আপনি কি মোদি সরকারের সমালোচক? আপনি কি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেন? তা হলে আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায় সাবস্ক্রাইবার কমে যেতে পারে। বিশেষ একটি সোশ্যাল মিডিয়ায় রিচ কমে যেতে পারে।
এনডিটিভির পদত্যাগী সাংবাদিক রবীশ কুমারের অভিজ্ঞতা অনেকটা সেরকম। একই অভিজ্ঞতা কলকাতা টিভিরও। কলকাতা টিভি সবসময় খবরে বিশ্বাসী, সেটা সরকারের পক্ষে হোক বা বিপক্ষে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের ভুল কোনও পদক্ষেপের খবর করলেই বা কোনও সমালোচনা করলে ফেসবুক রিচও কমিয়ে দেওয়া হয়। কলকাতা টিভির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজের ফলোয়ার সংখ্যা প্রায় সাত লক্ষ। কিন্তু কোনও খবর পোস্ট করলে রিচ হয় ২০০ থেকে হাজারের মধ্যে। এটা কোন মেকানিজমে হয়? আপনারা কি জানেন?
এ তো গেল আমাদের কথা। যাঁরা যাঁরা মোদি সরকারের সমালোচনা করেছেন, তাঁদেরও একই অবস্থা। মঙ্গলবার একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন সাংবাদিক রবীশ কুমার, যিনি এনডিটিভিতে ছিলেন। ভিডিয়ো বার্তায় তিনি জানিয়েছেন, ফেসবুকের তাঁর রিচ কীভাবে কমেছে। একটু বিস্তারিত আলোচনা করা যাক—
সম্প্রতি রবীশ কুমারের ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা বেড়ে চার মিলিয়ন (৪০ লক্ষ) হয়েছে। তিনি দাবি করছেন, গত ২৮ দিনেই সাবস্ক্রাইবার সাত লক্ষের বেশি বেড়েছে। এর জন্য তিনি সকলকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন। কিন্তু ফেসবুকের হাল কী? রবীশ কুমারের নিজের কথায়, ফেসবুকের গাড়ির গতি বাড়ছে না। আমি এনডিটিভি থেকে ইস্তফা দেওয়ার সময় ফেসবুকের রিচ যা ছিল, এখনও তাই আছে। তার কাঁটা নড়ছে না।
এই তথ্যটা শুনে আপনাদের কি মনে হচ্ছে না, ডাল মে কুছ কালা হ্যায়…
আরও পড়ুন: El Nino: তিন বছর পর ফিরছে ‘এল নিনো’, এবছর পড়তে চলেছে মারাত্মক প্রভাব!
রবীশ কুমার তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে বলেন, ইস্তফা দেওয়ার আগে আমার ফেসবুকের ফলোয়ার ছিল ২.৯ মিলিয়ন। এখনও সেটাই রয়েছে। আমি ইউটিউবে যে ভিডিয়োর এক লক্ষ ভিউ পাই, সেই একই ভিডিয়োর ভিউ ফেসবুকে অনেক কম পাই। আসলে এই ফেসবুকের অঙ্কটা এখনও আমার বুঝে ওঠা হয়নি। তবে এই নিয়ে কাজ চলছে। তিনি বলেন, এই কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত রবীশ কুমার নামের অন্য কোনও পেজ ভুলবশত লাইক বা ফলো করবেন না।
ইউটিউব চ্যানেলে রবীশ গোদি মিডিয়াকে এক হাত নেন। সাধারণ মানুষের উদ্দেশে তিনি বলেন, সাবধান, গোদি মিডিয়া কেউ দেখবেন না। এর থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখুন। এই গোদি মিডিয়া সমানে হিংসা ছড়াচ্ছে। হিংসার বাতাবরণ তৈরি করছে। তাঁর আরও অভিযোগ, গোদি মিডিয়া আসলে একটা নেশার মতো. যা সহজে কাটার নয়। এই নেশা কাটানোর জন্য জায়গায় জায়গায় পুনর্বাসন কেন্দ্র গড়ে তুলতে হবে।
রবীশ কুমার বলেন, মানুষ বাড়ির বাইরে নর্দমা তৈরি করে। আর গোদি মিডিয়া ঘরের মধ্যে নর্দমা তৈরি করে। তার সমস্ত নোংরা ঘরকে দূষিত এবং বিষাক্ত করে তোলে। তাঁর দাবি, গোদি মিডিয়াকে সাবস্ক্রাইব করা বন্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, এখন অনেকেই গোদি মিডিয়ার বিকল্প হিসেবে অন্য সাংবাদিক, যাঁরা স্বাধীনভাবে কাজ করছেন, তাঁদের দিকে ঝুঁকছেন। সোশ্যাল মিডিয়ার সার্চ ইঞ্জিনের একটা কুপ্রভাব আছে। তাতে অনেকে পা দিয়ে ফেলছেন। ভুলেও গোদি মিডিয়ার পর্দায় চোখ রাখবেন না।
এই প্রবীণ সাংবাদিক আরও বলেন, গোডি মিডিয়া যেভাবে গঙ্গাবিলাসকে দেশের বিকাশ বলে দেখানোর চেষ্টা করছে, তা ঠিক নয়। জনতার প্রতি তাঁর পরামর্শ, ভালো বই পড়ুন, ভালো তথ্যচিত্র দেখুন। তবে গোদি মিডিয়া দেখবেন না।