কলকাতা: রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) সাংসদ পদ (MP) খারিজ কি সব বিজেপি বিরোধী দলগুলিকে এক ছাতার তলায় নিয়ে এল? তৃণমূল-সহ সব বিরোধী দলের নেতাদের তাৎক্ষণিক প্রক্রিয়ায় সেই প্রশ্নই সামনে এসে পড়েছে। দুদিন আগেও লোকসভার অধিবেশন (Parliament Session) নিয়ে বিরোধীদের (Opposition) মধ্যে এত মিল ছিল না। কংগ্রেসের নেতৃত্বে ১৬টি বিরোধী দল যখন একত্রে কর্মসূচি নিচ্ছিল, তখনও তৃণমূল (TMC), সমাজবাদী পার্টি (SP), বিএসআরের (BSR) মতো রাজনৈতিক দলগুলি আলাদা ছিল। কিন্তু শুক্রবার কংগ্রেস (Congress) নেতা রাহুলের সাংসদ পদ খারিজের ঘোষণাই সব দলকে মিলিয়ে দিল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
যে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের এখন অনেক দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে, সেই তৃণমূলের শীর্ষনেত্রী, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী (Chief Minister of West Bengal) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) রাহুলের সাংসদ পদ খারিজের নিন্দা করে টুইট করেন। তিনি লেখেন, প্রধানমন্ত্রী মোদির নতুন ভারতে (New India) বিরোধী নেতারা বিজেপির প্রধান টার্গেট হয়ে উঠেছেন। যেখানে অপরাধের অতীত থাকা বিজেপির নেতারা মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেয়ে যান, সেখানে বিরোধী নেতারা তাঁদের ভাষণের জন্য ডিসকোয়ালিফাই হন। আমাদের সাংবিধানিক গণতন্ত্রের ইতিহাসে আজ এক ঘৃণ্য নজির প্রত্যক্ষ করলাম। তবে তৃণমূলনেত্রীর টুইটে কংগ্রেস নেতা রাহুলের নাম উল্লেখ করা হয়নি। তৃণমূলের অপর সাংসদ এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটে লেখেন, গণতান্ত্রিক ভারত এখন মুমূর্ষু অবস্থায়। আর এক তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র লিখেছেন, সাংবিধানিক স্বাধীনতার কফিনে আজ শেষ পেরেক পোঁতা হল। রাহুলের সাংসদ পদ খারিজের নিন্দা করেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভা সদস্য ডেরেক ও’ব্রায়েনও। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, তৃণমূল নেতানেত্রীরা কেউই টুইটে রাহুলের নাম নেননি।
In PM Modi’s New India, Opposition leaders have become the prime target of BJP!
While BJP leaders with criminal antecedents are inducted into the cabinet, Opposition leaders are disqualified for their speeches.
Today, we have witnessed a new low for our constitutional democracy
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) March 24, 2023
আরও পড়ুন: IT Park | হাওড়ায় শিল্পের জোয়ার, চাকরি পাবে এক লক্ষ ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ
এদিনই কলকাতায় এসেছেন কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী। তিনি সন্ধ্যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন। কুমারস্বামী বলেন, রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ প্রতিহিংসামূলক রাজনীতির নজির। সামনেই কর্নাটকের বিধানসভা ভোট। সেখানে জেডিএস, কংগ্রেস আলাদা আলাদা লড়াই করবে। এর আগে এই দুই দল জোট করে কর্নাটকের ক্ষমতায় এসেছিল। সেই জোট অবশ্য পুরো মেয়াদ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে পারেনি।
কংগ্রেসের তীব্র বিরোধী আম আদমি পার্টিও বৃহস্পতিবারই রাহলের কারাদণ্ডের নির্দেশের প্রতিবাদ জানিয়েছিল সমস্ত বিরোধ সরিয়ে রেখে।
দিল্লির রাজনৈতিক মহল মনে করছে, লোকসভা ভোটের আগে রাহুলের সাংসদ পদ খারিজের ঘটনা বিরোধীদের আরও এককাট্টা করবে। যে সব অবিজেপি, অকংগ্রেসি রাজ্যগুলি এতদিন কংগ্রেসের থেকে দূরত্ব বজায় রাখছিল, এবার তারাও এই ইস্যুতে কংগ্রেসের কাছাকাছি চলে আসবে। মমতা-সহ তৃণমূল নেতাদের তড়িঘড়ি প্রতিক্রিয়া সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা। প্রসঙ্গত, এদিনই ইডি-সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে বিরোধী দলগুলি যে মামলা করেছে, তাতে শামিল হয় তৃণমূল এবং সমাজবাদী পার্টিও।