কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: ধোঁয়া ওঠা ব্রেজিলীয় কফির উত্তাপ। কোকোর তরতাজা চনমনে গন্ধ। মেশিনের বোতামে চাপ দিলেই স্রোতের মত বেরিয়ে আসছে এসপ্রেসো কফি। একের পর এক। বিরামহীন পরিবেশন করা হচ্ছে আধুনিক কফিখানার কফিপ্রেমীদের। জানেন কি আধুনিক এই কফি মেশিনের একেবারে গোড়ার কারিগর কে? কেন এই এসপ্রেসো মেশিন তৈরির ভাবনা তাঁর মাথায় এসেছিল? ৬ জুন। ঐতিহাসিক সেই কারিগরের জন্মদিনে শ্রদ্ধা জানাল গুগল ডুডল। অ্যাঞ্জেলো মোরিয়োন্দো।
আঠারো শতকের একেবারে মাঝামাঝি। ১৮৫১ সালে ইতালির তুরিন শহরে জন্মে ছিলেন অ্যাঞ্জেলো মোরিয়োন্দো। পরিবারের পূর্বসূরিরা প্রত্যেকেই বণিক। বাবা, ঠাকুরদা সবাই নিত্যনতুন উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসায় লক্ষ্মীলাভ করেছেন। ঠাকুরদা তৈরি করেছিলেন এক লিকার সংস্থা। মদ প্রস্তুত থেকে বিক্রি, রফতানি সবেতেই সফল। পরে মোরিয়ান্দোর বাবা সেই ব্যবসার হাল ধরেন। লিকার সংস্থা চালানোর সঙ্গেই তৈরি হল একটি চকোলেট প্রস্তুতকারী সংস্থা। পরে যা ‘মোরিয়োন্দো অ্যান্ড গারিগ্লিও’ নামে জনপ্রিয় হয়।
পারিবারিক সূত্রেই হয়ত নতুন কিছু করবার তাগিদ তাড়া করে বেড়াত অ্যাঞ্জেলো মোরিয়োন্দোকে। ব্যবসায় নেমেই কিনে ফেললেন শহরের নামজাদা হোটেল। রোমের একটি মার্কিন পানশালার মালিকও হলেন মোরিয়োন্দো। হোটেল আর পানশালার ব্যবসা চালাতে গিয়ে মোরিয়োন্দোর দিমাগে বাত্তি জ্বলে উঠল। ভাবলেন, এরকম যদি একটা মেশিন তৈরি করা যায়, যে মেশিনের সাহায্যে পরপর কফি তৈরি করা যাবে। বেশি সংখ্যক গ্রাহককে কফি পরিবেশন করে প্রতিযোগিতার বাজারে এগিয়ে থাকা যাবে। যেমন ভাবনা তেমনি কাজ।
আরও পড়ুন- Beacon in the Galaxy: মহাশূন্যে বঙ্কুবাবুর বন্ধুদের খুঁজতে সংকেতলিপি লিখলেন বিজ্ঞানীরা
তুরিনে শিল্প বাণিজ্য সম্মেলন বসেছে। ১৮৮৪ সাল। মোরিয়োন্দো সেখানে তাঁর তৈরি এসপ্রেসো মেশিন হাতেকলমে কীভাবে ব্যবহার করতে হয় তা দেখালেন। সবাই একেবারে তাজ্জব। শিল্প-সম্মেলনের উদ্যোক্তারা ব্রোঞ্জ পদকে সম্মানিত করলেন মোরিয়োন্দোকে। পরের ৬ বছরের জন্য ওই মেশিনের স্বত্বও পেয়ে গেলেন মোরিয়োন্দো। ইতিহাস জানে মোরিয়োন্দো কিন্তু কোনও দিন তাঁর তৈরি এই মেশিনকে বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদন করেননি। শুধু নিজের ব্যবসার কাজে লাগিয়েছিলেন।