নয়াদিল্লি: আটক অথবা হেফাজতে থাকা অভিযুক্ত কোনও মহিলার কুমারীত্ব পরীক্ষা (Virginity Test) যৌনতামূলক এবং অমানবিক, জানাল দিল্লি হাইকোর্ট (Delhi High Court)। ভারতীয় সংবিধানের ২১ ধারা অনুযায়ী এই কাজ অসাংবিধানিক এবং সংশ্লিষ্ট মহিলার মর্যাদা লঙ্ঘন করে। বিচারপতি সাবর্ণকান্ত (Sawarna Kanta Sharma) শর্মা এই রায় দিয়েছেন। মঙ্গলবার আদালত জানায়, কুমারীত্ব পরীক্ষা আধুনিকও নয়, বিজ্ঞানসম্মতও নয়। বরং তা একেবারেই সেকেলে এবং আধুনিক বিজ্ঞান ও চিকিৎসা শাস্ত্র এই পরীক্ষা অনুমোদন করে না।
দু’ ধরনের ক্ষেত্রে কুমারীত্ব পরীক্ষার প্রসঙ্গ আসতে পারে। এক, কোনও মহিলার যৌন নিগ্রহ (Sexual Assault) হলে অথবা দুই, কোনও মহিলার অপরাধে জড়িত থাকার সম্ভাবনা থাকলে। আদালত এও জানিয়েছে, যৌন নিগ্রহের ঘটনায় কুমারীত্ব পরীক্ষা অসাংবিধানিক কিন্তু অভিযুক্ত মহিলার ক্ষেত্রে তা সাংবিধানিক, এমন চিন্তাধারা বিকৃত এবং সংবিধানের ২১ নম্বর ধারার পরিপন্থী।
আরও পড়ুন: Mumbai Airport Threat Call: মুম্বই বিমানবন্দরে ফোন, উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের নাম করে
বিচারপতি শর্মা বলেন, রাষ্ট্র (State) কখনওই এক ব্যক্তির মর্যাদা লঙ্ঘনকারী এই পরীক্ষা অবলম্বন করতে পারে না। ২১ নম্বর ধারা অনুযায়ী, তার বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে সত্য জানার জন্য এমন পরীক্ষা সেই ব্যক্তির অধিকারকে লঙ্ঘন করবে।
১৯৯২ সালের সিস্টার অভয়া হত্যাকাণ্ডে (Sister Abhaya) অভিযুক্ত সিস্টার সেফির (Sister Sephy) কুমারীত্ব পরীক্ষা করেছিল সিবিআই (CBI)। সেই পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সিস্টার সেফি। সেই মামলার শুনানিতেই এই রায় দেয় দিল্লি হাইকোর্ট। এক্ষেত্রে ভারতীয় দণ্ডবিধির (CrPc) ৫৩ ধারার উল্লেখ করেছেন বিচারপতি শর্মা। এই ধারায় বলা হয়েছে, কোনও অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি এমন ধরনের অপরাধ করে থাকেন, যেখানে এই পরীক্ষা সত্য উদঘাটন করতে পারবে, সেক্ষেত্রে কুমারীত্ব পরীক্ষা করা যেতে পারে। কিন্তু আধুনিক চিকিৎসা শাস্ত্র কোথাও এমন ব্যাখ্যা দেয়নি যে এই পরীক্ষার ফলে অপরাধের স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যাবে। ৫৩ ধারায় বলা হয়েছে, ওই পরীক্ষা অতি অবশ্যই আধুনিক এবং বিজ্ঞানসম্মত হতে হবে।
শেয়ার করুন