নয়াদিল্লি: জেলে ভরুক, সাংসদ পদ খারিজ করুক, মারধর করুক, লড়াই থামাব না, সাংসদ পদ খারিজের পর নরেন্দ্র মোদিকে (Narendra Modi) তীব্র নিশানা রাহুল গান্ধীর (rahul Gandhi)। শনিবার দিল্লিতে কংগ্রেসের (Congress) সদর দফতরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আদানি ইস্যুতে মোদি সরকারকে ফের নিশানা করেন রাহুল। তিনি বলেন, আমাকে ভয় দেখিয়ে দমিয়ে রাখা যাবে না। আমার মুখও বন্ধ করা যাবে না। আমি প্রশ্ন করেই যাব। এদিন মোদি সরকারকে আক্রমণ করে রাহুল আরও বলেন, আমি এসবে ভয় পাই না। সংসদে আমার নামে মিথ্যে অভিযোগ আনা হয়েছে। মুখ বন্ধ করতেই আমার সাংসদ পহ খারিজ করা হয়েছে। আমি দেশের গণতন্ত্র রক্ষার জন্য লড়াই করছি।
এদিন মোদির সঙ্গে আদানির সম্পর্ক অনেক দিনের বলে দাবিও করেন রাহুল। এই প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, আমি জানি না উনি (Adani Groups) কোথা থেকে এসে জুটলেন। আদানিদের একটি প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত সংস্থা কোন পথে রাতারাতি ২০ হাজার কোটি টাকা পেল সে প্রশ্ন তুলেছেন রাহুল। তিনি বলেন, আদানি সংস্থার ২০ হাজার কোটি টাকা কার? গৌতম আদানির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কী সম্পর্ক, জানতে চেয়েছিলাম। তাই আমার কণ্ঠরোধের চেষ্টা করা হচ্ছে। কয়েক মাস আগে শ্রীলঙ্কার বিদ্যুৎ পর্ষদের চেয়ারম্যান যে মোদীর বিরুদ্ধে বিদ্যুৎপ্রকল্পের বরাত আদানিকে দেওয়ার জন্য কলম্বোর উপর চাপ সৃষ্টির অভিযোগ তুলেছিলেন, মনে করিয়ে দিয়েছেন সে কথাও। তাঁর অভিযোগ, লোকসভার স্পিকারকে আমি দুবার চিঠি দিয়েছি। সেই চিঠির আজ পর্যন্ত কোনও জবাব পাইনি। লোকসভার স্পিকার বলছেন, আসুন চা খান, কিছু করতে পারব না।
আরও পড়ুন: Hunger Strike Withdrawn | ৪৪ দিনের মাথায় অনশন উঠল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের
মোদি-আদানি সহ বিদেশে গিয়ে দেশকে অপমান করেছেন বলে বিজেপি শিবিরের তরফে যে অভিযোগ আনা হয়, তা নস্যাৎ করে রাহুলের স্পষ্ট মন্তব্য, আমি দেশবিরোধী কোনও মন্তব্য করিনি। আমি কোনও বিদেশি শক্তির সাহায্য চাইনি। আমি সাভারকার নই, আমি গান্ধী, ক্ষমা চাওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না।
রাহুল গান্ধীকে (Rahul Gandhi) দোষী সাব্যস্ত করার ঘটনায় শুক্রবার উত্তাল হয়ে ওঠে লোকসভা। ওইদিন সকালে ওয়েনাড়ের কংগ্রেস সাংসদ লোকসভায় (Lok Sabha) হাজির হন। কংগ্রেস সদস্যরা তেড়েফুঁড়ে ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাঁরা রাহুল গান্ধীকে কথা বলার সুযোগ দেওয়ার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই লোকসভা দিনের মতো মুলতুবি করে দেওয়া হয়। পরবর্তী সভা বসবে আগামী ২৭ মার্চ।
রাহুল গান্ধীর ইস্যুকে কেন্দ্র করে শুধুমাত্র সংসদই নয়, গোটা দিল্লি ক্ষোভে ফুঁসছে। সে কারণে কংগ্রেসের সদর দফতর আকবর রোড সহ অনেক জায়গায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। বিরোধীরা এদিন মিছিল করে বিজয়চকের উদ্দেশে যাত্রা করেন। সূত্রে জানা গিয়েছে, উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে তাঁরা রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গেও কথা বলার জন্য সময় চেয়েছেন।
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের সময় কর্নাটকে প্রচারে গিয়ে রাহুল প্রশ্ন তুলেছিলেন, সব চোরেদের পদবি মোদি হয় কেন? আইপিএল কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত ললিত মোদি, ব্যাঙ্ক-ঋণ মামলায় পলাতক নীরব মোদির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তুলনা টেনে এই কটাক্ষ করেন তিনি। ওই ঘটনায় রাহুলের বিরুদ্ধে অবমাননার অভিযোগে মানহানির মামলা করেছিলেন গুজরাতের বিজেপি নেতা পূর্ণেশ মোদি। সেই মামলাতেই বৃহস্পতিবার দোষী সাব্যস্ত হলেন রাহুল।