বারেলি: মন্দিরে নমাজ পড়ার ‘অপরাধ’। যোগীরাজ্যে গ্রেফতার এক যুবতী ও তাঁর সৎমা। এমনই অভিনব ঘটনা ঘটল বিজেপির উত্তরপ্রদেশে। দিল্লির বাসিন্দা ২০ বছরের ওই মুসলিম যুবতীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এবং তাঁর সৎমা কয়েকদিন আগে বারেলির একটি মন্দিরে বসে নমাজ পড়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র এবং ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত রবিবার বারেলির ভুটায় এক মন্দিরে ইসলামিক পদ্ধতিতে তাঁরা নমাজ পড়েছেন। এই অভিযোগে ওই যুবতী, তাঁর সৎমা এবং স্থানীয় একজনকে গ্রেফতার করে জেলে ভরেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, যুবতীটি দিল্লিতে তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে থাকেন। যুবতী দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ। সম্প্রতি তিনি বাবার সঙ্গে দেখা করতে বারেলি আসেন।
আরও পড়ুন: অনন্তনাগে গুলির লড়াই শেষ হল
কোনও ওষুধেই অসুখ সারছিল না। তাই তাঁর সৎমা স্থানীয়দের কাছে ‘জাগ্রত’ ওই মন্দিরে প্রার্থনা করার পরামর্শ দেন। সেই মতো শনিবার সন্ধ্যায় মায়ের সঙ্গে মন্দিরে গিয়ে নমাজ পড়েন তাঁরা। কিন্তু, কেউ সেই ছবি তুলে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে দেয়। বিপদের সূত্রপাত তাতেই। ভিডিয়োয় তিনি লেখেন, মন্দিরের ভিতর নমাজ পড়া হচ্ছে।
সঙ্গে সঙ্গে ময়দানে নেমে পড়ে হিন্দুত্ববাদীরা। উগ্র ডানপন্থী একটি সংগঠন তাঁদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করে। তার ভিত্তিতেই পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, ওই যুবতী দাঁড়িয়ে মুসলিম ভঙ্গিতে দোয়া প্রার্থনা করছেন। তারপরেই মন্দিরের শিবলিঙ্গের সামনে হাঁটু মুড়ে বসে প্রার্থনা করছেন।
পুলিশ আধিকারিক বলেন, কেশরপুর গ্রামে একটি প্রাচীন শিবমন্দিরে নমাজ পড়ার জন্য তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। স্থানীয় দরগার সাধারণ সম্পাদক বলেন, পুলিশের উচিত পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করা। তারপর কাউকে জেলে ভরা উচিত। যুবতীর ভাই বলেন, আমার বোনের স্বাস্থ্য ভালো যাচ্ছিল না। আমরা বাবা ও সৎমায়ের কাছে এসেছিলাম। তিনিই শরীর সুস্থ করার জন্য মন্দিরে প্রার্থনা করতে বলেন। শিবের কাছে চাইলেই অসুখ সেরে যাবে বলে তিনি আমাদের জানান। আমার বোন কোনও অপরাধী নয়, সে অসুস্থ। অসুখ সারানোর জন্যই মন্দিরে প্রার্থনা করতে গিয়েছিল।