কলকাতা: শিল্পী শুভাপ্রসন্ন (Subhaprasanna) তৃণমূলের (TMC) কেউ নন বলে দাবি করলেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক এবং মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। তাঁর মতে, শুভাপ্রসন্ন নিছকই তৃণমূলের একজন শুভানুধ্যায়ী। তার বেশি কিছু নয়। ২১ ফেব্রুয়ারি দেশপ্রিয় পার্কে আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসের (International Mother Language Day) অনুষ্ঠানে কিছু মন্তব্য ঘিরে শুভাপ্রসন্ন বিতর্কের মুখে পড়েছেন। ওই সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বলেন, পানি দাওয়াতের মতো শব্দগুলিকেও বাংলা ভাষা হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে আমি দোষের কিছু দেখি না। মমতা বলেন, দাওয়াত শব্দটি ওপার বাংলা থেকে এসেছে। সেখান থেকে যাঁরা এই বাংলায় এসেছেন তাঁদের মুখ থেকে তো আর দাওয়াত শব্দটি সরানো যাবে না। ছোটবেলা থেকেই তাঁরা এই শব্দে অভ্যস্ত। এ রকম আরও অনেক শব্দ রয়েছে, যেগুলিকে বাংলা ভাষায় জায়গা দেওয়া যায়।
মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ শিল্পী শুভাপ্রসন্ন ওই মঞ্চেই এ ব্যাপারে তাঁর আপত্তির কথা জানান। পরবর্তীকালে একটি সংবাদমাধ্যমে শুভাপ্রসন্ন বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনৈতিক কারণেই এ কথা বলেছেন। এতেই বেদম চটেছেন কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, একটি মামুলি বিষয় নিয়ে শুভাপ্রসন্ন বড় বেশি বাড়াবাড়ি করছেন। উনি হয়ত আবার কোনও কমিটিতে ঢুকতে চান। কিংবা তিনি হয়ত জমি চান। আমাদের দলের কারও শুভাপ্রসন্নের সঙ্গে কথা বলা উচিত, তাঁর কোনও জমি বা কমিটির পদ লাগবে কি না। তাহলেই তো সব ঝামেলা মিটে যায়। কুণালের আরও কটাক্ষ, শুভাপ্রসন্ন নিজের শিল্প সংস্থার নাম তো রেখেছেন আর্টস একর। তখন তাঁর বাংলা ভাষা ব্যবহারের কথা মনে ছিল না। হঠাৎ বাংলা ও বাঙালির ধ্বজা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন উনি।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের আগে থেকেই পরিবর্তনের রাজ্যে পরিবর্তনের ডাক দিয়ে যেসব শিল্পী, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, শুভাপ্রসন্ন তাঁদের মধ্যে অগ্রগণ্য। ওই সময় থেকে তিনি সর্বদাই বাম বিরোধী আন্দোলনে মমতার সঙ্গী ছিলেন। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম পর্বে বাম বিরোধিতায় আগমার্কা ভূমিকা ছিল প্রবীণ এই শিল্পীর। এনডিএ আমলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন রেলের বিভিন্ন কমিটিতে শুভাপ্রসন্নর (Subhaprasanna) মতো অনেক বুদ্ধিজীবীকে জায়গা করে দিয়েছিলেন। রাজ্যে পালা বদলের পরও বিভিন্ন কমিটিতে স্থান হয়েছে শুভাপ্রসন্নদের। এহেন মমতা ঘনিষ্ঠ শিল্পী সম্পর্কে হঠাৎ কুণাল এসব বললেন কেন, তা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেই চর্চা শুরু হয়েছে।