কিভ: সময়সীমা সন্ধে ৬টা৷ ইউক্রেনের সময়৷ ভারতীয় সময় রাত সাড়ে ৯টা৷
তার মধ্যেই এলাকা ফাঁকা করতে হবে৷ আটকে থাকা প্রতিটি দেশের নাগরিকদের (Indian Students Stranded in Ukraine) সরে যেতে বলা হল৷ নিরাপদ দূরত্বে৷ যতটা সম্ভব৷ পেসোচিন, বাবায়ে, বেজেলিয়ু দোভকার দিকে চলে যেতে বলা হল ভারতীয়দের৷ নির্দেশ দিল নয়াদিল্লি৷ পার্শ্ববর্তী এই তিন জায়গাই নাকি এখন একটু নিরাপদ৷ অন্তত দিল্লির অভিমত তাই৷ যেমন, পেসোচিন৷ ১১.৬ কিমি দূরত্বের এই জায়গাটিতে যেতে সড়ক পথে লাগে ১৭ মিনিট মতো৷ ৪০ মিনিটে পৌঁছে যাওয়া যায় ট্রেনে৷ খারকিভ থেকে হাঁটা শুরু করলে দু’ঘণ্টা লাগে৷ আবার রাশিয়ার খুব কাছে বেজেলিয়ু দোভকা যেতে সড়কপথে দেড় ঘণ্টার বেশি সময় লাগবে৷ বোঝাই যাচ্ছে খারকিভ থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছনো যাবে এমন এলাকার কথাই উল্লেখ করেছে নয়াদিল্লি৷ পরিস্থিতি গুরুত্ব বোঝা গিয়েছে দ্বিতীয় দফার উপদেশাবলী থেকে ৷ যেখানে গাড়ি-ট্রেন কিছু না পেলে হেঁটে নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে ৷
কিন্তু কেন?
মঙ্গলবার সকাল ৮টার রুশ হামলার স্মৃতি এখনও টাটকা৷ যে হামলা ২১ বছরেই থামিয়ে দিয়েছে এক নবীনের পথচলা৷ যার পর নয়াদিল্লির কূটনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠছে৷ আসলে অতি অল্প খরচায় চিকিৎসা শাস্ত্র পড়ার জন্য ভারত-সহ নানা দেশের পড়ুয়ারা পাড়ি দেন ইউক্রেনে৷ আমেরিকা যুদ্ধের আশঙ্কা করে আগেই তাদের নাগরিকদের দেশে ফিরিয়েছে৷ হয়তো ‘মিত্র’ মস্কোর কথায় বিশ্বাস রেখে সমস্যায় পড়তে হয়েছে নয়াদিল্লিকে৷ বন্ধু পুতিন আশ্বাস দিয়েছিলেন ভারতীয়রা সুরক্ষিত থাকবেন রুশ হামলায়৷ জেলেনস্কি প্রশাসনও কথা দিয়েছিল খয়েরি চামড়ার প্রতি তারা ‘নির্দয়’ হবে না৷ বাস্তব কিন্তু অন্য কথাই বলছে৷ রুশ সেনা কিভ-খারকিভে ঢুকে সহজেই হাত বাড়িয়েছে মেয়েদের দিকে৷ তালিকা থেকে বাদ যায়নি খয়েরি চামড়াও৷ পরিস্থিতি গুরুতর বুঝে নাগরিকদের দেশে ফেরার তোড়জোর শুরু করেছে দিল্লি৷
আরও পড়ুন: Indian dies in Ukraine: ইউক্রেনে মৃত্যু দ্বিতীয় ভারতীয় ছাত্রের, দেহ ফেরাতে কেন্দ্রের দ্বারস্থ বাবা
দিন দুয়েক আগে ইউক্রেন সীমান্তে ৪০ মাইল দীর্ঘ রুশ সেনার কনভয় লক্ষ্য করা গিয়েছিল৷ তারপরই খারকিভে মিসাইল হানা৷ বুধবার হঠাৎ করেই সন্ধে ৬টার সময়সীমা৷ ভারতীয়দের জরুরি ভিত্তিতে নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার নির্দেশ৷ তাহলে কী আর মাত্র কয়েকঘণ্টা? তারপরই কি আরও বড় কিছু পরিকল্পনা রয়েছে? রুশ সাঁজোয়া গাড়িগুলোর চাকা কি গড়াতে শুরু করে দিল? মঙ্গলবার প্রশাসনিক ভবনের সামনে যা দেখা গিয়েছিল তা কি কেবলই ট্রেলার ছিল? মস্কো কি আরও বড়সড় হামলার পরিকল্পনা করেছে? নয়াদিল্লি কি এমনই কোনও বার্তা কূটনৈতিক স্তরে পেয়েছে? কিরণ রিজুজু ভারতীয় পতাকা ওড়ানোর কথা বলেছিলেন৷ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নয়াদিল্লি ভারতীয়দের সরে যেতে বলল৷ আরও বড় হামলার বা খারকিভ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ কি শুরু করে দিয়েছে মস্কো৷ হয়তো ভারতীয় সময় বুধবার রাতের মধ্যেই এমন ছবি স্পষ্ট হয়ে যাবে৷
আরও পড়ুন: Mission Ganga: জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খারকিভ ছাড়তে শুরু করল ভারতীয় পড়ুয়ারা
যে এলাকাগুলো নয়াদিল্লি বাতলে দিয়েছে পড়ুয়াদের জন্য তা ঘিরেও বেশ জল্পনা তৈরি হয়েছে৷ নয়াদিল্লি-মস্কো কৌশলগত অংশিদারিত্বে আবদ্ধ৷ সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও অস্বীকার করলেও নয়াদিল্লি ওয়াশিংটনও একই সম্পর্কে আবদ্ধ৷ যেভাবে ভারতীয় পড়ুয়াদের রাশিয়ার অভিমুখে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে তারপরই গুঞ্জন শুরু হয়েছে, খুব সম্ভবত রাশিয়া হয়েই ভারতের আকাশে ঢুকবে ইউক্রেনে আটকে থাকা পড়ুয়াদের বিমান৷ যদিও সবকিছুই অনুমান৷ নয়াদিল্লি সরকারি ভাবে কিছুই জানায়নি৷