওই দাঙ্গার ফলে মোদির নাম ছড়িয়ে পড়ল আর তাঁর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার রাস্তা আরও সুবিস্তৃত হল। তাঁর কথায়, “হিন্দুত্বের পক্ষে সওয়াল করে গুজরাটে দশ বছর মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন মোদি। আর ওই হিন্দুত্বের জিগিরই তাঁর আরও উন্নতি হল। তিনি মুখ্যমন্ত্রী থেকে প্রধানমন্ত্রী (Prime Minister) হয়ে হলেন। অথচ ওই দাঙ্গায় দুই সম্প্রদায়ের মানুষের কোনও উন্নতি হল না!”
এমন একটা সময় ছিল যখন আরএসএস এবং বিজেপি কর্মীরা ছাড়া মোদি রাজনৈতিক নেতা হিসাবে আর কারোর কাছেই আলাদা করে গুরুত্ব পেতেন না, জানিয়েছেন পারমার। তাঁর কথায়, কিন্তু ২০০২ সালে গোধরা কাণ্ডের (Godhra Incident) পর গোটা গুজরাট জুড়ে যে দাঙ্গা শুরু হল তার ফলেই মোদি একজন নেতা হিসাবে নিজের গুরুত্ব অনেকটাই বাড়িয়ে ফেললেন। একইসঙ্গে মোদির গুজরাট মডেলের (Gujarat Model) সমালোচনা করে পারমার বলেন, “গুজরাট মডেলে রাজ্যের গরীব মানুষ, দলিত এবং মুসলিমদের কোনও লাভ হয়নি। তাঁদের কাছে এই মডেলের কোনও মূল্য নেই।”
আর তাঁর মুখের সেই পুরনো সেই ছবিটির প্রসঙ্গে পারমার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “ছবিটা যখন তোলা হয়েছিল, তখন আমি বিজেপি কিংবা আরএসএস কারোর সমর্থক ছিলাম না। যদিও এই মুখটা জনপ্রিয় হয়েছিল। কিন্তু কোনও দলিত সম্প্রদায়ের মানুষের মুখ এভাবে জনপ্রিয়তা হয়ে যায় তা বিজেপি-আরএসএস মোটেই পছন্দ করেনি। জেনে রাখুন, ওরা এখনও দলিত সম্প্রদায়ের মানুষকে হিন্দু হিসাবে মেনে নিতে পারে না।”