কলকাতা: বৃহস্পতিবার কৌশিকী অমাবস্যা (Kaushiki Amavasya)। তারাপীঠের (Tarapith) পাশাপাশি একান্নপীঠের অন্যতম সতীপীঠ কঙ্কালীতলায় (Kaushiki Temple) বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। বুধবার থেকেই কঙ্কালীতলায় আসতে শুরু করেন দূর-দূরান্তের ভক্ত থেকে শুরু করেছেন সাধু-সন্ন্যাসীরা। মন্দির চত্বরে ও পার্শ্ববর্তী জায়গায় পরিচ্ছন্নতার উপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ভক্তদের সুবিধার্থে খাওয়াদাওয়ার জন্য পৃথক জায়গার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এই বিশেষ তিথিতে মায়ের ভোগে থাকবে মাছ। সেই মাছ আগত ভক্তদের খাওয়ানো হবে।
জানা গিয়েছে, কৌশিকী অমাবস্যা উপলক্ষে তিনদিন ধরে প্রতিদিন দুবেলা প্রায় ৪০ হাজার ভাণ্ডারা দেওয়া হবে। অনুমান করা হচ্ছে, সেই ভাণ্ডারার জন্য কয়েক লাখ মানুষের সমাগম হবে এখানে। প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে বাউল, লোকগীতি সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। মন্দিরে সুদৃশ্য আলোকসজ্জার ব্যবস্থা থাকছে। এছাড়াও আগত ভক্তদের যাতে কোনওরকম অসুবিধা না হয়, তার জন্য পর্যাপ্ত পানীয় জল, ডাক্তারি পরীক্ষার ব্যবস্থা সহ অ্যাম্বুলেন্স থাকছে। কোনওরকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ও ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশের সঙ্গে বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবকের ব্যবস্থা করা হয়েছে পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে।
আরও পড়ুন:স্বর্ণযুগের গানের অনুষ্ঠান শহরে
কঙ্কালীতলা সতীপীঠের ৫১ তম পীঠ। কথিত আছে, সতীর দেহত্যাগের পর শিবের পিঠ থেকে পড়েছিল কাঁখাল এখানেই। যে স্থানে এটি পড়ে সেখানে মাটি ধসে গিয়ে গর্ত হয়ে যায়। মন্দিরের পাশেই বয়ে যাওয়া কোপাই নদীর জল সেই গর্তে এসে কুণ্ডের সৃষ্টি হয়। জনশ্রুতি অনুযায়ী, এই কুণ্ডের সঙ্গে কাশীর মণিকর্ণিকা ঘাটের সরাসরি যোগ রয়েছে। বৃহস্পতিবার কৌশিকী অমাবস্যায় এই কুণ্ডের চারপাশে যজ্ঞ করবেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা সাধু-সন্ন্যাসীরা। তার সঙ্গেই কঙ্কালীতলা মহাশ্মশানেও যজ্ঞ করা হয়। অত্যন্ত পবিত্র ও জাগ্রত কঙ্কালীতলা সতীপীঠে আগত ভক্ত ও দর্শনার্থীদের যাতে কোনও ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হতে না হয়, তার জন্য সমস্তরকম ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকালে মাকে স্নান করিয়ে সংকল্প করানো হবে। এদিন রাত থেকে শুরু হবে যাগ-যজ্ঞ। চলবে সারারাত ধরে। প্রচলিত মিথ অনুযায়ী, এদিন মায়ের আবির্ভাব হয় কঙ্কালীতলায়। এই পুণ্য তিথিতে মনস্কামনা পূরণে ভক্তরা হাজির হন সেখানে।
বীরভূম জেলার অন্যতম পর্যটনক্ষেত্র শান্তিনিকেতন। রেলপথে বোলপুর-শান্তিনিকেতনের পরের স্টেশন প্রান্তিক। এই প্রান্তিক স্টেশনকে পাশ কাটিয়ে শান্তিনিকেতন থেকে আট কিলোমিটার দূরত্বে কঙ্কালীতলা।