নয়াদিল্লি: আগামী ১ ফেব্রুয়ারি সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের জন্য কেন্দ্রীয় বাজেট (Union Budget) পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন (Finance Minister Nirmala Sitaraman)। কেন্দ্র সরকার এবার কোন কোন ক্ষেত্রের দিকে নজর দেয় বেশি করে, তা নিয়ে কৌতূহল ইতিমধ্যেই তুঙ্গে। শিল্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আসন্ন বাজেটে কেন্দ্র সরকারের বিশেষ নজর দেওয়া উচিত স্বাস্থ্য-প্রযুক্তি এবং মেডটেক সেক্টরে (Health-Tech and MedTech Sectors)। ওই দুই ক্ষেত্রে অর্থ-তহবিল বরাদ্দ (Fund Allocation) এবং পরিকাঠামো বৃদ্ধি (Infrastructures Enhancement) করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিচ্ছেন তাঁরা।
২০২১ সালে হওয়া অর্থনৈতিক সমীক্ষায় (Economic Survey) সুপারিশ করা হয়েছিল, দেশের জিডিপির অন্তত ২.৫-৩ শতাংশ স্বাস্থ্যক্ষেত্রে (Health Sector) খরচ হওয়া উচিত। সেই সঙ্গে এটাও উল্লেখ করা হয়েছিল, বিগত ১৫ বছরে বেসরকারি স্বাস্থ্য বীমা ব্যয় (Private Health Insurance Expenditure) ১.৬ শতাংশ (২০০৪-০৫ অর্থবর্ষ) থেকে ৬.৬ শতাংশ (২০১৮-১৯ অর্থবর্ষ) বেড়েছে। বিশেষজ্ঞ মহলের বক্তব্য, আগের তুলনায় স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে কেন্দ্র সরকার যেমন বরাদ্দ অর্থের পরিমাণ বাড়িয়েছে খরচের জন্য, তেমনই দেশবাসীর পকেটেও টান পড়েছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা মহার্ঘ হয়েছে ভারতে। করোনা প্যানডেমিক (Corona Pandemic) পর্বে সাধারণ মানুষের চিকিৎসা খরচ একলাফে অনেকটাই বেড়েছে। বিশেষ করে অপ্রত্যাশিত চিকিৎসা খরচ (Unexpected Treatment Expenditure) দেশের খেটে খাওয়া মানুষ ও আমজনতার কাছে একটা বড় ধাক্কা। বিশেষজ্ঞ মহলের বক্তব্য, আগামী কেন্দ্রীয় বাজেটে (Union Budget) স্বাস্থ্য খাতে খরচ বাড়ানো নিয়ে ভাবা উচিত কেন্দ্রের। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে অর্থ বরাদ্দের উদ্দেশ্যেই হল দেশবাসীকে রক্ষা করা এবং সাশ্রয়ী চিকিৎসা (Affordable Treatment) প্রদান করা।
আরও পড়ুন: Rahul Gandhi on Bharat Jodo Yatra: ভারত জোড়ো যাত্রা শেষে রাহুল বললেন, যাত্রা শুরু হল
আয়ুষ্মান ভারত ডিজিটাল মিশন এবং টেলিমেডিসিন
দেশের স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল বলছে, আয়ুষমান ভারত ডিজিটাল মিশন (Ayushman Bharat Digital Mission)-এর জন্য প্ল্যাটফর্ম তৈরি এবং ন্যাশনাল টেলি মেন্টাল হেলথ প্রোগ্রাম (National Tele Mental Health Program) চালু করার প্রচেষ্টা নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ, কিন্তু অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ করা প্রয়োজন, তবেই স্বাস্থ্যসেবা ক্ষেত্রে, বিশেষ করে টেলিমেডিসিন (Telemedicine) পরিষেবায় গতি আসবে।
অর্থ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী স্বাস্থ্যসেবা ক্ষেত্রে ব্যয় বৃদ্ধি করেছে কেন্দ্র। লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে ২০২৫ সালের মধ্যে স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় যাতে দেশের জিডিপির ২.৫ শতাংশ করা যায়। গত বছর স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ৮৪,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল কেন্দ্র, এবার তা বেড়ে ৮৬,০০০ হাজার কোটি হওয়ার প্রত্যাশা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে ভারতের ডিজিটাল হেলথকেয়ার মার্কেট (Digital Healthcare Market of India) ছিল ১১৬.৬১ বিনিময় টাকা। প্রত্যাশা রয়েছে, ২০১৯-২০২৪ সময় পর্বে এটি বেড়ে ৪৮৫.৪৩ বিলিয়ন ভারতীয় মুদ্রায় পৌঁছাবে। প্রসার, পরিষেবা ও সরকার ও বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধির ফলে দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যত বেশি মাত্রায় প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন (Technological Innovations) ব্যবহার করা হবে, তত বেশি বৃদ্ধি পাবে এই হেলথটেক ও মেডটেক ক্ষেত্র। তাই সরকারের উচিত স্বাস্থ্যসেবা ক্ষেত্রে ব্যয় বৃদ্ধি ঘটিয়ে এই দুই ক্ষেত্রে আরও বেশি করে নজর দেওয়া।